উপস্থাপনা :
নারী উত্যক্তকরণ বা নির্যাতন কোন সভ্য জাতির জন্যই শুভ হতে পারে না। নারীর চোখের পানি এক বিশাল শক্তি অনেক সভ্যতার পতন ঘটেছে নারীর অশ্রুর ক্ষোভে । তবে এ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ছেলেদের দায়ী করাটাও ঠিক হবে না। মেয়েরাও এর জন্যে অনেকাংশে দায়ী। বর্তমানে মেয়েরা পশ্চিমা ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে অশালীন পোষাক পরিধান করে যুব সমাজকে স্বভাবতই উত্তেজিত করে তোলে।
ইভটিজিং পরিচিতি ঃ
‘ইভ' শব্দটি এসেছে সৃষ্টির সূচনা লগ্ন Adam and Eve থেকে। Eve বলতে হাওয়া (আ) উদ্দেশ্য হলেও নারীকেই বুঝানো হয় । আর Tease হলো বিরক্ত করা, ঠাট্টা করা, হয়রানি করা। সুতরাং Eve Teasing অর্থ দাঁড়ায়, নারী উত্যক্ত বা হয়রানি করা ।
নারী উত্যক্তের স্বরূপ :
সাম্প্রতিক সময়ে এটি ব্যাপকহারে বিস্তার লাভ করায় গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে উঠে এসেছে । ছাত্রী, গৃহবধূ, শিক্ষিকা সকলেই হয়রানির শিকার । বিশেষ করে স্কুল ও কলেজগামী ছাত্রীরা পথে ঘাটে হয়রানির শিকার হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। পড়া-লেখাও ছেড়ে দিয়েছে কেউ কেউ। বখাটেদের উৎপাতে স্কুল বন্ধ করে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। মেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে না আসা পর্যন্ত উদ্বিগ্ন থাকতে হয় বাবা মাকে ।
আরও পড়ুন :- বাংলা রচনা - ইসলামে নারীর মর্যাদা [ Class - 6, 7, 8 ,9 ,10] - PDF
যাদের হাতে নারীরা উত্যক্ত হয় :
আগেকার দিনে নারী উত্যক্তকরণ বলতে বখাটেদের দ্বারা শিষ দেয়া অথবা গান গেয়ে মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা ছাড়া সম্ভবত আর কিছু ধরা হতো না । কিন্তু সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অদ্ভূত নারী উত্যক্তকরণ বাস্তবিকভাবে যৌন হয়রানির পরিণামকে বুঝায় । এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নারী উত্যক্তকারীদের শতকরা ৩২% হলো ছাত্র, আর ৩৫% হলো সমাজ বিরোধী লম্পট লোকজন, যেখানে ৩৩% হলো মধ্যবয়সী লোকজন ।
পরিবারের অসচেতনতা ঃ
বর্তমান সমাজে, বিশেষ করে শহরে অভিভাবকগণ তাদের ছেলে-মেয়েদের নৈতিকতার ব্যাপারে উদাসীন। তারা বাইরে গিয়ে কি করে কাদের সাথে মেলা-মেশা করে এসব নিয়ে চিন্তা করে না। নীতি-নৈতিকতার প্রথম শিক্ষাকেন্দ্র হচ্ছে পরিবার। পক্ষান্তরে এখানে থেকে যদি তারা অবাধ চলা ফেরার মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাপোর্ট পায় তাহলে তাদের থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ অস্বাভাবিক কিছু নয় ।
নারী উত্যক্তকরণ একটি সামাজিক সমস্যা :
আরও পড়ুন :- যৌতুক প্রথা ও নারী নির্যাতন - বাংলা প্রবন্ধ রচনা
নারী উত্যক্তের পরিণতি ঃ
ইভটিজিং প্রতিরোধে করণীয় :
স্থায়ী প্রতিরোধের জন্য খুঁজে বের করতে হবে অপরাধের মূল উৎস। বিশ্লেষকরা এর জন্যে নৈতিক অধঃপতন, সামাজিক অবক্ষয়, ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব ও মেয়েদের অশালীন চলা ফেরাকে দায়ী করেছেন।
উপসংহার :
এ জন্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে আকাশ সংস্কৃতির কালো থাবা থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করে সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশে উদ্বুদ্ধ করতে হবে ।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা