মানব কল্যাণে বিজ্ঞান - বাংলা রচনা (২০ পয়েন্ট )- PDF

(toc) Table Of Contens

উপস্থাপনা : 

ইংরেজি ভাষায় একটা প্রবাদ আছে- Necessity is the mother of invention. অর্থাৎ, প্রয়োজনের তাগিদেই আবিষ্কারের জন্ম । আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। মানুষ আল্লাহপ্রদত্ত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে নিত্যনতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে সভ্যতার চরম উন্নয়ন সাধন করেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ও বিকাশ ঘটিয়ে মানুষ অনেক অসাধ্য সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটেছে এবং তা খুব সহজ-সরল হতে সাহায্য করেছে।

বিজ্ঞানের পরিচয় :

বিজ্ঞান' অর্থ বিশেষ জ্ঞান। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ Science. মানুষের যে জ্ঞানের মাধ্যমে অভিনব আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে তার নামই বিজ্ঞান ।

বিজ্ঞানের অভিযান : 

মানুষের কল্যাণের নিমিত্ত বিজ্ঞানের অভিযান দুরন্ত দুর্বার এবং বাধা-বন্ধনহীন। বিজ্ঞানের কাছে অসম্ভব, অপ্রতিরোধ্য বা অগম্য বলে কিছু নেই। বিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর অভিযানে মানবসমাজ আজ বিস্মিত ও উদ্বেলিত। 

বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার : 

বিজ্ঞানের বিস্ময়ের শেষ নেই। আজকের আধুনিকতা অনাগত ভবিষ্যতে সনাতনে রূপ নিচ্ছে। বিজ্ঞানের পদচারণা অজানা, অচেনা ও অনাবিষ্কৃতের দিকে। প্রতিদিন বিজ্ঞান তার আবিষ্কারের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছে। জন এল বেয়ার্ড টেলিভিশন, বিজ্ঞানী মর্স টেলিগ্রাম, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন, রাইট ব্রাদার্স উড়োজাহাজ আবিষ্কার করে পৃথিবীকে চমকে দেন। কিন্তু বর্তমান সময়ের নব আবিষ্কার ঐগুলোকে চমকের প্রাথমিক যাত্রা বলে প্রমাণ করেছে।

আরও পড়ুন :- মানব কল্যাণে বিজ্ঞান  অথবা বিজ্ঞানের জয়যাত্রা - রচনা | PDF 

বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীলতা : 

বিজ্ঞান আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে তার নিপুণ হাত সম্প্রসারিত করেছে। প্রতিদিন-প্রতিক্ষণ আমরা বিজ্ঞানের আবিষ্কার ছাড়া অচল হয়ে পড়ি। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দাঁতের মাজন, টুথপেস্ট, হাত ধোয়ার বেসিন বা সাওয়ার, গ্রামের টিউবওয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করতে হচ্ছে। আমাদের প্রতিটি কর্মের সহায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজ্ঞান এবং আমরা হয়ে পড়েছি বিজ্ঞাননির্ভর।

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান : 

বিজ্ঞান মানবজাতির বিস্ময়কর সাফল্য। মানুষের প্রকৃত কল্যাণসাধনই বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য। আমাদের সমাজজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য। মানব ইতিহাসের গোড়া থেকেই লক্ষ্য করা গেছে যে, বিজ্ঞানের জন্ম হয়েছে জীবনকে সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত করে গড়ে তোলার জন্য।

মানবকল্যাণে আধুনিক বিজ্ঞান : 

মানবজীবনের সর্বাধিক কল্যাণসাধনের জন্য আধুনিক বিজ্ঞানের অবদান অপরিসীম। বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে মানবজীবনকে অনেক সহজ, সুন্দর, সমৃদ্ধ ও সুখী করে তুলেছে। বিজ্ঞানের সীমাহীন শক্তির জোরে মানুষ বিশ্বজগতকে হাতের মুঠোয় এনেছে। মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর জন্য বিজ্ঞান নানাবিধ অভিনব কৌশল ও পথনির্দেশ করছে।

মৌলিক সমস্যার সমাধান : 

বিজ্ঞান আমাদের মৌলিক সমস্যার সমাধান করছে। আমাদেরকে স্বাচ্ছন্দ্য ও উন্নত জীবনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। একসময় বিশ্বের মোট জনসংখ্যার বিরাট অংশ খাদ্যাভাবের মোকাবেলায় হিমশিম খেত, কিন্তু আজ পৃথিবীর ছয়শ পঞ্চাশ কোটি মানুষের খাদ্যাভাব হচ্ছে না। যা হচ্ছে তা কৃত্রিম এবং সুষম বণ্টনের অভাবে। ফলে বিজ্ঞান এখন মানুষের জীবনকে আরো সহজ সুন্দর করার চেষ্টায় লিপ্ত

কৃষিতে বিজ্ঞান : 

কৃষি কাজে আধুনিক পদ্ধতি বিজ্ঞানের অবদান। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য ট্রাকটর, পাওয়ার টিলার, সিডলিং, লেডার, গভীর-অগভীর নলকূপ ব্যবহৃত হচ্ছে। উন্নত বীজের পাশাপাশি উন্নত সার ইউরিয়া, পটাশ, ফসফরাস ইত্যাদি ব্যবহার হচ্ছে। 

পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে। BRRI এর উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল ধান উৎপাদন করছে। যেমন- ব্রি-ধান ৪২, ব্রি-ধান ৪৩। ফলে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের খাদ্যাভাব বেশ খানিকটা দূর হয়েছে।

প্রকৌশল ক্ষেত্রে বিজ্ঞান : 

সভ্যতার উন্নতি ও বিকাশে প্রকৌশল বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য। প্রকৌশল বিজ্ঞান নানা অসম্ভবকে সম্ভব করে। আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিকাশে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে নতুন নতুন দালানকোঠা। অত্যাধুনিক রাস্তা, হাইওয়ে এবং টুইন টাওয়ারের মতো বিচিত্র স্থাপনা। এসব প্রকৌশল কাজে বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত কলাকৌশল ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই বিজ্ঞান মানব সভ্যতাকে নিয়ে গেছে আরো একধাপ এগিয়ে।

শিল্পে বিজ্ঞান : 

বর্তমান যুগে যে দেশ শিল্পে যত উন্নত সে দেশ অর্থনীতিতে তত উন্নত। আধুনিক সভ্যতা উন্নত শিল্পকারখানা এবং মেশিনারীর ওপর নির্ভরশীল। শিল্পোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বিজ্ঞানের অবদান। বিজ্ঞান শিল্পায়নকে দক্ষ এবং সহজ করেছে। শিল্পায়ন আমাদের বিদেশ নির্ভরশীলতা হ্রাস এবং লক্ষ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানে সহায়তা করছে।

চিকিৎসায় বিজ্ঞান : 

বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞান অনেক উন্নতি লাভ করেছে। এতদিন যেসব রোগ নির্ণয় করা কঠিন ছিল, আজকাল উন্নত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সেসব রোগ নির্ণয় ও তার চিকিৎসা করা হচ্ছে। মুমূর্ষু রোগীও আজ নবজীবনের আশায় উজ্জীবিত হয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে দৌড়াচ্ছে। 

বিজ্ঞানের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা হচ্ছে এবং এইডস এর প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা চলছে। বড় বড় রোগগুলো বাদ দিলেও ছোটখাট যেমন- ডায়রিয়া ছিল একসময় অপ্রতিরোধ্য। আজকাল সে ডায়রিয়া সামান্য ওরস্যালাইনের কাছে হার মানছে ।

অবকাঠামো নির্মাণে বিজ্ঞান : 

যে কোনো দেশের উন্নয়নের জন্য দরকার উন্নত অবকাঠামো। বিজ্ঞান আজ অতি সহজেই শক্তিশালী অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করছে। শিল্প-কারখানার জন্য দালানকোঠা, যন্ত্রপাতি, যোগাযোগের জন্য রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট ইত্যাদি উন্নত অবকাঠামো নির্মাণে বিজ্ঞান আমাদেরকে সহায়তা করছে। ফলে উন্নয়নের প্রাথমিক ধাপ অতিক্রম করার পথ সুগম হচ্ছে।

যোগাযোগে বিজ্ঞান : 

বিজ্ঞান বিশাল পৃথিবীকে আজ আমাদের ঘরের কোণে নিয়ে এসেছে। মানুষ আজ লন্ডন থেকে প্যারিস, প্যারিস থেকে ওয়াশিংটন, ওয়াশিংটন থেকে বেইজিং চলে যাচ্ছে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে। যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়েছে আরো অনেক আধুনিক ও উন্নত। ঘরে বসে সেকেন্ডের মধ্যে কোটি কোটি মাইল দূরের কারো সাথে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কুশল বিনিময় করা যায়। এসবই মানবকল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান।

আরও পড়ুন :- নিয়মানুবর্তিতা- বাংলা রচনা - Sikkhagar

প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান : 

বর্তমান জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবিসংবাদিত প্রাধান্য লক্ষণীয়। প্রভাতের শয্যাত্যাগ থেকে রাতের শয্যাগ্রহণ পর্যন্ত বিজ্ঞান মানুষের নিত্য সহচর। শহুরে জীবন বিজ্ঞানের অবদানের কাছে সম্পূর্ণ মুখাপেক্ষী। সকালে শয্যাত্যাগ করতে না করতেই কলে পানি এসে যায়। প্রয়োজন মতো কখনো সে পানি উষ্ণ কখনো বা শীতল। গরমের সময় বৈদ্যুতিক পাখা না হলে আমাদের চলে না। 
ধনী লোকেরা এয়ারকুলার ব্যবহার করতে পারে। টেলিফোন ও মোবাইলের মাধ্যমে হাজার হাজার মাইল দূরের আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজখবর নেয়া যায়। এখন আর প্রতিদিন বাজারে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। কর্মব্যস্ত মানুষ এক সাথে অনেকদিনের বাজার ফ্রিজে রেখে দিতে পারে। বাস ট্রেন ও ট্যাক্সির সাহায্যে মানুষ দ্রুতগতিতে স্থানান্তরিত হতে পারে। এসবই হচ্ছে বিজ্ঞানের কল্যাণে। এক কথায় যন্ত্রবর্জিত জীবনযাত্রা এখন আর কল্পনা করা যায় না।

বিজ্ঞানের অপকারিতা : 

বিজ্ঞান একটি শক্তি। এ শক্তির ব্যবহার যেমন আমাদের জন্য কল্যাণকর, তেমনি এ শক্তির অপব্যবহারও অকল্যাণ বয়ে আনে। এটম বোমা, হাইড্রোজেন বোমা, ডিনামাইট, বোমারু বিমান, ট্যাংক, সাবমেরিন ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে মানবজীবনে নেমে এসেছে নিদারুণ ভীতি। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরের ধ্বংসলীলাই এর বাস্তব প্রমাণ। তরুণ সমাজ আজ বিজ্ঞানের অবদান ডিশ এন্টিনাকে যথেচ্ছা ব্যবহার করে চারিত্রিক পদস্খলনের শিকার হচ্ছে। কিন্তু এসব বিজ্ঞানের অপরাধ নয়। অপরাধ হলো এগুলোর অপব্যবহারকারীর।

বিজ্ঞানচেতনার প্রসার : 

সেই আদিম যুগে গোষ্ঠীবদ্ধ যাযাবর মানুষের জীবনে যুগান্তর আনলো আগুনের আবিষ্কার আর কৃষিকার্য প্রচলন। সেই সময় গড়ে ওঠল ছোট ছোট গ্রাম। উদ্ভাবিত হলো আদি কৃষিযন্ত্র 'লাঙল'। মানুষ ক্ষেতে জলসেচের জন্য তার বৈজ্ঞানিক বৃত্তিকেও কাজে লাগাতে শিখল। শস্য সংরক্ষণ, ফসল থেকে আরও নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী (যেমন; কার্পাস থেকে সূতা) বানাতে শিখল, কুমোরের চাকা ঘুরিয়ে মানুষ বানাতে শুরু করল নানা ধরনের মাটির পাত্র। ঐ সময় বয়ন শিল্পেরও উদ্ভব ঘটে। 

ভারি জিনিস সহজে তোলার জন্য ঐ সময় মানুষ কপিকল, আলম্ব প্রভৃতি যন্ত্রের সাহায্য নিতে শিখেছিল। 'প্যাপিরাস' জাতীয় নলখাগড়া থেকে মিসরের মানুষ প্রথম লেখার উপযোগী কাগজ তৈরি করল। ইরাক অঞ্চলের লোকেরা প্রথম চাকাযুক্ত গাড়ি বানিয়ে পরিবহন ব্যবস্থায় যুগান্তর আনলো। পানি তোলার উপযোগী বিশেষ ধরনের পাম্প এবং যন্ত্রচালিত ঘড়ি প্রথম আবিষ্কৃত হয় চীনদেশে। 

গ্রিসের মানুষেরা প্রথম পৃথিবী ও মহাকাশের মানচিত্র বানায়। প্রাণিবিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র, স্থাপত্যবিদ্যা এবং জ্যামিতির ক্ষেত্রে গ্রিকবিজ্ঞানীদের দান কম ছিল না। অন্যদিকে বীজগণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, শল্যচিকিৎসা, রসায়নশাস্ত্র, জীববিদ্যা প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রাচীন ভারতের ও আরব দেশের বিজ্ঞানীরা যেসব তত্ত্ব উদ্ভাবন করেছিলেন, তা মানুষের জীবনযাত্রাকে যথেষ্ট সহজ করে দেয় ।

বিজ্ঞানের জয়যাত্রা :

আজ বিজ্ঞানের জয়ধ্বনি ঘোষিত হলেও পৃথিবীতে তার সূচনা হয়েছিল অত্যন্ত দীনভাবে। বিজ্ঞানের বলে মানুষ আজ খনির অন্ধকারে আলো জ্বালাতে সক্ষম হয়েছে। বিজ্ঞানের শক্তিবলে মানুষ দানবীয় নদীস্রোতকে বশীভূত করে ঊষর মরুপ্রান্তরকে করেছে জলসিক্ত, ভূগর্ভের সঞ্চিত শস্য-সম্ভাবনাকে করে তুলেছে সফল, দূর করে দিয়েছে পৃথিবীর অনুর্বরতার অভিশাপ। 

বিজ্ঞান আজ উর্বরতা দিয়ে ক্ষয়িষ্ণু বসুধাকে শস্যবতী করে তুলেছে। নব নব শিল্প প্রকরণে সে উৎপাদন জগতে এনেছে যুগান্তর এবং সুদূরকে করেছে নিকটতম। বিজ্ঞানের সাফল্যে জীবধাত্রী বসুধা আজ কলহাস্যমুখরা।

মানবকল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান : 

প্রাগৈতিহাসিক মানবের আগুন আবিষ্কারের দিন থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত মানুষের অতন্দ্র সাধনা বিজ্ঞানকে করেছে সমৃদ্ধ, সভ্যতাকে করেছে গতিশীল। বাষ্পীয় শক্তিকে সে করেছে বশীভূত, বিদ্যুৎকে করেছে করায়ত্ত, মুঠোয় পুরে নিয়েছে পারমাণবিক শক্তিকে। ডাঙায় ছুটছে বাস, ট্রেন, ট্যাক্সি, জলে ঢেউ-এর ঝুঁটি জাপটে ধরে জাহাজ ছুটে চলেছে, আকাশ তোলপাড় করে উড়ে চলেছে দ্রুতগামী উড়োজাহাজ, মহাশূন্যে পাড়ি দিচ্ছে রকেট, স্পুটনিক, মহাকাশযান।

অন্যদিকে বিজ্ঞান মৃত্যুর গ্রাস থেকে জীবনকে বাঁচিয়ে তুলতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দৈনন্দিন জীবনে মানুষ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারকে পূর্ণাঙ্গরূপে কাজে লাগিয়েছে ইউরোপে শিল্পবিপ্লব ঘটে যাবার পর থেকে, উনিশ শতকে। ঐ সময়ই মানুষ বাষ্পের শক্তিকে নানা কাজে ব্যবহার করতে শিখে। তারপর আমরা ক্রমে ক্রমে বিদ্যুৎশক্তিকে কাজে লাগাতে শিখলাম। 

বিশ শতকে আমরা জ্বালানি কয়লা ছাড়াও পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস এমনকি পারমাণবিক শক্তিকে মানুষের কল্যাণের কাজে লাগাতে পেরেছি। বাষ্পশক্তি, প্রাকৃতিক গ্যাসের শক্তি, সর্বোপরি বিদ্যুৎশক্তির ব্যাপক প্রচলন ঘটেছে নাগরিক জীবন থেকে গৃহস্থের ঘরে ঘরে। তাই আধুনিক কালে তার সাহায্য ছাড়া আমাদের এক মিনিটও চলে না । আর ঐ মিনিটের হিসেব করার জন্য প্রয়োজন হয় ছোট বড় ঘড়ির। তার কোনটা আবার ইলেকট্রনিক ।

উপসংহার : 

বিজ্ঞান ভালো মন্দ ব্যবহারের তারতম্যের মধ্য দিয়েই প্রতিষ্ঠা করেছে শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি। বিজ্ঞান ছাড়া বর্তমান জগতে নানাবিধ প্রতিকূল অবস্থায় চলাই মুশকিল হতো। বিজ্ঞানের সঠিক ব্যবহার আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।



Post a Comment

0 Comments