হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

জাহমিয়াদের পরিচয়, উৎপত্তির ইতিহাস ও আকিদার বিবরণ

উপস্থাপনা : গোষ্ঠী চেতনাকে ইসলাম সমর্থন করে না। তারপরও ইসলাম বিবেদমুক্ত থাকেনি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিরোধের কারণে পরবর্তী পর্যায়ে মুসলমানগণ কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। জাহুলিয়া সম্প্রদায়ের পরিচয় ও তাদের আকিদার বৈশিষ্ট্যবলি আলোচনা করা হলো –

জাহমিয়াদের পরিচয় :

জাহমিয়া অর্থ- জাহমের সাথে সম্পর্কিত। জাহম ইবনে সাফওয়ান পারস্যের অধিবাসী ছিলেন। এ ব্যক্তি ইসলামী বিশ্বাসের মধ্যে গ্রিক দর্শন, পারসিক ধর্ম ইত্যাদির মধ্য থেকে অনেক কিছু ঢুকিয়ে দেয়। সে ‘জাবারিয়া’ মতের প্রচারক ও প্রবর্তক ছিল। সে প্রচার করত, মানুষের কোনোরূপ ক্ষমতা নেই।

চাঁদ, সূর্য ইত্যাদি যেমন ইচ্ছাহীনভাবে আবর্তন করে, মানুষও তেমনি ইচ্ছাহীন ক্ষমতাহীনভাবে কলের পুতুলের মতো চলমান। পাশাপাশি সে মুরজিয়া মতের প্রচারক ছিল। সে বলত, হৃদয়ের জ্ঞান বা মারেফতই ঈমান এবং অজ্ঞতাই কুফর। সে আরো প্রচার করত, জান্নাত ও জাহান্নাম এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে ।

আরও পড়ুন : কাদিয়ানী মতবাদ কি? তাদের আকিদা ও আকিদার মূলনীতি

জাহমিয়াদের উৎপত্তি :

ইমাম আবু যুহরা বলেন, উমাইয়া শাসনামলের প্রথম দিকেই এ ফেরকাটির  মানুষ মাজবুর তথা অক্ষম সম্পর্কিত প্রসিদ্ধ ও প্রধান দর্শনটির প্রচার ঘটতে শুরু হয়। অবশেষে উমাইয়া শাসনামলের শেষ দিকে এটি একটি স্বতন্ত্র মতাদর্শে রূপ নেয় ।

জাহম ইবনে সাফওয়ান প্রসিদ্ধ যিন্দীক জাদ ইবনে দিরহাম এর শিষ্য ছিল। এ জাদ ইবনে দিরহামই প্রথম কুরআন নশ্বর সৃষ্টি সংক্রান্ত দর্শন-এর প্রবর্তন ঘটায়। সেই প্রথম আল্লাহর গুণাবলিকে অস্বীকার করে। এভাবে যিন্দীক হয়ে যাওয়ার ফলে ১২৪ হিজরীতে তাকে হত্যাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

জাহম ইবনে সাফওয়ান তার গুরু জাদ দিরহাম থেকেই জাহমিয়াহ দর্শন গ্রহণ করে। এ কারণেই জাদ ইবনে দিরহামকে জাহমিয়া মতাদর্শের প্রথম দায়ী বলা হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন : কাদিয়ানী কারা? এবং এদের মতাদর্শ আলোচনা কর

জাহমিয়াদের আকিদা :

জাহমিয়া সম্প্রদায়ের আকিদার বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ-

  • আল্লাহ তায়ালাকে এমন কোনো গুণে গুণান্বিত করা জায়েয নয়, যে গুণ কোনো মাখলুকের ওপর প্রযোজ্য হতে পারে ।
  • তারা আল্লাহর কালামকে নশ্বর সৃষ্টি মাখলুক মনে করে ।
  • তারা মনে করে, মানুষ নিতান্তই মাজবুর তথা অপারগ ও অসহায়। অর্থাৎ কোনো শক্তি, কোনো ইচ্ছা ও কোনো ক্ষমতা তার নেই ।
  • ঈমান হলো অন্তরের বিষয়; মুখের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। অতএব কারো অন্তরে যদি ঈমান থাকে আর মুখে সে অস্বীকার করে, তাহলে সে মুমিনই থাকবে।
  • ঈমানের মধ্যে কোনো বিভক্তি নেই। অর্থাৎ অন্তরের বিশ্বাস, মুখের স্বীকৃতি ও আমল এ তিন ভাগে ঈমান বিভক্ত নয় ।
  • তাদের মতে, পরকালে আল্লাহর দীদার হবে না ।
  • তারা মালাকুল মওতকে অস্বীকার করে। তাদের মতে, রূহ সরাসরি আল্লাহ কবজ করেন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!