হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

ঐকতান কবিতার মূলভাব ও নামকরণের সার্থকতা

প্রশ্ন :। । ঐকতান কবিতার মূলভাব নিজের ভাষায় লেখ।

অথবা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘ঐকতান’ কবিতার মূল বক্তব্য নিজের ভাষায় লেখ।

অথবা, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত ‘ঐকতান’ কবিতার সারমর্ম/ ভাবার্থ/মূল বক্তব্য তোমার নিজের ভাষায় লেখ।

অথবা, ‘ঐকতান’ কবিতার মূলসুর/মূলকথা/মর্মার্থ তোমার নিজের ভাষায় লিপিবদ্ধ কর।

উপস্থাপনা : নোবেল বিজয়ী ও বাংলা সাহিত্যের প্রায় সকল শাখায় বিচরণকারী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ঐকতান’ কবিতাটি একটি আত্মবিশ্লেষণমূলক অসাধারণ কবিতা। এ কবিতায় রবীন্দ্র-মানসের বহু বিচিত্র দিক উন্মোচিত হয়েছে। কবি স্বীয় কাজকর্ম সম্পর্কে মূল্যায়নধর্মী বক্তব্য এবং সাধারণ জনগোষ্ঠীকে তাঁর কাব্যে স্থান দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা স্বীকার করেছেন।

সাথে সাথে তিনি তাঁর বিশ্বায়ত জীবনদৃষ্টি এবং কবি-মানসেরও প্রকাশ ঘটিয়েছেন। সর্বোপরি ‘ঐকতান’ কবিতায় কবির অতৃপ্তির বেদনা প্রস্ফুটিত হয়ে কবিসত্তার স্বরূপ পরিস্ফুট হয়েছে। নিচে ঐকতান কবিতার মূলভাব উপস্থাপন করা হলো :

ঐকতান কবিতার মূলভাব

‘ঐকতান’ কবিতার পটভূমি : ১৯৪১ সালে ‘জন্মদিনে’ কাব্যগ্রন্থে ‘ঐকতান’ কবিতাটি প্রকাশিত ও গ্রন্থিত হয়। কাব্যগ্রন্থটি কবির জীবন-সায়াহ্নে স্বহস্তে লিখিত সর্বশেষ রচনা। কবি যখন তাঁর কাব্যকর্মের মূল্যায়নে ব্রতী হলেন তখন তাঁর শিল্পকর্মের দুর্বল ক্ষেত্রগুলো উন্মোচিত হলো। স্বীয় কাব্যকর্মে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জীবনচিত্রের অনুপস্থিতি উপলব্ধি করে শেষজীবনে তিনি অতৃপ্তির বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়েছেন ।

কবির ভাবনা : কবি স্বীয় কাব্যকল্পনার ডানায় ভর করে উড়ে চলছেন দিগদিগন্তে। তিনি বিচিত্র বিশ্বের প্রতিটি কোণ থেকে উদার প্রাণের আহ্বান শুনতে পান। বিস্তৃত এ পৃথিবীর বিচিত্র ভৌগোলিক কাঠামো চর্মচোখে দর্শন করে কবি ভূয়োদর্শনজাত অভিজ্ঞতাকে বিশ্বমাত্রা প্রদানে উদগ্রীব ছিলেন, কিন্তু বাস্তবতার কারণে তা অনেকাংশে অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। একই সাথে বিশ্বসাহিত্যের সাথেও আত্মসংযোগের সুবিধা সম্পূর্ণতা পায়নি। এজন্য কবির উদাস মানসিক চেতনা অতৃপ্তির হাহাকারে গুমরে উঠেছে।

কবির কল্পনা : কবির চেতনায় স্থান, পাত্র ও কালে কোনো ভেদাভেদ নেই; বরং তিনি সমগ্র বিশ্বসংসারকে এক সুরমূর্ছনায় স্নাত করেছেন। হৃদয়লোকের কোনো ভৌগোলিক চৌহদ্দি না থাকায় তিনি সমগ্র বিশ্বলোকে কল্পনার সাগরে সন্তরণ করেছেন, আর কল্পনার চোখে বিশ্বসৌন্দর্য অবলোকন করেছেন। এমনকি তিনি সুদূর মরু প্রদেশের তুষার, ধূম্র কিংবা গিরিনিঃস্রাব জলপ্রপাতের সুরমূর্ছনা বাংলার এক কোণে বসেই অনুভব করেন।

সাধারণজনের প্রতি কবির অনুভূতি : কবি সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এজন্য সাধারণ নিম্নশ্রেণি ও প্রাকৃতজনদের নিয়ে সাহিত্য সাধনা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। তিনি জীবনের শেষপ্রান্তে এসে প্রাকৃতজনদের প্রতি মমত্ব অনুভব করেন এবং স্বীয় কাব্যকর্মের দুর্বলতা দর্শনে অনুশোচনায় দগ্ধ হন।

এ কারণে তিনি এমন নবীন কবির উত্থান কামনা করেন যারা কৃষক, কামার, কুমোর, তাঁতি, জেলেসহ সমাজের সভ্যতা সৃষ্টির নায়কদের স্বীয় কাব্যে শামিল করবেন, তাদের জীবনের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা সাহিত্যে রূপায়ণ করবেন। এ ধরনের জীবনঘনিষ্ঠ কবিদের প্রতি কবি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

কবির অক্ষমতার স্বীকারোক্তি : বিংশ শতকে আর্টনির্ভর সাহিত্য রচিত হতে থাকে। কারণ তখন সাহিত্যে যথারীতি যান্ত্রিকতার হাওয়া লেগে গেছে। ফলে সাহিত্য তথ্য কাব্যের ধারা জীবনসত্যের বদলে শিল্পসত্যকে অতিমাত্রায় অগ্রাধিকার প্রদান করে, যাতে মধ্যবিত্তের জীবনচিত্র প্রাধান্য পায়। অথচ এ ধরনের সাহিত্য বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে শামিল না করায় তা আর সাধারণ মানুষের উপভোগ্য রইল না।

আর কবিও এ আর্টনির্ভর সাহিত্যধারা থেকে নিম্নশ্রেণির কাতারে শামিল হতে পারলেন না। ফলে জীবনসায়াহ্নে এসে তিনি এসব উপলব্ধি করে অনুশোচনায় দগ্ধ হন এবং স্বীয় অক্ষমতার স্বীকারোক্তি প্রদান করলেন যে, তাঁর কাব্যে যথেষ্ট অসম্পূর্ণতা বিদ্যমান রয়েছে। কবির এ উপলব্ধি তাঁর সুন্দর মনের পরিচয় বহন করছে।

কবির ব্যর্থতা : আলোচ্য কবিতায় কবি তাঁর কাব্যকর্মের দুর্বলতা ও অপূর্ণতার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। কবি উপলব্ধি করেছেন, যাদের শ্রমে ও ঘামে সভ্যতার সৃষ্টি, যারা পৃথিবীর রূপ বদলাচ্ছে প্রতিক্ষণে, ঘাস আর মাটির সোঁদা গন্ধে ভরা যেসব শ্রমজীবী চাষি, জেলে, কামার, কুমোর, তাঁতি, ঘুম ভাঙলেই যাদের সাথে প্রথম দেখা হয়, তারাই রইল তাঁর অন্তর থেকে দূরে। তাঁর সাহিত্যে রূপায়িত হয়নি তাদের জীবনালেখ্য। ফলে প্রাকৃতজনের নিকট তাঁর কাব্যশিল্প আস্বাদ্য হয়ে ওঠেনি।

স্বীয় কাব্যকর্মের মূল্যায়ন : নিজের শিল্পকর্ম তথা কাব্যসাহিত্য সম্পর্কে বিশ্বকবির কোনো সংশয় ছিল না। তবে তাঁর এ প্রতিভার বিচ্ছুরণ সমাজ ও মানবজীবনের সর্বত্র পৌঁছেছে এ বিশ্বাস তিনি সর্বদা করতেন। অথচ জীবনসায়াহ্নে এসে তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেন যে, তাঁর কাব্য সাহিত্য বাংলার অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত বিশাল সাধারণ জনগোষ্ঠী ধারণ করেনি। তিনি তা স্বীকার করে উচ্চারণ করেন-

আমার কবিতা, জানি আমি,
গেলেও বিচিত্র পথে হয় নাই সর্বত্রগামী।।

অসমাপ্ত কর্ম-সম্পাদনের ভার : কবিগুরু স্বীয় কাব্যের অসম্পূর্ণতা পূর্ণকরণের দায়িত্বার অর্পণ করেছেন নবীন কবির কাছে। যে কবি মাটির কাছাকাছি থেকে সোঁদা গন্ধে ভরা শ্রমজীবী মানুষের মর্মের দিশারি, আত্মার আত্মীয়তে পরিণত হয়, সে কবিই অবহেলিত প্রায় নির্জীব মানুষের মর্মবেদনা স্বীয় কাব্যে তুলে এনে নিজে যেমন খ্যাতিমান হন, তেমনি কবির খ্যাতিতে খ্যাত হয়ে ওঠে দেশের চিরবঞ্চিত ও অপরিচিত মানুষজন।

নতুন কবির আগমনে সাহিত্য পূর্ণতা পাবে, জীবন হবে রসময়। একতারা হাতের মানুষগুলো সাহিত্যে জায়গা করে নেবে। কবি বসে আছেন এসব ভবিষ্যৎ কবির জন্য। এ কামনায় তিনি উচ্চারণ করেন-

এসো কবি অখ্যাতজনের
নির্বাক মনের;
মর্মের বেদনা যত করিও উদ্ধার।

ঐকতানের উপায় : বহু বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে সুরের সম্পূর্ণতা আসে, একক বাদ্যযন্ত্রে যা সম্ভব না। অনেকের কাজ একজন করতে পারে না। তেমনি কবির কাব্যের সাথে লৌকিক কবিদের কাব্যযোগে কাৰ্যসাহিত্য সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে। সুরের মতো সাহিত্য ক্ষেত্রেও বিচিত্র রাগিনী সুঙ্গিতে একক কবি নন, বহু কবির শ্রম সাধনার সমন্বয় বা ঐকতান প্রয়োজন।

উপসংহার : ‘ঐকতান’ কবিতাটি কবির জীবনসায়াহ্নের ভাব-কল্পনা এবং জীবনঘনিষ্ঠ সত্য উপলব্ধিমূলক কবিতা। এতে কবির বহুমাত্রিক কাব্য ভাবনার প্রকাশ ঘটেছে। কবি একদিকে সমগ্র বিশ্বমণ্ডলের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন,

অপরদিকে নিম্নশ্রেণির মানুষের সাথে নবীন কবিদের মাধ্যমে নিবিড় সংযোগ স্থাপনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন। কবি উপলব্ধি করেছেন, ‘ঐকতান’ ব্যতীত কাব্য বা সাহিত্যচর্চা কখনো পূর্ণতা অর্জন করতে পারে না।

‘ঐকতান’ কবিতার নামকরণের সার্থকতা 

উপস্থাপনা : সাহিত্যের প্রায় সকল শাখায় বিচরণকারী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি আত্মবিশ্লেষণমূলক কবিতা হলো ‘ঐকতান’। রবীন্দ্র-মানসের বিচিত্র দিক উন্মোচিত হয়েছে এ কবিতায়। এর নামকরণ রবীন্দ্র প্রতিভার অনবদ্য সৃষ্টি ও স্বাক্ষর।

এ কবিতায় ঐক্যের বীণার ঝঙ্কারে প্রকৃতি আর মানুষকে কাছে টানার এক অপূর্ব প্রয়াস ব্যক্ত হয়েছে। কবিতাটি কবির জীবনসায়াহ্নে রচিত। এ রচনার মধ্যে গভীর ভাবনা ও দার্শনিক মূল্যবোধ ফুটে উঠেছে, যা রবীন্দ্র প্রতিভার অমর সার্থকতা বহন করে। নিচে কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করা হলো :

নামকরণের রীতি : নামকরণ সাহিত্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এর মধ্য দিয়ে সাহিত্যের অন্তর্নিহিত ভাব অনেকাংশই ফুটে ওঠে। এজন্য কবি সাহিত্যিকগণ নামকরণে বিশেষ সতর্ক থাকেন। মনীষী Cavendis-এর মতে, ‘A beautiful name is better than a lot of wealth.’ অর্থাৎ, একটি সুন্দর নাম অঢেল সম্পদের চেয়ে উত্তম।

নামকরণে কবি- সাহিত্যিকগণ সাহিত্যকর্মের বিষয়বস্তু, চরিত্র এবং অন্তর্নিহিত তাৎপর্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে থাকেন। আলোচ্য কবিতার নামকরণ করা হয়েছে অন্তর্নিহিত তাৎপর্যের ওপর ভিত্তি করে।

নামকরণের ভিত্তি : প্রবন্ধ, কবিতা বা গল্পের নামকরণের মধ্য দিয়ে সাহিত্যিকের অভীষ্ট লক্ষ্য, ভাব ও বক্তব্য প্রতিভাত হয়ে ওঠে। তাই সাহিত্যে নামকরণের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার সাথে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হয়। যেমন-

  • রচনার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বা বিষয়বস্তু
  • স্থান বা কাল
  • রূপক বা প্রতীকী ব্যঞ্জনা
  • নায়ক-নায়িকার নাম
  • কেন্দ্রীয় চরিত্র
  • রচনার মূলভাব ।

‘ঐকতান’ কবিতায় অনুসৃত নীতি : বিষয়বস্তুকে আশ্রয় করেই কবিতাটির শিরোনাম ‘ঐকতান’ রাখা হয়েছে। কবিতাটিতে মূলত প্রকৃতি, মানসপ্রকৃতি সীমা-অসীমা ইত্যাদি বিষয়সমূহকে কৰি ঐক্যের বন্ধনে গেঁথেছেন।

বিষয়বস্তুর বিচারে ‘ঐকতান’ : পৃথিবীতে নানা জাতি ও নানা শ্রেণির মানুষ রয়েছে। তাদের সামান্য ও অসামান্য মিলেই পূর্ণতার পরিমাপ। কবি তাঁর জীবনসায়াহ্নে এসে গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে অনুভব করেছেন যে, তিনি অসংখ্য কবিতা, প্রবন্ধ, গান ইত্যাদি রচনা করেছেন সত্য, কিন্তু কবি সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন; তাই সাধারণ নিম্নশ্রেণি তথা সর্বস্তরের মানুষ নিয়ে সাহিত্য সাধনা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি।

তাঁর কাব্যেও অপূর্ণতা রয়েছে। তিনি যে সুরের সাধনা করেছেন তা বিচিত্র পথে হয়নি। সর্বত্রগামী ও সামাজিক বাধার কারণে কবি উঁচু সমাজ হতে তাঁর জীবন নৌকাকে কদাচিৎ নিচুতলার মানুষের ঘাটে নোঙর করেছেন। তিনি এসব শ্রমজীবী মানুষের সাথে আত্মীয়তা গড়ে তুলতে পারেননি। সাধারণ মানুষের সাথে সমাজের উচ্চ মঞ্চে বসে আত্মিক পরিচয় গড়া যায় না। কবির ভাষায়-

“কল্পনায় অনুমানে ধরিত্রীর মহা একতান
কত-না নিস্তব্ধ ক্ষণে পূর্ণ করিয়াছে মোর প্রাণ।”

কেবল কল্পনা আর অনুমানে আত্মার খবর পাওয়া যায় না। অন্যদিকে বৃহৎ মানবগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে সমাজের একশ্রেণির মানুষের বিলাসী জীবনের স্বব্যঞ্জনা কোনোমতেই তাদের পূর্ণতা আনতে পারে না। তাই কবি ‘কৃষাণের জীবনের শরীক যে জন’ সেই কবির বাণী-লাগি কান পেতে আছেন।

অখ্যাতজনেরা সেই কবির আগমন প্রতীক্ষায় আছেন যিনি সাহিত্যের ঐকতান সভায় সবাইকে এক সুতায় গাঁথতে পারেন। সুতরাং বিষয়বস্তুর বিচারে ‘ঐকতান’ নামকরণ সুন্দর, সার্থক ও সফল হয়েছে।

বক্তব্যের বিচারে ‘ঐকতান’ : ‘ঐকতান’ কবিতার বক্তব্য ও ভাষা খুবই প্রাঞ্জল। এর ভাষা আবেগনির্ভর নয়। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বায়ত কবি প্রতিভা হিসেবে বিশ্বের বিশালতার সাথে স্বীয় একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। কবি জীবনসায়াহ্নে এসে আত্মমূল্যায়ন দ্বারা তাঁর অসামান্য কাব্যশিল্পকে অপূর্ণ ও ঔদ্ধত্য বক্তব্য হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। সুতরাং ‘ঐকতান’-এর নামকরণ বক্তব্যের শৈল্পিক দৃষ্টিকোণ থেকে যথার্থ হয়েছে।

বিষয়ের আবেদনে ‘ঐকতান’ : রবীন্দ্র প্রতিভার শিল্প-সাফল্য প্রশ্নাতীত। কবি তাঁর অসম্পূর্ণ শিল্প-সাহিত্যের পূর্ণতা নতুন প্রজন্মের মাটি ও মানুষের দ্বারা আশা করেছেন এবং নব প্রজন্মের শিল্প-শৈলিতার সাথে স্বীয় একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। এজন্য বিষয়ের আবেদন ও নামকরণ যথেষ্ট মানানসই।

চূড়ান্ত বিবেচনায় ‘ঐকতান’ : বিষয়বস্তু আর বক্তব্যের মাধুর্যতায় ‘ঐকতান’ কবিতার নামকরণ ‘ঐকতান’ না হলেও ক্ষতি ছিল না। তবে ‘ঐকতান’কে নামকরণের শিরোনাম হিসেবে গ্রহণ করায় এর মাধুর্য যত বৃদ্ধি পেয়েছে তা অন্য নামে কখনো হতো না । ‘ঐকতান’ নামকরণের মাধ্যমে কবির শিল্পচাতুর্যের পরিচয় পাওয়া যায়। আর সার্বিক বিচারে এর নামকরণ হয়েছে যুক্তিযুক্ত ও সার্থক।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, কবিতার অন্তর্নিহিত ভাবের আলোকে কবিতার ‘ঐকতান’ নামকরণ শুধু সার্থকই নয়; বরং অর্থবহ ও শিল্পসমৃদ্ধ হয়েছে। বিশ্বকবি তাঁর এ কবিতায় অন্তর্নিহিত ভাববিন্যাসে যে শিল্পচাতুর্যের পরিচয় দিয়েছেন তা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বিরল।

শিক্ষাগার

প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে

মাহমুদুল হাসান

শিক্ষাগত যোগ্যতা
গণিতে অনার্স ও মাস্টার্স

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ফাজিল সম্পন্ন

গোপালপুর দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা

বিশেষ দক্ষতা

বাংলা সাহিত্য • গণিত • ইসলামিক শিক্ষা

অভিজ্ঞতা

শিক্ষকতা ও ৫+ বছর কন্টেন্ট রাইটিং

আমাদের লক্ষ্য

শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা। ২০২৩ সাল থেকে লাখো শিক্ষার্থী শিক্ষাগার থেকে উপকৃত হচ্ছে।

Leave a Comment