আমাদের দেশে মাছের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে কেন ? এর প্রতিকার কি ?

মাছের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ : মাছ বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলজ প্রাকৃতিক সম্পদ। আমাদের প্রাণীজ আমিষের শতকরা ৮০ ভাগই মাছ থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্যতালিকায় মাথাপিছু মাছের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কমে গেছে। আমাদের দেশে মাছ বা মৎস্যসম্পদ কমে যাওয়ার কারণ প্রধানত দুটি । যথা-

১. প্রাকৃতিক কারণ : আমাদের অনেক নদ-নদীতে পলি পড়ে সেগুলো ভরাট হয়ে গেছে। অনেক নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে, ফলে সেগুলো মাছের বসবাস এবং প্রজননের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে ঋতুগুলোর আবির্ভাব, এবং চলে যাওয়ার সময়ের কিছুটা পরিবর্তন ঘটেছে। নির্দিষ্ট সময়ে বর্ষার আগমন না ঘটা, অনাবৃষ্টির জন্য খালবিল শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে মাছের আবাসস্থল বিনষ্ট হয়ে মাছের উৎপাদন অত্যন্ত কমে গেছে ।

২. মানুষের সৃষ্ট কারণ : বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটানোর জন্য অপরিকল্পিতভাবে মাছ ধরা, জেলেদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এবং একই পুকুরের একাধিক মালিক থাকায় মাছের চাষ ঠিকমত হচ্ছে না। ধান, পাট ও অন্যান্য ফসল বেশি করে উৎপাদন করার জন্য এবং মানুষের আবাসস্থল গড়ে তোলার জন্য পুকুর, খালবিল ভরাট করে ফলা হচ্ছে। ফলে মাছের আবাসস্থল কমে গেছে। আবাদী জমির কীটপতঙ্গ দমনের জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক সেচের বা বৃষ্টির পানিতে মিশে পুকুরে, নদীতে, খালে, বিলে গিয়ে পড়ে। এতে মাছ রোগাক্রান্ত হয়, মারা যায় এবং খাবারের অযোগ্য হড়ে পড়ে । মাছ সংরক্ষণের জন্য প্রচলিত আইন না মেনে ইচ্ছেমতো মাছ ধরায় মাছের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ সমস্ত কারণে মাছ এখন অত্যন্ত দুস্প্রাপ্য এবং দুর্মূল্য হয়ে উঠেছে।

আরো পড়ুন : মৎস্য চাষ ও মৎস্য সম্পদ কাকে বলে? মৎস্য চাষের গুরুত্ব কি?

প্রতিকার : আমাদের দেশে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

১. আদর্শ পুকুর তৈরি করে মৎস্য চাষ করতে হবে।

২. পুকুরের আগাছা এবং রাক্ষুসে মাছ সরিয়ে ফেলতে হবে।

৩. পুকুরে কাপড় কাচা ও সাবান মেখে গোসল করা যাবে না।

৪. ডিমওয়ালা মাছ ও পোনামাছ নিধন নিষিদ্ধ করতে হবে।

৫. সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে পরিকল্পিত উপায়ে মৎস্য চাষ করতে হবে ।

৬. দেশের হাজামজা ও পরিত্যক্ত পুকুর, ডোবা, খাল, নালা সংস্কার করতে হবে।

৭. মাছকে সুষম খাদ্য সরবারহ করতে হবে।

৮. পানি দূষণ রোধের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ।

৯. দরিদ্র লোকদের মৎস্য চাষের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে।

১০. মৎস্য সম্পদ বিভাগের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে হবে।

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment