মানব কল্যাণে বিজ্ঞান অথবা বিজ্ঞানের জয়যাত্রা - রচনা | PDF

উপস্থাপনা ঃ

বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব ও অবদান অপরিসীম । বর্তমানে বিশ্বের প্রতিটি মানুষই বিজ্ঞানের বলয়ে বাস করছে এবং বিজ্ঞানের প্রভুত্বকে স্বীকার করে নিয়েছে । মানব জীবনে বিজ্ঞানের অবদান যে কত ব্যাপক প্রতিদিনের ব্যবহার্য জিনিস-পত্রের দিকে তাকালেই তা সহজে অনুমান করা যায়।

বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার : 

বিজ্ঞানের প্রসার ঘটিয়ে মানুষ দিনের পর দিন নতুন নতুন বস্তু আবিষ্কার করে চলেছে। বর্তমান পৃথিবী বিজ্ঞানের উপর ভর করে চলছে। সভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারায় অগ্রসর হয়ে বর্তমানে বিজ্ঞান পূর্ণ বিকশিত। বিজ্ঞানের দিক নির্দেশনা অজানাকে জানার দিকে, অনাবিষ্কৃতকে আবিষ্কারের দিকে, অচেনাকে চেনার দিকে ধাবিত করছে । 

প্রতিদিনই বিজ্ঞানের কোন না কম্পিউটার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য । কোন বিষয়ের অগ্রগতি হচ্ছেই। বিজ্ঞানের বিস্ময়কর অবদানগুলোর মধ্যে রেডিও, টেলিভিশন, টেলিগ্রাফ, উড়োজাহাজ, বিদ্যুৎ 

আরও পড়ুন :-  মানব কল্যাণে বিজ্ঞান - বাংলা  রচনা ২০ পয়েন্ট 

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান : 

বর্তমানে প্রতিটি মানুষ ঘুম থেকে উঠে আবার না ঘুমানো পর্যন্ত প্রতিটি কাজ কর্মে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। খবরের কাগজ, চা, নাস্তা, বাসন, কোসন, পড়াশোনার কাগজ, কালি, ঘরের আসবাব পত্র, পাখা, টেলিভিশন, ইস্ত্রি, টেলিফোন, এয়ারকন্ডিশন, রেফ্রিজারেটার প্রভৃতি বিজ্ঞানের অবদান ।

চিকিৎসা শাস্ত্রে বিজ্ঞান : 

চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে মানুষ আজ অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে। মুমূর্ষু রোগীর জীবনের নিশ্চয়তা দিচ্ছে বিজ্ঞান। এখন আর কলেরা, বসন্ত, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, যক্ষ্মা ইত্যাদি ব্যাধিতে মানুষকে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয় না। এক্স-রে, অনুবীক্ষণ যন্ত্র, টিকা ইত্যাদি আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিপ্লব বয়ে এনেছে। এমনকি বর্তমানে ঘরে বসে ইন্টানেটের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা যাচ্ছে ।

শিক্ষা প্রসারে বিজ্ঞান : 

বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ আবিষ্কার করে শিক্ষা প্রচার ও প্রসারে বিজ্ঞানের সক্রিয় সহযোগিতা অতুলনীয়। বিজ্ঞান শিক্ষাকে করে তুলেছে সার্বজনীন। চলচ্চিত্র, রেডিও, ক্যাসেট, টেলিভিশন ইত্যাদি বৈজ্ঞানিক অবদানসমূহ চিত্তবিনোদনের সাথে সাথে আমরা দেখতে পাচ্ছি শিক্ষার প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে খুবই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতেছে ।

যোগাযোগের ক্ষেত্রে : 

বাংলাদেশ বিমানের একটি জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন হচ্ছে- “ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী ।” সত্যিই পৃথিবী যেন আমাদের ঘরের কোণায় হাতের মুঠোয় বন্দী । টেলিগ্রাফ ও টেলিফোনের মাধ্যমে আমরা অতি অল্প সময়ে জরুরী খবরাখবর আদান প্রদানের সুযোগ পেয়েছি। বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে আমরা শুধু প্রতিদিনকার খবরাখবরই পাই না, জ্ঞানের বিচিত্র ভাণ্ডারের সাথে পরিচিত হবার সুযোগ আমরা লাভ করেছি।

রিক্সা, গাড়ি, রেল, স্টীমার, প্লেন প্রভৃতি যানবাহন আমাদের চলার পথের নিত্য সাথী। আ আমরা অতি অল্প সময়ের মধ্যেই হাজার হাজার মাইল পথ অতিক্রম করতে পারছি বিজ্ঞানের বদৌলতে ।

কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান : 

কৃষিক্ষেত্রেও বিজ্ঞান অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করেছে। মান্ধাতার আমলের কাঠের লাঙ্গলের পরিবর্তে ব্যবহৃ হচ্ছে ট্রাক্টর ও কলের লাঙ্গল । জমিতে ব্যবহৃত হচ্ছে, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ওষুধ। মৌসুমী জলবায়ুর ওপর নির্ভর না করে পা সেচের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে গভীর ও অগভীর নলকূল । কৃষির ফলনকে বাড়ানোর জন্য গবেষণার মাধ্যমে উন্নতমানের বীজও সরবরাহ করা হচ্ছে।

তথ্য প্রবাহে বিজ্ঞান : 

ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার যুগে সারা দুনিয়া একটি 'বিশ্বপ্রোগ্রামে' পরিণত হয়েছে। স্যাটেলাইট যোগাযোে সুযোগে দুনিয়ার কোথায় কি হচ্ছে তা সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বময় প্রচারিত হচ্ছে।

অপকারিতা

বিজ্ঞান একদিকে মানুষের অশেষ কল্যাণ সাধন করছে, অন্যদিকে এনেছে বিভীষিকা ও ধ্বংস। পারমাণবিক বো হাইড্রোজেন বোমা, এটম বোমা, ডিনামাইট, বোমারু বিমান, ট্যাক্স, সাবমেরিন, আরও অন্যান্য মারাণাস্ত্র আবিষ্কারের ফলে মানব সভ আজ হুমকির সম্মুখীন।

উপসংহার

মানব সভ্যতাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানই মানুষকে শান্তি ও সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে। তবে মানুষ যদি বিজ্ঞানের শক্তিকে অপব্যবহার করে সৃষ্টিকে ধ্বংস করে তাহলে দোষ মানুষের, বিজ্ঞানের নয় । মানুষ যদি বিজ্ঞানকে সভ্যতার বিব মানব কল্যাণে ব্যবহার করে তাহলে বিজ্ঞান অভিশাপ না হয়ে আশীর্বাদই হবে। তাই বিজ্ঞানের সুষ্ঠু ব্যবহারই আমাদের প্রত্যাশা।




Post a Comment

0 Comments