বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা - ১০০, ৩০০ এবং ৫০০ শব্দ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা - ১০০ শব্দ 

সূচনা  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার ইতিহাসে এক স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলাদেশের প্রাণপ্রিয় নেতা।

জন্ম  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের সতেরোই মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান আর মাতার নাম সায়েরা খাতুন। ছোটবেলায় তাঁকে আদর করে খোকা নামে ডাকা হতো।

বাল্যকাল  

কিশোর বঙ্গবন্ধু ছোটবেলা থেকেই ছিলেন জনদরদি। ছোটবেলা থেকেই তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সমান চোখে দেখতেন।

রাজনীতি  

তিনি ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালীন অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তিনি জেলে যান। 

আরও পড়ুন :- মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী - বাংলা রচনা 

সংগ্রামী জীবন  

দেশের সাধারণ মানুষের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য তিনি বহুবার কারাগারে যান। এছাড়া তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলারও শিকার হন ।

মৃত্যু  

১৯৭৫ সালের পনেরোই আগস্ট তিনি সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সৈনিকের হাতে সপরিবারে নিহত হন।

উপসংহার  

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি জাতির মুক্তির প্রতীক।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা - ০০ শব্দ 

সূচনা  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার ইতিহাসে এক মহান ব্যক্তিত্ব। তিনি এদেশের স্বাধীনতার জন্য সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। তিনি আমাদের জাতির পিতা।

জন্ম ও বাল্যকাল  

তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার অন্তর্গত টুঙ্গিপাড়া গ্রামে শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ জন্মগ্রহণ করে। তাঁর বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান; মা সাহেরা বেগম। শেখ মুজিবের ছেলেবেলা কাটে গ্রামের স্নিগ্ধ শ্যামল পরিবেশে। ঐ সময় থেকেই তিনি ছিলেন সাহসী এবং তাঁর দায়িত্ব জ্ঞানের জন্য তিনি সবার স্নেহভাজন ছিলেন।

শিক্ষা জীবন  

শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন সিভিলকোর্টের সেরেস্তাদার। মধ্যবিত্ত পরিবার। পিতার কর্মস্থল মাদারীপুরে শেখ মুজিবুর রহমানের লেখাপড়া শুরু হয়। অতঃপর তাঁকে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হয়। সেখান থেকে তিনি ১৯৪১ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করেন। তারপর উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় যান। তিনি ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে আইএ এবং ১৯৪৭ সালে বিএ পাস করেন। 

আরও পড়ুন :- শহীদ তিতুমীর - বাংলা রচনা 

বিবাহ  

১৯৩৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চাচাতো বোন ফজিলাতুন নেসা রেনুকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিবাহ তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনো প্রকার ওাসীর জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তি তথা স্বাধীনতার জন্য তাঁর কাছে চিরদিন কৃতজ্ঞ থাকবে।

শেখ মুজিব দেশের ক্ষমতা গ্রহণের পর বেশি দিন বেঁচে ছিলেন না। তবু সর্বপ্রথম দেশের পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেন। প্রথম দিকেই ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশ ত্যাগ করে চলে যায়। এবং শতাধিক দেশ বাংলাদেশকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি জানায়। ১৯৭২-এর ডিসেম্বরে দেশে নতুন সংবিধান গৃহীত হয়। 

তিনি ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা করেন; ফলে বিশ্বের দরবারে তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। তাঁর জীবনের সেরা রাজনৈতিক অবদান হলো মুক্তিযুদ্ধ তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ। তাঁর এই অবদানের পুরস্কার হিসেবে বিশ্ব শান্তি পরিষদ তাঁকে সম্মানসূচক ‘জুলিওকুরী' পদক প্রদান করে।

আরও পড়ুন :- রচনা : কাজী নজরুল ইসলাম (৩টি) 

উপসংহার  

বাংলাদেশের নির্যাতিত জনগণের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে শেখ মুজিবুর রহমান দেশবাসীকে যে আপোষহীন সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন তার ফল সুদূরপ্রসারী হয়। তাঁরই আজীবন সংগ্রামের ফসল হিসেবে বাঙালিরা পেয়েছে স্বাধীনতার লাল-সবুজ পতাকা। রচিত হলো এক নতুন ইতিহাস। এই নতুন ইতিহাসের স্রষ্টার নাম যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে কথা বাঙালিরা চিরদিন হৃদয়ের মণিকোঠায় ঠাঁই দেবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা -    ৫০০ শব্দ 

ভূমিকা  

বিশ্বের কোনো কোনো দেশ বা রাষ্ট্রে এমন দু'একজন ক্ষণজন্মা পুরুষের আবির্ভাব ঘটে যাঁদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড সে দেশের মানুষের কাছে সৌভাগ্যের দরজা উন্মোচন করে দেয়। তাঁরা পরাধীন দেশবাসীর জীবনে মুক্তি এনে দেন, দুর্যোগের ঘনঘটা দূর করে তাদের হাতে স্বাধীনতার সূর্য পতাকা উপহার দেন। 

আর এ কারণেই মুক্তিমন্ত্রের দীক্ষাদাতা আপন কর্মকৃতির ফলশ্রুতিতে গৌরবের অবিস্মরণীয় মহিমায় স্থান লাভ করেন। আমাদের দেশের এরূপ একজন অকুতোভয় সংগ্রামী পুরুষের কথা আমাদের চেতনায় মিশে আছে, মিশে আছে আমাদের রক্তকণিকায় যিনি স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

জন্ম  

দেশমাতৃকার বরণ্য সন্তান, সংগ্রামী নেতা ও বাঙালি জাতির স্বাধীনতার উদ্যোগতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান।

স্কুলজীবন ও শিক্ষা  

তিনি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেন। তিনি কলিকাতা ইসলামীয়া কলেজ থেকে ১৯৪৫ সালে বি.এ পাশ করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অধ্যয়ন করেন।

আরও পড়ুন :- জাতীয় দিবস : বাংলা প্রবন্ধ রচনা 

শৈশবকাল  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছোটবেলা থেকেই ছিলেন জনদরদি। গ্রামের সকলের সাথে তাঁর ছিল মধুর সম্পর্ক। গ্রামের কারো দুঃখ-কষ্টে তিনি বসে থাকতে পারেননি। তাই শিশুকালেই অসহায়দের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

রাজনীতি  

শেখ মুজিবুর রহমান স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে তিনি কলিকাতা ইসলামীয়া কলেজে পড়ার সময় প্রখ্যাত দেশ নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বিপ্লবী নেতা সুভাষচন্দ্র বসুর সংস্পর্শে আসেন। তিনি তাদের স্নেহ ও আনুকুল্য লাভ করেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের ওপর শোষণের বিরুদ্ধে তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানান। ১৯৪৮ সালের ২১ই মার্চ তিনি গ্রেফতার হন। 

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি কারাগারে ছিলেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং শ্রমমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৫৮ সালে দেশে সামরিক শাসন জারি হলে আবার তিনি বন্দী হন। ১৯৬৬ সালে তিনি ৬ দফা কর্মসূচী ঘোষণা করেন। এ ৬ দফাই ছিল মূলত বাঙালীর স্বাধীনতার সনদ। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি এবং তাঁর দল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়ী হয়।

অসহযোগ আন্দোলন  

বিপুলভাবে জয়ী হওয়া স্বত্ত্বেও তদানীন্তন পাকিস্তানী শাসকরা বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণা করেন।

স্বাধীনতা ঘোষণা  

২৫শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। দীর্ঘ ন'মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর, ত্রিশ লক্ষ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রু মুক্ত হয়।

আরও পড়ুন :- একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ - রচনা

ঐতিহাসিক ভাষণ  

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) 'এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম' বলে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। তাঁর এ ডাকে লাখ লাখ মানুষ স্বাধীনতার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

দেশে প্রত্যাবর্তন

দেশপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি সকালে দেশে ফিরে আসেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনিই প্রথম প্রধান মন্ত্রী ও পরে রাষ্ট্রপতি হন।

জনপ্রিয়তা হ্রাস ও চক্রান্ত  

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে জিনিসপত্রের অত্যধিক দাম, বিশৃংখলা, স্বজনপ্রীতি ও অনাচারের ফলে সরকার প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান ক্রমে ক্রমে জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলেন। এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে দেশী বিদেশী নানা ষড়যন্ত্র চলছিল। ১৯৭৫ সালে নতুন রাজনৈতিক মতবাদ 'বাকশাল' প্রবর্তন করার কথা ঘোষণা করেন। এ বছরই ১৫ই আগস্ট মধ্যরাতে তিনি কতিপয় সামরিক অফিসারের হাতে নৃশংসভাবে সপরিবারে নিহত হন।

উপসংহার  

বাংলার মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। তিনি চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন কোটি কোটি বাঙালির হৃদয়ে।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad