পরিবেশ দূষণ – রচনা : Class 3, 4, 5

পরিবেশ দূষণ রচনা – ১

ভূমিকা  

আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তাই নিয়ে আমাদের পরিবেশ। বিভিন্ন কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ফলে মানব জীবন লক আজ হুমকির সম্মুখীন।

পরিবেশ দূষণ কী  

আমাদের চারপাশের পরিবেশ যখন নানা রকম ময়লা আবর্জনা এবং মানুষের কর্মকাণ্ডে স্বাভাবিকতা হারাচ্ছে তখন তাই পরিবেশ দূষণ ।

পরিবেশ দূষণের কারণ  

নানাবিধ কারণে প্রতিনিয়ত আমাদের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। নিচে পরিবেশ দূষণের কারণসমূহ নিরূপণ করা হলো-

(i) জনসংখ্যা বৃদ্ধি : মানুষ বাড়ছে কিন্তু জায়গা বাড়ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

(ii) নির্বিচারে বনভূমি উজাড় : মানুষ বাসস্থান তৈরির জন্য বনভূমি ধ্বংস করছে। এতে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, ঝড়, ঝঞ্ঝা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, অকাল বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

(iii) রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার : কৃত্রিম উপায়ে ফসল বৃদ্ধির জন্য মানুষ নির্বিচারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে; কিন্তু এ সার ও কীটনাশক প্রকৃতির জন্য, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। 

(iv) যুদ্ধবিগ্রহ : বর্তমান বিশ্বে ক্ষমতালিপ্সু দেশগুলো পৃথিবীর ওপর একক আধিপত্য বিস্তারের জন্য পারমাণবিক, রাসায়নিক ও জীবাণু বোমা ব্যবহার করছে, যা পৃথিবীতে তেজস্ক্রিয়তার সৃষ্টি করছে।

আরও পড়ুন :- শব্দ দূষণ ও তার প্রতিকার – বাংলা রচনা

অন্যান্য কারণ  

এসব কারণ ছাড়াও শিল্পসহ কারখানার বর্জ্য, নানা রকম রাসায়নিক দ্রব্য নদী ও সাগরে পড়ে পানি দূষিত হচ্ছে। কলকারখানার ধোঁয়ায় বাতাস দূষিত হচ্ছে, যা মানবসভ্যতা ও পরিবেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement Advertisement

পরিবেশ দূষণ রোধের উপায়  

পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্য রাখতে চাইলে অবশ্যই ক্রমবর্ধমান পরিবেশ দূষণের প্রতিকার করতে হবে। অবাধ শিল্পায়ন বন্ধ করতে হবে। নির্বিচারে সার, কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করতে হবে। রাসায়নিক ও তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। বনভূমি নিধন না করে বনায়ন করতে হবে। এসব কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশকে দূষণ থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

উপসংহার  

পরিবেশ দূষণ গোটা মানবকুলের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। এ থেকে মানুষকে, বিশ্বকে বাঁচাতে হলে মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে সকলের বোধোদয় হোক এটাই আমাদের কাম্য ।

পরিবেশ দূষণ রচনা – ২

ভূমিকা 

সুস্থ জীবনের জন্য সুন্দর পরিবেশ অপরিহার্য। নির্মল বাতাস, বিশুদ্ধ পানি ও পর্যাপ্ত খাদ্য মানুষকে সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচতে সহায়তা করে। কিন্তু মানুষের হাতেই দূষিত হচ্ছে পানি ও বায়ুসহ পরিবেশের বিভিন্ন জরুরি উপাদান। আজ পরিবেশ দূষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন সারা বিশ্বের পরিবেশ বিজ্ঞানীরা 1

পরিবেশদূষণের কারণ 

পরিবেশদূষণের কারণ অনেক। একটি বড় কারণ পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধি। এর ফলে সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ছে । লাখো শিল্প-কারখানা ও গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া এবং কঠিন-তরল বর্জ্য বাতাস ও পানিকে দূষিত করছে। মানুষ তার গৃহনির্মাণ, শিল্প-কারখানার কাঁচামাল ও কাঠের প্রয়োজনে প্রতিদিন উজাড় করছে বনভূমি। 

এতে পরিবেশে বাড়ছে কার্বন ডাই-অক্সাইড। ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাপমাত্রা বাড়ায় মেরুর বরফ গলছে। এতে বিশ্বজুড়ে নিচু উপকূলীয় এলাকা তলিয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন :- বাংলাদেশের ষড়ঋতু – রচনা : ক্লাস 3, 4, 5

দূষণের প্রভাব 

পরিবেশদূষণের প্রতিক্রিয়া মারাত্মক। বায়ু ও পানিদূষণের ফলে মানুষের শ্বাসতন্ত্র ও অন্ত্রের রোগ বাড়ছে। দূষণের কারণে ক্যানসার ও হৃদরোগের মতো কঠিন রোগও হচ্ছে। বৃদ্ধ ও শিশুদের ওপর দূষণের প্রভাব বেশি মারাত্মক।

পরিবেশদূষণ রোধে পদক্ষেপ 

এই অবস্থার প্রতিকারের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে সরকারের উদ্যোগের অংশই বেশি। যেমন, ব্যাপকহারে বনায়ন করতে হবে। পেট্রল ও ডিজেলের মতো ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে বায়ু, সৌর ও জলবিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো দরকার। শিল্পের দূষণ কমাতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভালো করতে হবে। 

কৃষিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈবসার ও প্রাকৃতিক বালাইনাশকের ব্যবহার বাড়ানো উচিত। এ ছাড়া দূষণের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রচার চালিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। সর্বোপরি জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমাতে ও শিক্ষার হার বাড়াতে হবে।

উপসংহার 

পরিবেশ সংরক্ষণের দায়িত্ব কেবল সরকার বা কোনো সংস্থা বা ব্যক্তিবিশেষের নয়, এ দায়িত্ব প্রতিটি নাগরিকের। তাই পরিবেশ দূষণের বিপদ সম্পর্কে প্রতিটি মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। কারণ, এ পৃথিবীকে আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব ।

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment

Advertisement Advertisement
error: Content is protected !!