মাইটোসিস এর ধাপ :
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ৫টি ধাপ :
- ১। প্রোফেজ ।
- ২। প্রো-মেটাফেজ ।
- ৩। মেটাফেজ ।
- ৪ । এনাফেজ ।
- ৫। টেলোফেজ ।
এই ৫টি ধাপের প্রতিটি ধাপে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। যেমন –
‘প্রোফেজ' এর উল্লেখযোগ্য ঘটনা :
এই ধাপের শেষে নিউক্লিওলাস এবং নিউক্লিয়ার মেমব্রেন বিলুপ্ত হয়।
‘প্রো- মেটাফেজ' এর উল্লেখযোগ্য ঘটনা :
এ ধাপে তন্তুময় প্রোটিনের সমন্বয়ে কোষে দুই মেরুযুক্ত মাকু বা স্পিন্ডল যন্ত্রের সৃষ্টি হয়। প্রতিটি ক্রোমোসোমের সেন্ট্রোমিয়ার স্পিন্ডল যন্ত্রের একটি তন্ত্রের সাথে সংযুক্ত হয় ।
‘মেটাফেজ' এর উল্লেখযোগ্য ঘটনা :
এ পর্যায়ে ক্রোমোসোমগুলো সর্বাধিক মোটা ও খাট হয়। সেট্রোমিয়ার দুটি খন্ডে বিভক্ত হয় ও ক্রোমাটিড স্পষ্ট হয় এবং সেন্ট্রোমিয়ার বিষুব অঞ্চলে অবস্থান করে ।
আরও পড়ুন :- মাইটোসিস কাকে বলে? মাইটোসিসের বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব এবং কোথায় ঘটে
‘এনাফেজ' এর উল্লেখযোগ্য ঘটনা :
প্রতিটি ক্রোমোসোমের দুটি আলাদা ক্রোমোটিড স্পিন্ডল যন্ত্রের দুই বিপরীত মেরুর দিকে অগ্রসর হয়। এক্ষেত্রে সেন্ট্রোমিয়ার অগ্রগামী ও বাহুদ্বয় অনুগামী হয়। অপত্য ক্রোমোসোমগুলো মেরুর কাছাকাছি পৌঁছালে এনাফেজ ধাপের সমাপ্তি ঘটে ।
‘টেলোফেজ' এর উল্লেখযোগ্য ঘটনা :
পানি শোষণ করে ক্রোমোসোমগুলো পুনরায় সরু ও লম্বা হয়। পুনরায় নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয়ার মেমব্রেনের আবির্ভাব ঘটে। স্পিন্ডল যন্ত্র অদৃশ্য হয়ে যায়। মাতৃকোষ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি নতুন অপত্যকোষের সৃষ্টি হয় ।
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের তাৎপর্য :-
- ১. বহুকোষী জীবে জাইগোট নামক একটি মাত্র কোষের মাইটোসিস বিভাজনের মাধ্যমে বহুকোষী দেহ গঠিত হয় এবং এর দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে ।
- ২. মাইটোসিস বিভাজনের ফলেই বহুকোষী জীবের জননাঙ্গ সৃষ্টি হয়, ফলে বংশ বৃদ্ধির ক্রম ধারা বজায় রাখতে পারে ।
- ৩. ঐ বিভাজন প্রক্রিয়ার ফলে কোষের স্বাভাবিক আকার, আকৃতি, আয়তন ইত্যাদি গুণাগুণ বজায় থাকে ।
- ৪. প্রতিটি কোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমের মধ্যকার পরিমাণগত ও নিয়ন্ত্রণগত ভারসাম্য রক্ষিত হয়।
- ৫. দেহের সব কোষে সমসংখ্যক ও সমগুণসম্পন্ন ক্রোমোজোম থাকে ।
- ৬. বহুকোষী জীবদেহে সৃষ্ট যে কোনো ক্ষতস্থান মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজনের মাধ্যমে দ্রুত পূরণ হয়।
- ৭. জীবজগতের গুণগত বৈশিষ্ট্যের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে ।
মাইটোসিস কে সমীকরণিক কোষ বিভাজন বলা হয় কেন ?
মাইটোসিস কোষ বিভাজনে মাতৃকোষ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষে পরিণত হয়। অপত্য কোষ গুলো নিউক্লিয়াস ও ক্রোমোজোম সংখ্যা ও গুনাগুন মাতৃকোষের মতো হয়। এ কারণেই মাইটোসিস বিভাজন কে সমীকরণিক বিভাজন বলা হয়।