ভূমিকা :
যুগে যুগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মানুষের হাতে অভাবনীয় সব যান্ত্রিক ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে। সেসবের মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো কম্পিউটার। বিশ শতকে আবিষ্কৃত এ যন্ত্রটিকে বলা যায় একটি যন্ত্রমস্তিষ্ক। শক্তিশালী অথচ অনুগত এই যন্ত্রের ব্যবহার করা যায় অত্যন্ত সহজে । তাকে লাগানো যায় বহুমুখী ও বিচিত্র সব কাজে । ফলে খুব কম সময়েই মানবসভ্যতা হয়ে পড়েছে কম্পিউটার-নির্ভর।
কম্পিউটার ও তার কর্মপদ্ধতি :
আভিধানিক অর্থে কম্পিউটার এক ধরনের গণনা যন্ত্র। কিন্তু এখন এর কাজ কেবল গণনার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়। বরং আধুনিক কম্পিউটার হলো এমন একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র যা অনেক তথ্য বা উপাত্ত (Data) গ্রহণ ও ধারণ করতে পারে এবং উপাত্তগুলোকে গাণিতিক, যুক্তিমূলক ইত্যাদি বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কাজে লাগাতে এবং বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অনেকটা মানুষের মস্তিষ্কের মতো কাজ করে বলে কম্পিউটারকে বলা হয় যন্ত্রমস্তিষ্ক। কম্পিউটারের যন্ত্রমগজে রয়েছে তিনটি সুস্পষ্ট অংশ:
১. ইনপুট: এ অংশ উপাত্ত বা ডাটা গ্রহণ করে ।
২. সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (সিপিইউ): এ অংশ গৃহীত ডাটার ওপর বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এবং ডাটা ও ফলাফল সংরক্ষণ করে ।
৩. আউটপুট: ফলাফল প্রকাশ করে ।
কম্পিউটারে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার নামক দুটো অংশ আছে। কম্পিউটারের বাহ্যিক সকল যন্ত্রপাতি অর্থাৎ মনিটর, মাউস, কি-বোর্ড, হার্ডডিস্ক, র্যাম, প্রিন্টার, স্ক্যানার ইত্যাদি হার্ডওয়ার-এর অন্তর্গত । অপরদিকে সফটওয়ার হলো কম্পিউটারে ব্যবহৃত প্রোগ্রাম সমষ্টি ও কম্পিউটারের ভাষার সমন্বয়ে গঠিত এমন একটি অংশ যা হার্ডওয়ারগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে।
কম্পিউটারের বড় উপযোগিতা হলো তথ্য ও প্রোগ্রামের রদবদল বা সংযোজন ঘটিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নানারকম কাজ করানো। এর উপযোগিতামূলক মূল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে: ১. অত্যন্ত দ্রুত গতি ২. বহু তথ্য ধারণ ক্ষমতা ৩. তথ্য বিশ্লেষণের নির্ভুল ক্ষমতা ৪. ডাটা ও প্রোগ্রাম অনুসারে কাজ করার ক্ষমতা ।
আরও পড়ুন :-দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা ১৫ পয়েন্ট-Class 6,7,8,9,10|পিডিএফ
উদ্ভাবন :
আধুনিক কম্পিউটারের সূত্রপাত হয় ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ গণিতবিদ চালর্স ব্যাবেজের গণকযন্ত্র অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন থেকে। চার্লস ব্যাবেজকে তাই কম্পিউটারের জনক বলা হয়। প্রথমদিকের কম্পিউটারগুলো আকার ও আয়তনে ছিল বিশাল, কয়েকটি রুমে রাখতে হত এর যন্ত্রপাতি। পরবর্তীকালে মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কার হওয়ায় এর আকার ছোট হয়ে আসে। এখন এমনকি হাতের তালুর আকারের এটারও বাজারে পাওয়া যায় ।
কম্পিউটারের কর্মক্ষেত্র :
কম্পিউটারজনিত সমস্যা :
কম্পিউটারের ক্ষমতা সাধারণ জনশক্তির চেয়ে বহুগুণ বলে এর ব্যাপক ব্যবহারে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। ফলে বেকারত্ব বাড়ছে। এ ছাড়া কম্পিউটার নির্গত তেজস্ক্রিয়তা শরীরের জন্যে ক্ষতিকর বিবেচিত হচ্ছে।
উপসংহার :
কম্পিউটারের সঠিক ব্যবহার আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের উন্নতির পথে অপরিহার্য। তবে এর অপব্যবহারও তরুণ প্রজন্মের জন্যে ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করে কম্পিউটারের সঠিক ও সময়োপযোগী ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে, তা আমাদের অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে সুফল বয়ে আনবে।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা