ভাবসম্প্রসারন : মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন, বিলাস ধন নহে (২টি)

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুগণ, তোমাদের শেখার সুবিধার্থে "মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন বিলাস ধন নহে " ভাবসম্প্রসারণ টি  ২টি বই থেকে সংগ্রহ করে দেয়া হলো। যেটা সবচেয়ে সহজ মনে হয় সেটাই শিখে নেবে। 

মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন বিলাস ধন নহে ভাবসম্প্রসারন - ১ 

মূলভাব : মানবসমাজের কল্যাণে ব্যয়িত অর্থই প্রকৃত ধন। আত্মসুখ ও বিলাসে ব্যয়িত অর্থ প্রকৃত অর্থ নয় । 

সম্প্রসারিত ভাব : ধনসম্পদ মানুষের কাছে লোভনীয় কাঙ্ক্ষিত বস্তু। কঠোর শ্রম, ঘাম ও ক্লেশের মাধ্যমে ধনসম্পদ অর্জিত হয়। তাই স্বাভাবিকভাবে অর্জিত ধনসম্পদের প্রতি মানুষের মায়া থাকে। মানুষ কষ্টার্জিত, ধনসম্পদ অন্যকে দিতে চায় না। কিন্তু মানুষের এ প্রবণতা কোনোভাবে শুভ লক্ষণ বলে বিবেচিত হতে পারে না। 

কারণ, যে ধন আত্মসুখে নির্দিষ্ট, যা দ্বারা আর্তপীড়িত, নির্যাতিত, নিপতিত, অভাবগ্রস্ত, সর্বোপরি বৃহত্তর মানবতার কল্যাণে আসে না, সে সম্পদ মূল্যহীন, তা বিশেষ কোনো তাৎপর্য বহন করে না। যে সম্পদ মানবতার কল্যাণে নিবেদিত, সে সম্পদই প্রকৃত সম্পদ। আত্মসুখ, আত্মবিলাসের জন্য ধন উপার্জন বা ধনসম্পদ ব্যয় করা অনুচিত। আত্মকল্যাণে অপচয় ভিন্ন কিছু নয়। মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য মহৎ; মানুষ নিজ আরাম-আয়েশের জন্য - পৃথিবীতে আসেনি। 

রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, “আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাহি কেহ অবনী পরে। সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।” তাই মানুষের ধন নিজের আরাম-আয়েশের জন্য ব্যয় না করে আর্তমানবতার সেবায় ব্যয় করা শ্রেয়। এতে এক অনাবিল আনন্দ লাভ করা যায়, যা নিজের জন্য হাজার অর্থ সম্পদ ব্যয় করে লাভ করা যায় না। আত্মকেন্দ্রিক ধন ব্যয়, সম্পদের বিনষ্টের অন্য নাম। অন্যদিকে দেশ, জাতি, বিশ্ব ও নিরন্ন মানুষের জন্য অর্থ ব্যয় প্রকৃতই অর্থের সদ্ব্যবহার।

মন্তব্য : ধনসম্পদ বিলাসিতায় ব্যবহার না করে তা জনকল্যাণে ব্যবহার করা উচিত। 

আরও পড়ুন :- ভাবসম্প্রসারণ : দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য (২টি)

মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন বিলাস ধন নহে ভাবসম্প্রসারন - ২ 

মূলভাব : ধনসম্পত্তি বিলাসিতার জন্য নয়, নিজের ও অপরের মঙ্গলেই এর প্রকৃত সার্থকতা। 

সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের অর্জিত অর্থবিত্ত কিংবা অধীত শিক্ষা থেকে যে বস্তুগত ও মনোবৃত্তিক প্রতিষ্ঠাতা দুইভাবে মানুষ কাজে লাগাতে পারে। জনকল্যাণ ও জনস্বার্থবিরোধী- এই দুই বিপরীতমুখী কাজে মানুষ তার প্রতিপত্তিকে সাধারণভাবে কাজে লাগায় । মানুষের সর্ববিধ সম্পদের, জ্ঞানের যে অংশটুকু মানুষের কল্যাণ বয়ে আনে তা-ই সত্যিকারের প্রতিপত্তি, সত্যিকারের ধন। ধনসম্পদের সার্থকতা নির্ভর করে এর যথার্থ ব্যবহারের ওপর। 

কিন্তু দেখা যায়, অধিকাংশ ধনী ব্যক্তিই বিলাসিতার স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। তারা শুধু তাদের আরাম-আয়েশ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের পেছনেই অর্থ ব্যয় করে। এ ব্যয়িত অর্থ হয়ত বিশেষ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করে, কিন্তু এর দ্বারা বিন্দুমাত্র মানবকল্যাণ সাধিত হয় না। এতে শুধু অর্থের অপচয় হয় এবং চরম ব্যক্তিস্বার্থ উন্মোচিত হয়। মনে রাখা উচিত, ব্যক্তিবিশেষের ধনসম্পদের ওপর কেবল তার একারই অধিকার থাকে না, সমাজভুক্ত প্রত্যেকটি মানুষেরই অধিকার থাকে। 

মন্তব্য : ধন-সম্পদ অযথা অপচয় না করে বা বিলাসিতায় খরচ না করে তা জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করা উচিত। 

Post a Comment

0 Comments