Ads Area

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষণ/বক্তৃতা- ২০২৫

অনুষ্ঠানের শ্রদ্ধেয় সভাপতি, সম্মানিত প্রধান অতিথি, উপস্থিত সুধীবৃন্দ, আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' সম্পর্কে আমাকে কিছু বলতে দেয়ার জন্য প্রথমেই কর্তৃপক্ষকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বাঙালি জাতির একটি গৌরবময় দিন একুশে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস'। বিশ্বব্যাপী এ দিবস পালনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পতাকা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এটা যে কত গৌরব ও আনন্দের বিষয় তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা বাঙালি জাতি, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, প্রাণের ভাষা। এ ভাষাই আমাদের জীবন-মরণ। কিন্তু ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে যে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছিল, আমরা ছিলাম তারই একটি অংশ-পূর্ব পাকিস্তান। সম্পদ ঐশ্বর্যে আমাদের প্রাচুর্য থাকলেও তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের গাদ্দার শাসকশ্রেণি জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের বঞ্চিত করে। তারপরেও তারা ক্ষান্ত হয় না। আঘাত হানে আমাদের মাতৃভাষা বাংলার ওপর। প্রতিবাদী হয়ে ওঠে বাংলার দামাল ছেলেরা। 

আরও দেখুন : মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বক্তব্য /ভাষণ - ২০২৫। pdf

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তারা ভাষার দাবিতে রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলে। দুর্বার গতির সে মিছিলের ওপর পাকিস্তানি পুলিশবাহিনী নির্বিচারে গুলি চালায়। সে গুলিতে নিহত হয় সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা আরো অনেকে। সেদিন ভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায় এ দিনটি। অনেক পরে প্রাদেশিক ভাষা দিবস হিসেবে ১৯৫৪ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। স্বাধীনতা লাভের পর তৎকালীন সরকার এ দিনটিকে জাতীয় ভাষা বা শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়।

এ যাবৎকাল এ মহান দিবসটি শুধু বাঙালিদের হৃদয়েই পদ্মাসন করে নিয়েছিল। কিন্তু এ দিনটির গুরুত্ব অসামান্য বিধায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দকেও দোলা দেয়। সে লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদে মহান ভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' ঘোষণা করা হয়। আর সেদিন থেকেই বাংলা ভাষা বিশ্ব মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এর ফলে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে পালিত হচ্ছে। বিশ্বের ৩০ কোটি মানুষ শ্রদ্ধাভরে পালন করে এ দিনটি, এটা বাঙালি জাতির এক বিরাট গৌরবের কথা। বলা হচ্ছে, কালের শ্রেষ্ঠতম দিবস হলো একুশে ফেব্রুয়ারি। ২০০০ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে উদ্যাপিত হয় ৷

সর্বোপরি বাংলা ভাষার পূর্ণ বিকাশ ঘটেছে এ দিবসটির মাধ্যমে। এ দিবসের মাধ্যমে স্বীকৃত হয়েছে বাঙালি জাতির জাতিসত্তা, ভাষাসত্তা আর সার্বভৌমত্বের চরম বিকাশ। কখনো বিশ্ব থেকে নিশ্চিহ্ন হবে না এ ভাষা এবং এ ভাষাভাষী মানুষ। সবশেষে বাঙালির আশা, এ ভাষার ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখার আন্তর্জাতিক এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি। আল্লাহ হাফেয।

আরও দেখুন : বিদায়ী ছাত্রদের পক্ষ থেকে বিদায়ী ভাষণ বাংলা(মাদ্রাসা/স্কুল)

Post a Comment

0 Comments