আবৃতবীজী উদ্ভিদের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব, গোত্র পরিচিতি

সংজ্ঞা :- যে সকল সপুষ্পক উদ্ভিদের ফুল ও ফল হয়, বীজ ফলের মধ্যে আবদ্ধ থাকে এবং ফুল উন্মুক্ত অবস্থায় থাকে তাদেরকে আবৃতবীজী (Angiosperms) বা গুপ্তবীজী উদ্ভিদ বলে।

আবৃতবীজী উদ্ভিদের প্রকারভেদ:-

ইহা দুই প্রকার। যথা -

১। লিলি শ্রেণী (Liliopsida) বা একবীজপত্রী উদ্ভিদ।

২। ম্যাগনোলিয়া শ্রেণী ( Magnoliopsida) বা দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ।  

আবৃতবীজী উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য:-

  • আবৃতবীজী উদ্ভিদটি স্পোরোফাইট পুষ্পক এবং ভাসকুলার টিস্যু দ্বারা সমৃদ্ধ।  
  • গর্ভকেশর সাধারণত গর্ভাশয়, গর্ভদন্ড এবং গর্ভমুন্ড এই তিনটি অংশে বিভক্ত থাকে। 
  • গর্ভাশয় আবদ্ধ প্রকোষ্ঠ বিশেষ। 
  • ডিম্বক গর্ভাশয় এর ভিতরে সৃষ্টি হয়, এবং গর্ভধারণের পর ডিম্বক বীজে পরিণত হয় তাই বীজ ফলের ভিতরে আবৃত অবস্থায় থাকে। 
  • শুক্রাণু ফ্লাজেলা বিহীন পরাগায়নকালে পরাগরেনু গর্ভমুণ্ডে পতিত হয়। 
  • এদের দ্বিনিষেক ঘটে, দ্বিনিষেকের পর শস্য গঠন আরম্ভ শুরু হয়। তাই বীজের শস্য ট্রিপ্লয়েড। 
  • কোন প্রকার আর্কিগোনিয়া সৃষ্টি হয় না। আর্কিগোনিয়া সৃষ্টি না হওয়া উন্নত বৈশিষ্ট্য। 
  • জাইলেম টিস্যুতে প্রকৃত ভেসেল কোষ এবং ফ্লোয়েম টিস্যুতে সঙ্গীকোষ থাকে। 
  • বীজের মধ্যে একটি বা দুইটি বীজ পত্র থাকে। 

আরও পড়ুন : নগ্নবীজী উদ্ভিদের সংজ্ঞা,বৈশিষ্ট্য,উদাহরণ,আবৃত ও নগ্নবীজী পার্থক্য

আবৃতবীজী উদ্ভিদ এর উৎপত্তিস্থল :-

আজ থেকে প্রায় ১৩ কোটি বছর আগে আবৃতবীজী উদ্ভিদের উৎপত্তি হয়েছিল বলে মনে করা হয়। অনেকের মতে গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চল, বিশেষ করে দক্ষিণ - পূর্ব এশিয়া ছিল আবৃতবীজী উদ্ভিদের উৎপত্তি স্থল এবং এখান থেকে ক্রমান্বয়ে সব দিকে ছড়িয়ে পড়ে। 

আবৃতবীজী উদ্ভিদের অর্থনৈতিক গুরুত্ব :

(আবৃতবীজী উদ্ভিদের প্রায় ২,৮৭,০০০টি প্রজাতির মধ্যে মাত্র ১,০০০টি প্রজাতির গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ভূমিকা রয়েছে। এদের মধ্যে ১০০টি প্রজাতির (যেমন-খাদ্য, কাঠ, বস্ত্র ও ওষুধের জন্য) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হয়ে থাকে। আর ১৫টি প্রজাতি বিশ্বব্যাপি মানুষের প্রধান খাদ্যের জোগান দেয়। যেমন-ধান, গম, ভুট্টা, জোয়ার, বার্লি, আলু, মিষ্টি আলু, কাসাভা প্রভৃতি (এছাড়া শতাধিক উদ্ভিদ থেকে অন্তত ১২০ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আধুনিক ওষুধ প্রস্তুত করা হয়। 

আবৃতবীজী উদ্ভিদের গোত্র পরিচিতি :- 

পৃথিবীতে যত আবৃতবীজী উদ্ভিদ রয়েছে সকল আবৃতবীজী উদ্ভিদকে প্রধানত দু'টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়; যথা - 

১। লিলি শ্রেণি (Liliopsida) বা একবীজপত্রী উদ্ভিদ। ২। ম্যাগনোলিয়া শ্রেণি (Magnoliopsida) বা দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ এবং।  প্রতিটি শ্রেণিকে পুনরায় একাধিক উপশ্রেণি, বর্গ এবং গোত্রে বিভক্ত করা হয়েছে। ড. আর্থার ক্রনকুইস্ট (১৯৮১) সকল আবৃতবীজী উদ্ভিদকে ৩৮০টি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর মধ্যে একবীজপত্রী উদ্ভিদ গোত্র ৬৫টি এবং দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ গোত্র ৩১৫টি।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যবলি

  • আবৃতবীজী উদ্ভিদের এন্ডোস্পার্ম হলো - ট্রিপ্লয়েড। 
  • আবৃতবীজী উদ্ভিদের অপর নাম - Flowering plants বা পুষ্পক উদ্ভিদ।  
  • আবৃতবীজী উদ্ভিদের শস্য কেমন হয় - ট্রিপ্লয়েড। 
  • বাংলাদেশের ক্ষুদ্রতম আবৃতবীজী উদ্ভিদ কোনটি - Wolffia arrhiza .

আরও পড়ুন 

লাইকেন কাকে বলে? লাইকেনের বৈশিষ্ট্য এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব

আলুর লেট ব্লাইট রোগ এবং দাদ রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

Post a Comment

0 Comments