মহান আল্লাহ তা’আলা মুসলিম জাতির আনন্দ ও খুশি করার জন্য বছরে দুটি দিন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। প্রথমটি ঈদুল ফিতর ও দ্বিতীয়টি ঈদুল আযহা । পবিত্র শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখে মুসলমান জাতি ঈদুল ফিতরের উৎসব পালন করে থাকেন । কারণ পবিত্র মাহে রমাদান আল্লাহর নির্ধারিত ইবাদত যে সব বান্দারা যথারীতি পালন করেছেন তাদের জন্য সত্যিকার খুশি প্রকাশের জন্য এ ঈদুল ফিতরের উৎসব পালন করা হয় । নিম্নে ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম ও নিয়ত (আরবিতে ও বাংলায়) বিস্তারিত আলোকপাত করা হলো :
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে :
نويت أَنْ أَصَلَّى لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَى صَلوةِ عِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتَّةِ تَكْبِيرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اقْتَدَيْتُ بِهٰذَا الإِمَامِ مُتَوَجِّهًا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللّهُ أَكْبَرُ
বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতুআন উছোয়াল্লিয়া লিল্লা-হি তা’আ-লা রাক’আতাই ছলা-তি ‘ঈদিল ফিতরি মা‘আ সিত্তা-তি তাকবিরা-তি ওয়াজিবুল্লা-হি তা’আ-লা ইকতাদাইতু বিহা-যাল ইমাম- মুতাওয়াজ্জিহান ইলা- জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি । আল্লা-হু আকবার ।
অনুবাদ : আমি দু রাক’আত ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব নামায ছয় তাকবীরের সাথে আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে এ ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে নিয়্যত করলাম।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত বাংলায় :
আমি আল্লাহর উদ্দেশে ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব নামায আদায় করার জন্য ছয় তাকবীরের সাথে ইমামের পিছনে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ালাম, আল্লাহু আকবার ।
আরো পড়ুন : ঈদুল ফিতরের ও ঈদুল আজহার সুন্নত সমূহ। সালাত আদায় করার সময়
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম :
- প্রথমে নিয়্যত করতে হবে। (নিয়ত- বাংলা, আরবী অথবা যে কোন ভাষায় করলে চলবে)
- ইমাম তাকবীর বলার পর মুক্তাদিরা আল্লাহু আকবার বলতে বলতে কানের গোড়া পর্যন্ত হাত উঠাবে ।
- তারপর হাত বেঁধে ছানা পাঠ করবে ।
- তারপর তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে হবে এবং প্রত্যেক বার কানের লতি পর্যন্ত হাত উঠাতে হবে। এবং হাত না বেঁধে ছেড়ে দিতে হবে। (প্রত্যেক তাকবীরের মধ্যখানে তিনবার ‘সুবাহানাল্লাহ’ পড়ার সমপরিমাণ সময় থাকতে হবে।)
- তৃতীয় তাকবীরের পর হাত বাঁধতে হবে। (ইমাম সাহেব তাউজ তাসমিয়া, সূরা ফাতেহা এবং অন্য আরেকটি সূরা পড়বে ।) তরপর সিজদাতে গিয়ে রুকূ ও সেজদার তসবিহ ঠিকমত আদায় করবে।
- তারপর দ্বিতীয় রাক’আতে সূরা ফাতেহা এবং অন্য সূরা মিলিয়ে পড়ার পর ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তিন বার তকবীর বলতে হবে। প্রত্যেক তকবীরে কানের গোড়া পর্যন্ত হাত উঠাতে হবে এবং হাত ঝুলন্ত অবস্থায় রাখতে হবে। চতুর্থ তকবীর বলে রুকূতে চলে যাবে ।
- তারপর নিয়ম মত তাশাহুদ দুরূদ শরীফ ও দোয়া মাসূরা পাঠ করে ঈদের নামায শেষ করবে। ইমাম সাহেব দু’টি খুতবা পাঠ করবেন । মুক্তাদিরা মনযোগসহকারে শুনবেন (খুতবা শোনা ওয়াজিব)।
নোট : ঈদের নামাযের জন্য আযান এবং ইকামতের প্রয়োজন নেই। ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার নামায একই রকম শুধুমাত্র নিয়্যত বাঁধার সময় ঈদুল ফিতর অথবা ঈদুল আযহার নাম পরিবর্তন করতে হবে ।
ঈদের সালাত আদায়ের সময় :
ঈদের সালাত আদায়ের সময় সূর্যোদয়ের পর থেকে যুহরের পূর্ব পর্যন্ত। তবে ঈদুল ফিতরের এ সময়ের মধ্যে একটু দেরি করে আদায় করা এবং ঈদুল আযহার সালাত একটু সকাল সকাল আদায় করা সুন্নত। এভাবে ঈদুল ফিতরের ফিতরা ও সদকা আদায় এবং ঈদুল আযহার কুরবানির কাজ সম্পন্ন করতে সুবিধা হয়।