মূর্খ বন্ধুর চেয়ে জ্ঞানী শত্রু সবচেয়ে ভালো: ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাব : অজ্ঞ, জ্ঞানহীন মানুষ অন্ধের সমান । অপরদিকে জ্ঞানী মানুষের মনুষ্যত্ববোধ থাকায় শত্রু হয়েও সে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় না ।
সম্প্রসারিত ভাব : মূর্খ ব্যক্তির মনুষ্যত্ববোধ থাকে না। তাই অন্ধের মতই জীবন চলতে অজ্ঞতা আর কুসংস্কারের নানা বাধা- বিপত্তিতে হোঁচট খেয়ে পড়ে। তার কাছে ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য তেমন স্পষ্ট নয় । সে যুক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে কোন কিছু বিচার করতে পারে না। তার দ্বারা দেশ ও জাতির উন্নতিও সম্ভব হয় না। অপরদিকে জ্ঞানী ব্যক্তির অন্তর জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত। যুক্তি, তর্ক, বুদ্ধি ও বিবেচনা দিয়ে তিনি সব কিছু যাচাই করতে পারেন । জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়া, প্রয়োজনীয় যুক্তি, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান জ্ঞানী ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব হয় । তাই সমাজে জ্ঞানী ব্যক্তির গুরুত্ব ও মর্যাদা সব সময়ই বেশি।
আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে কেউ আমাদের বন্ধু, কেউ আমাদের শত্রু বলে বিবেচনায় আসে । বন্ধু ও আপনজনের সাহচর্য আমাদের কাছে সব সময়ই আনন্দদায়ক। অপরদিকে শত্রুর প্রতি আমরা পোষণ করি ঘৃণা ও অবজ্ঞা । কিন্তু সেই বন্ধুটি যদি মূর্খ হয়, তবে সে বন্ধুর কারণে আমাদের নানাভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে। মূর্খ বন্ধুর অজ্ঞতা, অবিবেচনা আমাদের বিপদের মুখেও ঠেলে দিতে পারে । অন্যদিকে শত্রু যদি জ্ঞানী হয় তবে তিনি ব্যক্তিগত শত্রুতাকে পুঁজি করে কখনোই তার শত্রু বা অপর ব্যক্তির ক্ষতি করতে চাইবে না, কারণ জ্ঞানী ব্যক্তির মানসিকতা ও বিবেচনাবোধ তাকে শত্রুর প্রতিও সহানুভূতিশীল ও বিবেচক হওয়ার প্রেরণা যোগাবে।
মন্তব্য : তাই জীবনে জ্ঞানের গুরুত্ব অনুধাবন করতে গেলে এ চরম সত্যটিকে মেনে নিতেই হয় যে মূর্খের চেয়ে জ্ঞানী শত্রুও ভাল ।