সাইটোপ্লাজম কাকে বলে? সাইটোপ্লাজমের অঙ্গাণু, গঠন এবং কাজ

সংজ্ঞা :- কোষস্থিত নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থিত এবং কোষঝিল্লি দিয়ে পরিবেষ্টিত প্রোটোপ্লাজমকে সাইটোপ্লাজম বলে । 

এটি বিভিন্ন জৈব ও অজৈব পদার্থ, পানি, বিভিন্ন অ্যাসিড ও এনজাইম দিয়ে গঠিত। সাইটোপ্লাজম দুটি অঞ্চলে বিভক্ত। যথা :

১. এক্টোপ্লাজম এবং। 

২. এন্ডোপ্লাজম ।

১. এক্টোপ্লাজম : সাইটোপ্লাজমের বাইরের দিকের অপেক্ষাকৃত ঘন, কম দানাদার এবং শক্ত অঞ্চলকে এক্টোপ্লাজম বলে ।

২. এন্ডোপ্লাজম : সাইটোপ্লাজমের কেন্দ্রস্থ অপেক্ষাকৃত কম ঘন অঞ্চলকে এন্ডোপ্লাজম বলে ।

সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু :-

সংজ্ঞা :- উদ্ভিদ কোষের সাইটোপ্লাজমে বিভিন্ন অঙ্গাণুর উপস্তিতি লক্ষ করা যায় যাদের সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু বলে। সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণুগুলো হলো-

  • ১. প্লাস্টিড 
  • ২. মাইটোকন্ড্রিয়া
  • ৩. এন্ডোপ্লাজমিক রেটিক্যুলাম 
  • ৪. গলজি বস্তু 
  • ৫. রাইবোজোম 
  • ৬. সেন্ট্রোসোম 
  • ৭. লাইসোসোম 
  • ৮. কোষ গহ্বর 
  • ৯. মাইক্রোটিউবিউলস ইত্যাদি 

সাইটোপ্লাজম এর রাসায়নিক গঠন :-

সাইটোপ্লাজমের রাসায়নিক গঠন উপাদানকে অজৈব ও জৈব এই দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। অজৈব দ্রব্যের মধ্যে পানি, বিবিধ খনিজ লবণ, বহু প্রকার আয়ন, পানিতে দ্রবীভূত গ্যাস প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। সাইটোপ্লাজমে পানির পরিমাণ সর্বাধিক (৬৫ – ৯৬%)। অবশ্য কোনো কোনো কোষে এটি মাত্র ৫ – ১০% হতে পারে। জৈব উপাদানের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট, জৈব এসিড, লিপিড, প্রোটিন, নিউক্লিক এসিড, হরমোন, ভিটামিন, বিভিন্ন রঞ্জক পদার্থ, ATP প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ।

আরও পড়ুন :- নিউক্লিওপ্লাজম কাকে বলে? গঠন,কাজ।সাইটোপ্লাজমের সাথে পার্থক্য

কোষের বিপাকীয় কাজে সাইটোপ্লাজমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা :-

কোষের বিপাকীয় কার্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিচে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হলো-

বিপাক বা মেটাবলিজম হলো কোনো জীবকোষ বা টিস্যুতে সংঘটিত রাসায়নিক বিক্রিয়ার মোট পরিমাণ। জীবদেহে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকার মৌলিক পদার্থের ক্রিয়া-বিক্রিয়ার মাধ্যমে জটিল গঠনবিশিষ্ট জৈব রাসায়নিক পদার্থ সৃষ্টি হয় এবং ঐসব জৈব রাসায়নিক পদার্থের ভাঙনের মাধ্যমে পদার্থগুলো পুনরায় পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে ও উৎপন্ন হয়। এসব ঘটনাকে বিপাকীয় প্রক্রিয়া বলা হয়ে থাকে।

সাইটোপ্লাজমের প্রধান অংশ পানি। এছাড়া বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াও অসংখ্য অজৈব উপাদান রয়েছে। এগুলো মিলিতভাবে বিভিন্ন প্রকার বিপাকীয় কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে, যার মাধ্যমে জীবের অস্তিত্ব প্রকাশ পায়। সাইটোপ্লাজমে সংঘটিত প্রধান প্রধান বিপাকীয় ঘটনা হলো- সালোকসংশ্লেষণ, শ্বসন, প্রোটিন সংশ্লেষণ, নাইট্রোজেন বিপাক ইত্যাদি ।

উপরোক্ত বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কোষের বিপাকীয় কাজে সাইটোপ্লাজমের ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ।

সাইটোপ্লাজম এর কাজ :-

  • ১। কোষের অঙ্গাণু ও জড় পদার্থকে ধারণ করা। 
  • ২। বিভিন্ন বিপাকীয় কার্য সম্পাদন করা।
  • ৩। কোষের এসিড-বেস ভারসাম্য বজায় রাখা ।
  • ৪। রেচন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করা।
  • ৫। বহিস্থ উত্তেজনায় সাড়া দেওয়া।
  • ৬। পানিধারণ এবং পরিশোষণে সহায়তা করা।

Post a Comment

0 Comments