আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস - রচনা : Class 3, 4, 5

ভূমিকা  

বাংলা ভাষার উৎপত্তি কয়েক হাজার বছর আগে। কিন্তু বাঙালির এ মাতৃভাষা বিভিন্ন সময়ে বিদেশি শাসকগোষ্ঠী তাদের হীন স্বার্থে দমিয়ে রাখতে তৎপরতা চালিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রক্তের বিনিময়ে বাঙালিরা তাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হয়েছে। তবে এ অবদানের সিংহভাগই ভাষা শহিদ ও ভাষা সৈনিকদের।

মাতৃভাষার গুরুত্ব  

আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে এ ভাষার ব্যবহার চলে আসছে। এ ভাষায় আমরা সহজেই মনের ভাব প্রকাশ করি । ফলে মাতৃভাষা আমাদের কাছে অত্যন্ত মর্যাদপূর্ণ ভাষা । 

ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট  

১৯৪৭ এর দেশবিভাগের পরপরই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ববাংলার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ঢাকার এক জনসভায় উর্দুকেই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা বলে ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে ৪ ফেব্রুয়ারি সারা "প্রদেশে আন্দোলনের প্রস্তুতি দিবস এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সমগ্র প্রদেশে ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়। 

সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সব রকম সভা, মিছিল, শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রামী ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে মিছিল বের করেন। সাধারণ জনগণও এই মিছিলে শরিক হন। ছাত্র জনতার এ মিছিলে বাধা দেবার জন্যে পুলিশ মেডিকেল কলেজের সামনে বেপরোয়া গুলি চালাতে থাকে। 

আরও পড়ুন :বিজয় দিবস - রচনা ২০০ শব্দ [ class 3, 4, 5 ]

এ গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার এবং বাংলা মায়ের আরও অনেক সন্তান শহিদ হন। শহিদের পবিত্র রক্ত বৃথা যায়নি। অবশেষে রক্তের বিনিময়ে উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ভাষাও রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি লাভ করে ।

শহিদ মিনার  

শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা রাতারাতি শহিদ মিনার নির্মাণ করেন। ২৬ তারিখ অপরাহ্নে পুলিশ শহিদ মিনারটি ধ্বংস করে দেয়। পরবর্তীতে রাতে আবার শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয় ।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  

বাংলা ভাষা আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। একুশে ফেব্রুয়ারি আজ সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার মানুষের নিজ ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৩৯তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয় ।

উপসংহার  

প্রতিবছর আমরা যথাযোগ্য মর্যাদায় একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করি। সারাবিশ্ব মাতৃভাষার প্রতি এই অসামান্য ত্যাগ ও ভালোবাসা দেখে সত্যিই বিস্মিত হয়।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad