সুন্দরবন - রচনা : Class 3, 4, 5

সুন্দরবন রচনা - ১

সূচনা : 

আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশ এক অদ্ভুত সুন্দর দেশ। এখানে রয়েছে পাহাড়, নদীনালা, সমুদ্র, বন। সুন্দরবন বাংলাদেশের বৃহত্তর বন। এটি পৃথিবীর বৃহত্তর ম্যানগ্রোভ বন ।

অবস্থান : 

সুন্দরবন বাংলাদেশের দক্ষিণে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা জুড়ে বিস্তৃত। তবে এর বেশিরভাগই সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত

আয়তন : 

সুন্দরবনের মোট আয়তন দশ হাজার বর্গকিলোমিটার। সুন্দরবনের ৬২ শতাংশ রয়েছে বাংলাদেশে যার আয়তন ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার।

উদ্ভিদ : 

সুন্দরবনে রয়েছে হাজারো রকমের গাছপালা। সুন্দরী, গেওয়া, গরান, কেওড়া প্রভৃতি বৃক্ষ এখানে প্রচুর জন্মে। এছাড়া রয়েছে গোলপাতা। এ বনের প্রধান বৃক্ষ সুন্দরী গাছের নাম অনুসারে এ বনের নাম রাখা হয়েছে সুন্দরবন।

আরও পড়ুন :-  জাতীয় পতাকা - রচনা [ class 1, 2, 3, 4, 5 ]

প্রাণী : 

সুন্দরবনে অনেক জীবজন্তু রয়েছে। যেমন— রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, শেয়াল, ভালুক ইত্যাদি । সুন্দরবনের জলে রয়েছে হাঙর, কুমির, কামট ইত্যাদি ।

মৌয়ালি : 

সুন্দরবনের আশেপাশে কিছু লোকজন রয়েছে যারা সুন্দরবনে কাঠ কাটতে ও মধু সংগ্রহ করতে যায় । সুন্দরবনে যারা মধু সংগ্রহ করতে যায় তাদের বলা হয় মৌয়ালি। এরা মৌচাকের ভেতর থেকে মধু সংগ্রহ করে তা বাজারে বিক্রি করে আয় উপার্জন করে।

বাওয়ালি : 

সুন্দরবনে যারা কাঠ কাটে এবং সেই কাঠ বাজারে বিক্রি করে তাদেরকে বলা হয় বাওয়ালি। এরা বন থেকে কাঠ কেটে তা বাজারে বিক্রি করে জীবনধারণ করে।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব : 

সুন্দরবনের সুন্দরী বড় বড় খুঁটি তৈরিতে, গেওয়া নিউজপ্রিন্ট ও দিয়াশলাই কারখানায়, ধুন্দল পেন্সিল তৈরিতে, গরান বৃক্ষের বাকল চামড়া পাকা করার কাজে এবং গোলপাতা ঘরের ছাউনিতে ব্যবহৃত হয় । এ বন থেকে প্রচুর মধু ও মোম সংগ্রহ করা হয়৷

উপসংহার : 

সুন্দরবন বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষায় আমাদের সকলকে এগিয়ে আসা উচিত।

আরও পড়ুন :-  বাংলাদেশের কৃষক - রচনা [ class 3, 4, 5 ]

সুন্দরবন রচনা - ২

ভূমিকা : 

সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা লবণাক্ত জলাভূমির বন। বাংলাদেশের খুলনা ও বাগেরহাট জেলার সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে এর অবস্থান। এ বনে সুন্দরী গাছ বেশি জন্মায় বলে এর নাম সুন্দরবন। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বিচিত্র বন্যপ্রাণীর সমাবেশ এই সুন্দরবন ।

অবস্থান ও আয়তনঃ 

সুন্দরবনের আয়তন প্রায় দশ হাজার বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে ৬০১৭ বর্গকিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট অঞ্চলে এবং বাকি অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। পরস্পর সংযুক্ত প্রায় ৪০০টি নদীনালা এবং ছোটবড় প্রায় ২০০টি দ্বীপ নিয়ে সুন্দরবন গড়ে উঠেছে।

সুন্দরবনের গাছপালা ও প্রাণী: 

এ বনে রয়েছে বিচিত্র গাছপালা আর পশুপাখির সমাবেশ। এ বনে আছে সুন্দরী, গোলপাতা, গেওয়া, গরান, কেওড়া, পশুর, বাইন ইত্যাদি বৃক্ষ। বিশ্ববিখ্যাত বাঘ রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাস করে এই বনে। সুন্দরবনের অন্যান্য পশুর মধ্যে রয়েছে চিত্রল হরিণ, বানর, বন্য শূকর, শজারু ইত্যাদি। 

আরও পড়ুন :-  বাংলাদেশের পাখি - রচনা [ ক্লাস ৩, ৪, ৫ ]

অনেক প্রজাতির পাখি বাস করে সুন্দরবনে। যেমন— সারস, হাড়গিলা, মাছরাঙা, বন মোরগ, ইগল, শকুন ইত্যাদি। সুন্দরবনের নদীতে বাস করে বিভিন্ন মাছ ও সরীসৃপ প্রাণী। মাছের মধ্যে রয়েছে পোয়া, চিংড়ি, বাঁশপাতা, ছুরি। সরীসৃপ প্রজাতির মধ্যে রয়েছে কচ্ছপ, হাঙর, কুমির, সাপ ইত্যাদি ।

সুন্দরবনের গুরুত্বঃ  

এই বিশাল বনভূমি সামুদ্রিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে। এর অর্থনৈতিক গুরুত্বও অনেক । স্থানীয় বাসিন্দারা সুন্দরবন থেকে গোলপাতা, মধু, মোম, কাঠ, মাছ ইত্যাদি সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণগুলোর অন্যতম এ বন। সরকার এসব খাত থেকে শুল্ক হিসেবে অনেক অর্থ পায় ।

উপসংহার : 

সুন্দরবন শুধু একটি বন নয়, প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্যের অফুরন্ত ভাণ্ডার। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলকে ঝড়ের মতো দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে এ বন। তাই একে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা

Post a Comment

0 Comments