হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী? কাকে বলে। এবং এর ব্যবহার

জীব প্রযুক্তির বিশেষ রূপ হিসেবে কোষকেন্দ্রের জিনকণার পরিবর্তন ঘটিয়ে জীবদেহের গুণগত রূপান্তর ঘটানো হলো জিন প্রকৌশল বা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং। অথবা, নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির জন্য কোনো জীবের পরিবর্তন ঘটানো হলো জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী?

নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির জন্য কোনো জীবের DNA-র পরিবর্তন ঘটানোই হলো জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা জিন প্রকৌশল । জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংকে ‘রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তিও’ বলা হয় ।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কাকে বলে ?

কোন জীব থেকে কাঙ্খিত কোন জিন পৃথক করে নিয়ে অন্য কোন কাঙ্খিত জীবকোষে প্রতিস্থাপন করার কৌশলকেই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়।

আরও দেখো : জীবপ্রযুক্তি কি? কাকে বলে। এবং এর গুরুত্ব বা অবদান

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহার :

১. উচ্চ ফলনশীল উদ্ভিদের জাত সৃষ্টি : কোনো বন্য উদ্ভিদের উৎকৃষ্ট জিন ফসলি উদ্ভিদে প্রতিস্থাপন করে কিংবা জিনের গঠন বা বিন্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়ে উন্নত জাতের উদ্ভিদ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। এভাবে ধান, গম, তেলবীজসহ অনেক শস্যের অধিক ফলনশীল উন্নত জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।

২. ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ সৃষ্টি : রিকম্বিনেন্ট DNA কৌশল ব্যবহার করে এখন পর্যন্ত ৬০টি উদ্ভিদ প্রজাতির উন্নতি সাধন করা হয়েছে যারা পতঙ্গ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধী এবং এগুলো যেকোনো পরিবেশকে মোকাবিলা করতে সক্ষম।

৩. প্রাণীর ক্ষেত্রে : গবাদিপশু যেমন- গরুর দুধে আমিষের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য protein C জিন স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া আকার বৃদ্ধি এবং মাংসের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে মানুষের বৃদ্ধির জন্য দায়ী হরমোনের জিন স্থানান্তর করে ভেড়ার কৌলিগত পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে।

আরও দেখো: রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ:সংজ্ঞা,ধাপ,গুরুত্ব,প্রযুক্তি চিত্র সহ

৪. চিকিৎসা ক্ষেত্রে : কৌলিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে ঈস্ট হতে হেপাটাইটিস বি-ভাইরাসের টিকা ইন্টারফেরন তৈরি হচ্ছে। মানবদেহের ইনসুলিন তৈরির জিন ব্যবহার করে কৌলিগতভাবে পরিবর্তিত E. coli ব্যাকটেরিয়া এবং ঈস্ট হতে বাণিজ্যিক ইনসুলিন তৈরি হচ্ছে যা মানুষের বহুমূত্র রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে।

৫. মৎস্য উন্নয়নে : মাগুর, কমন-কার্প, লইট্টা এবং তেলাপিয়া মাছে স্যামন মাছের বৃদ্ধি হরমোনের জিন স্থানান্তরের মাধ্যমে কৌলিগত পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় এসব মাছের আকার প্রায় ৬০ ভাগ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।

৬. পরিবেশ সুরক্ষায় : পেট্রোলিয়াম ও কয়লাখনি এলাকা দূষণমুক্তকরণ, শিল্পক্ষেত্রে বর্জ্যশোধন, পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদি পরিবেশ ব্যবস্থাপনা সহজ ও দ্রুত করার উদ্দেশ্যে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় ।

উপরিউক্ত ব্যবহারগুলো ছাড়াও আরও অধিক পরিমাণে ব্যবহার ক্ষেত্র বাড়ানোর লক্ষ্যে বিজ্ঞানিরা ‘জীবপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। জীব প্রযুক্তির ব্যবহার ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হলে মানবজীবন আরও উন্নত ও সহজতর হবে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!