ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত ( আরবিতে ও বাংলায় )

যিলহজ্ব মাসের দশ তারিখে মুসলমানরা ঈদুল আযহার উৎসব পালন করে থাকেন। এ উৎসব প্রকৃতপক্ষে হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর স্মৃতিবাহক । তিনি তাঁর পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ) কে আল্লাহর দরবারে কোরবানি করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন । আল্লাহ তা’আলা সন্তুষ্ট হয়ে হযরত ইসমাইল (আ) কে ছুরির নিচ হতে রক্ষা করেছিলেন। এটা একটি স্মরণীয় ইতিহাস। এরপর হতেই মানুষের পরিবর্তে আল্লাহর নির্দেশে উট, গরু ইত্যাদি কোরবানি করা হয়। হযরত ইসমাইল (আ) এর এ স্মৃতিবাহক দিনটিকেই ঈদুল আযহা বলা হয় ৷ নিম্নে ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত (আরবিতে ও বাংলায়) বিস্তারিত আলোকপাত করা হলো :

ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত আরবিতে :

نويت أَنْ أَصَلَّى لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَى صَلوةِ عِيدِ الْأَضْحَى مَعَ سِتَّةِ تَكْبِيرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اقْتَدَيْتُ بِهٰذَا الإِمَامِ مُتَوَجِّهًا إِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللّهُ أَكْبَرُ

বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতুআন উছোয়াল্লিয়া লিল্লা-হি তা’আ-লা রাক’আতাই ছলা-তি ‘ঈদিল আধ-হা মা‘আ সিত্তা-তি তাকবিরা-তি ওয়াজিবুল্লা-হি তা’আ-লা ইকতাদাইতু বিহা-যাল ইমাম- মুতাওয়াজ্জিহান ইলা- জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি । আল্লা-হু আকবার ।

অনুবাদ : আমি অতিরিক্ত ছয় তাকবীরের সাথে ঈদুল আযহার দু রাক’আত ওয়াজিব নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে এ ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে নিয়্যত করলাম।

ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত বাংলায় :

আমি ঈদুল আয্হার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ ছয় তাকবীরের সাথে কেবলা মুখী হইয়া এই ইমামের পিছনে আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবার ।

আরো পড়ুন : ঈদুল ফিতরের ও ঈদুল আজহার সুন্নত সমূহ। সালাত আদায় করার সময়

ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম :

১। নিয়ত করিতে হইবে হোক সেটা বাংলায় কিংবা আরবিতে। (নিয়ত ওপরে দেয়া আছে। )

২। ইমাম সাহেব তাকবীর দেয়ার পর মোক্তাদিরা আল্লাহু আকবার তাকবীর বলিয়া কানের গোড়া পর্যন্ত হাতে উঠিয়ে হাতকে বাঁধিবে এবং ছানা পাঠ করিবে। سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبَارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلَا إِلٰهَ غَيْرُكَ

৩। সানা পাঠ করার পর ইমাম সাহেব আরো ৩টি তাকবীর দেবেন। প্রথম ২ তাকবীর, আল্লাহু আকবার তাকবীর বলিয়া হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দেবে। তৃতীয় তাকবীরের সময় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে হাত বাঁধিয়া লইবে। এরপর ইমাম সাহেব কেরাত পড়িবে মুক্তাদি মনোযোগের সাথে শ্রবণ করিবে । কেরাত শেষে অনন্য নামাজের মতো রুকু, সেজদাহ করিয়া প্রথম রাকাত শেষ করিবে।

৪। যখন দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবে ইমাম সাহেব প্রথমে সূরা ফাতেহা এবং অন্য আরেকটি সূরা মিলিয়ে পড়বেন। তারপর রুকুতে যাওয়ার পূর্বে পর পর তিনটি তাকবীর বলার সময়ে হাতকে কান পর্যন্ত উঠাইয়া হাত ছাড়িয়া দিবে । এবং চতুর্থ তাকবীর বলিয়া সরাসরি রুকুতে চলে যাবে। রুকু ছিজদাহ্ করিয়া অন্য নামাজের মত নামাজ শেষ করিবে।

নামাজের পরে খুৎবাহ পড়া ছুন্নত, শ্রবণ করা ওয়াজিব। ইমামের খুৎবাহ্ পড়িবার সময়ে মুছুল্লীদের কথা বলা, চলাফিরা করা, অন্যমনষ্ক হওয়া অন্য কোন কাজে লিপ্ত হওয়া জায়েয নেই ।

দুই ঈদের সালাতের হুকুম :

দুই ঈদের সালাত আদায় করা ওয়াজিব। মাহে রমযান শেষে শাওয়ালের চাঁদ দেখে প্রথম তারিখে দিনের বেলায় মুসলিম জাতি ঈদগাহে সমবেত হয়ে মহানন্দে ও উত্তাল ধ্বনি-নিনাদে আল্লাহু আকবার, ছোটো বড়ো শিক্ষিত-অশিক্ষিত মিলিত হয়ে ভ্রাতৃত্বের আদর্শে এক হয়ে যে দুই রাকাত সালাত আদায় করা হয়, তাকে ঈদুল ফিতরের সালাত বলে।

বিশ্ব মুসলিম পঁচন ত্যাগে নির্ধারিত জিলহজ মাসের ঐতিহাসিক দশ তারিখ, মহানবীর (সঃ) হজ যাত্রার মাধ্যমে কুরবানির যে আলোক-উৎসব পালিত হয়ে থাকে, তাই ঈদুল আযহা। এ দিনে ঈদুল ফিতরের মতো একই নিয়মে দুই রাকাত সালাত আদায় করা ওয়াজিব।

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment

Advertisement Advertisement
error: Content is protected !!