হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

কুরআন ও হাদীসের : অর্থ , সংজ্ঞা ও পার্থক্য

শরীয়তের প্রথম উৎস হলো আল কুরআন আর দ্বিতীয় উৎস হচ্ছে হাদীস। এটা মহাগ্রন্থ পবিত্র কুরআনের জীবন্ত ব্যাখ্যা গ্রন্থ। রাসূল (স)-এর কথা, কাজ, আদর্শ ও গুণাবলি সবই মানুষের জন্য হেদায়াতস্বরূপ, যাকে হাদীস বলা হয়। তাই শরীয়তে হাদীসের গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআন ও হাদীসের মাঝে মৌলিক কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।

কুরআন অর্থ কি ও কাকে বলে ?

আভিধানিক অর্থ : কুরআন (الْقُرْآنُ) শব্দটি আরবি শব্দ। এটি ক্বরউন বা ক্বরনুন মূলধাতু থেকে নির্গত। এর আভিধানিক অর্থ হলো – পঠিত, মিলিত ইত্যাদি।

পারিভাষিক সংজ্ঞা : ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় , আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হিদায়াতের জন্য হজরত জিবরাঈল (আ.) এর মাধ্যমে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর ওপর যে কিতাব নাযিল করেছেন তাকেই আল কুরআন বলা হয়।

হাদীস অর্থ কি ও কাকে বলে ?

আভিধানিক অর্থ : حَدِيثٌ শব্দটি اِسْمٌ তথা বিশেষ্য। এটা একবচন, বহুবচনে أَحَادِيثُ . এর আভিধানিক অর্থ হলো – কথা বা বাণী, উপদেশ, কাহিনী, সংবাদ, পথ বা পদ্ধতি ইত্যাদি।

পারিভাষিক সংজ্ঞা : নবী করীম (স) যা বলেছেন, যা করেছেন আর যা মৌনসমর্থন দিয়েছেন সেগুলোকেই হাদিস বলা হয়।

আরও জানো : হাদিস(حَدِيثٌ) অর্থ, সংজ্ঞা, প্রকারভেদ,উদ্দেশ্য ও আলোচ্য বিষয়

কুরআন ও হাদিসের মধ্যে পার্থক্য :

কুরআন হাদীস
১। কুরআন হচ্ছে তথা পঠিত অহী। ১। আর হাদীস হচ্ছে- অপঠিত অহী ।
২। কুরআন নামাযে তেলাওয়াত করা হয় এবং এজন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নির্দেশও রয়েছে।  ২। পক্ষান্তরে হাদীস নামাযে তেলাওয়াত করা জায়েয নেই ।
৩। কুরআন ফেরেশতার মাধ্যমে নাযিল হয়েছে। ৩। পক্ষান্তরে হাদীস ফেরেশতার মাধ্যমে নাযিলকৃত নয় ।
৪। কুরআন তেলাওয়াত করলে প্রতিটি অক্ষরের জন্য কমপক্ষে দশটি পুন্য পাওয়া যায়। ৪। পক্ষান্তরে হাদীস তেলাওয়াত করলে এ ধরনের নির্দিষ্ট কোনো পুণ্যের বর্ণনা নেই।
৫। কুরআন শুধু আল্লাহ্ তায়ালার সাথে সম্পৃক্ত। ৫। কিন্তু হাদীস আল্লাহ ছাড়া অন্যের সাথেও সম্পৃক্ত হতে পারে।
৬। কুরআনের শব্দ ও ভাব উভয়ই আল্লাহ তায়ালার। ৬। পক্ষান্তরে হাদীসের ভাব শুধু আল্লাহ তায়ালার আর শব্দ রাসূল (স)-এর।
৭। কুরআন দ্বারা أَدِلَّةٌ قَطْعِيَّةٌ সাব্যস্ত হয়। ৭। পক্ষান্তরে হাদীস দ্বারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে এরূপ সাব্যস্ত হয় না ।
৮। কুরআন অস্বীকারকারীকে কাফের বলা হয়। ৮। পক্ষান্তরে হাদীস অস্বীকারকারীকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাফের বলা হয় না ।
৯। কুরআন হচ্ছে مُعْجِز তথা অক্ষমকারী। ৯। কিন্তু হাদীস مُعْجِز তথা অক্ষমকারী নয় ।
১০। কুরআন অপবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করা যায় না। ১০। পক্ষান্তরে হাদীস অপবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করা যায়। তবে উচিত নয়।

পরিশেষে : মহাগ্রন্থ আল কুরআন শরীয়তের প্রধান উৎস। আর হাদীস হলো আল কুরআনের ব্যাখ্যাগ্রন্থ। শরীয়তে কুরআনের পরেই হাদীসের স্থান। আমাদের কর্তব্য হলো কুরআন ও হাদীস উভয়টির ওপর আমল করা ।

আরো দেখো : মাশহুর,আযীয ও গারীব হাদিসের: অর্থ, সংজ্ঞা, হকুম ও উদাহরণ

শিক্ষাগার

প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে

মাহমুদুল হাসান

শিক্ষাগত যোগ্যতা
গণিতে অনার্স ও মাস্টার্স

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ফাজিল সম্পন্ন

গোপালপুর দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা

বিশেষ দক্ষতা

বাংলা সাহিত্য • গণিত • ইসলামিক শিক্ষা

অভিজ্ঞতা

শিক্ষকতা ও ৫+ বছর কন্টেন্ট রাইটিং

আমাদের লক্ষ্য

শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা। ২০২৩ সাল থেকে লাখো শিক্ষার্থী শিক্ষাগার থেকে উপকৃত হচ্ছে।

Leave a Comment