ঘোড়া রচনা - ২টি (একটা ছোট একটা বড়)

ঘোড়া রচনা - ছোট 

সূচনা  

চতুষ্পদ প্রাণীর মধ্যে গরুর পর ঘোড়াও মানুষের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ঘোড়া দেখতে সুন্দর, কাজে পটু এবং প্রভুভক্ত।

আকৃতি  

ঘোড়ার সারা গা মসৃণ লোম দ্বারা আবৃত। এদের কান খাড়া, মুখ লম্বা। ঘোড়ার কপালের উপরে ও ঘাড়ের লোম লম্বা হওয়ায় মুখের আকৃতি বেশ সুন্দর দেখায় ।

জাতি বা শ্ৰেণী  

পৃথিবীতে নানা জাতির ঘোড়া দেখতে পাওয়া যায়। আরবের ঘোড়া সবচেয়ে শক্তিশালী, অস্ট্রেলিয়ার ঘোড়া আকারে সবচেয়ে বড়। ঘোড়া সাদা, কালো, ধূসর প্রভৃতি বর্ণের হয়ে থাকে। এরা প্রায় ত্রিশ পঁয়ত্রিশ বছর পর্যন্ত বাঁচে।

প্রকৃতি  

ঘোড়া বনের মধ্যে দলবদ্ধ হয়ে বাস করে। বন্য ঘোড়া অশান্ত প্রকৃতির, তবে এরা সহজেই পোষ মানে। ঘোড়া অত্যন্ত প্রভুভক্ত, দ্রুতগামী ও কষ্টসহিষ্ণু। ঘোড়া দাঁড়িয়ে নিদ্রা যায়।

আরও পড়ুন :- গরু - রচনা [  Class 1, 2, 3, 4, 5, 6 ]

খাদ্য  

ঘোড়া ঘাস, লতাপাতা, ছোলা, মটর, বুট, খড়, গম ইত্যাদি খায় ।

উপকারিতা  

প্রাচীনকালে রাজা মহারাজাদের যুদ্ধের অন্যতম অবলম্বন ছিল ঘোড়া। শেরশাহ ডাক বহনের কাজে ঘোড়া ব্যবহার করেন। ঘোড়া গাড়ি টানে।

উপসংহার

আমাদের দেশে এখন ঘোড়া নেই বললেই চলে। আজকাল ঘোড়ার কদরও তেমন নেই। তবে মানুষের উপকারী প্রাণী হিসেবে ঘোড়ার যত্ন নেয়া উচিত।

ঘোড়া রচনা - বড় 

সূচনা  

যতগুলো প্রাণী মানুষের পোষমানে, তার মধ্যে ঘোড়া অন্যতম। এটি একটি গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু। যান্ত্রিক সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এদের কদর কমে গেছে। প্রাচীনকালে ঘোড়া ছিল বড়লোকের চলাচলের বাহন। আর এখন ঘোড়া মালবাহী পশু। তাও সর্বত্র সচরাচর দেখা যায় না।

আকৃতি  

ঘোড়ার মুখ লম্বা, কিন্তু মাথায় গরুর মতো শিং নেই। এর পায়ের ক্ষুরাবিভক্ত। এর দীর্ঘ ঘাড় এবং ঘাড়ে লম্বা লম্বা পশম আছে। এগুলোকে কেশর বলে। এর দুটি চক্ষু ও দুটি কান আছে। ঘোড়া সবসময় কান খাড়া করে রাখে। এর নাসারন্ধ্র দীর্ঘ। এর লেজের অগ্রভাগে এক গুচ্ছ দীর্ঘ চুল আছে; অনেকটা ঝাঁটার মতো দেখায়।

এর সারা দেহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মসৃণ লোমে আবৃত। শরীর সুন্দর সুগঠিত। এর পা সরু ও শক্তিশালী এবং দৌড়ের জন্য বিশেষ উপযোগী। ঘোড়া তিন থেকে চার হাত উঁচু এবং পাঁচ থেকে ছয় হাত পর্যন্ত দীর্ঘ হয়ে থাকে। ঘোড়া প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বছর বাঁচে। ঘোড়া অত্যন্ত কষ্ট সহিষ্ণু প্রাণী ৷

আরও পড়ুন :- বিড়াল অথবা আমার পোষা প্রাণী বিড়াল : রচনা ( ৩টি )

প্রকৃতি  

ঘোড়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমায়। ঘোটকী একবারে একটি বাচ্চা প্রসব করে। এটি গরুর মতো অতটা শান্ত নয়। ঘোড়া সাধারণত কারো ক্ষতি করে না তবে কেউ বিরক্ত করলে তাকে কামড় দেয় বা পেছনের পা দিয়ে লাথি মারে। ঘোড়া প্রভুকে খুবই ভালোবাসে এবং প্রয়োজনে প্রভুর জন্য প্রাণত্যাগ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। একে প্রশিক্ষণ দিলে নানা প্রকার ক্রীড়াকৌশল দেখাতে পারে। সেজন্য লোকেরা সার্কাস পার্টির ঘোড়াকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

প্রাপ্তিস্থান পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই ঘোড়া দেখতে পাওয়া যায়। আরব ও অস্ট্রেলিয়ার ঘোড়া বিশেষত আরবের তাজী ঘোড়া বিশ্ববিখ্যাত। বাংলাদেশের ঘোড়াও বেশ খ্যাত। সার্কাসসহ বিভিন্ন কাজে আমাদের দেশে ঘোড়া ব্যবহার হয়ে থাকে।

খাদ্য  

ঘোড়া তৃণভোজী প্রাণী। এরা ঘাস, ছোলা, খড়, যব ও নানাবিধ শস্য দানা খেয়ে বেঁচে থাকে।

উপকারিতা  

ঘোড়া আমাদের অনেক উপকার করে। সুদূর অতীতে আমাদের দেশে ঘোড়ার সাহায্যে একস্থান হতে অন্যস্থানে ডাক পাঠানো হতো। রাষ্ট্রের বিভিন্ন কাজেও ঘোড়া ব্যবহার করা হতো। তা ছাড়া যখন ট্রেন ও মোটর গাড়ি ছিল না, তখন দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হলে ঘোড়াই ছিল মানুষের একমাত্র ও শ্রেষ্ঠ বাহন। 

আরও পড়ুন :- রচনা : আমার প্রিয় ফল - আম 

প্রাচীনকালে অশ্বারোহী সৈন্য ছাড়া যুদ্ধ জয় সম্ভব হতো না। তখনকার দিনে বড় বড় যোদ্ধারা অশ্বপৃষ্ঠে আরোহণ করেই যুদ্ধ করতেন। বর্তমানকালেও বড় বড় শহরে অশ্বারোহী পুলিশ বাহিনী আছে। পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্রীয় কাজে, যেমন গার্ড অব অনার ইত্যাদিতে সুসজ্জিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়া ব্যবহার হয়। অনেক প্যারেড গ্রাউন্ডে ঘোড়ায় বসে খেলা দেখানো হয় এবং স্যালুট প্রভৃতি প্রদান করা হয়। 

ঘোড়দৌড় ও পোলো খেলায় ঘোড়ার প্রয়োজন হয়। আমাদের দেশসহ পৃথিবীর বহু দেশে ঘোড়া গাড়ি টানে। মোটর গাড়ির প্রচলন হওয়ার পূর্বে ঘোড়ার গাড়ি বহুল প্রচলিত ছিল। পাশ্চাত্যের অনেক দেশে এখনো ঘোড়া দ্বারা কৃষিকাজ করা হয়। এর ক্ষুর হতে শিরিসের আঠা এবং হাড় হতে ছুরির বাট তৈরি হয়।

উপসংহার  

ঘোড়ার প্রভুভক্তি সম্বন্ধে অনেক বাস্তব গল্প প্রচলিত আছে। এরা নিজের জীবন দিয়েও প্রভুর জীবন বাঁচায় ৷ বিজ্ঞানের অবদান ঘোড়ার প্রয়োজনকে বিপুল পরিমাণে হ্রাস করে দিলেও এর প্রতি আমাদের উপযুক্ত যত্ন নেয়া উচিত।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad