মাননীয় অধ্যক্ষ মহোদয়, শ্রদ্ধাস্পদ শিক্ষকমণ্ডলী এবং অনুজপ্রতিম শিক্ষার্থী বন্ধুগণ,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ।
বিদায়ের যাত্রালগ্নে আমাদের প্রতি যে শুভেচ্ছাবাণী এ সভায় বারবার উচ্চারিত হলো, আমরা বিশ্বাস করি আমাদের বৃহত্তর জীবনপথে তা এক মূল্যবান পাথেয় হয়ে থাকবে। একদিন আমরা ও অগ্রজজনদের বিদায় অভিনন্দন জ্ঞাপন করেছিলাম, আমরা আজ তা গ্রহণ করছি।
আসা-যাওয়ার বিরামহীন স্রোতেই আমাদের জীবন চলিষ্ণু। আমাদের চলমান জীবনে এ মুহূর্তটি হৃদয়ের আন্তরিক স্পর্শে বড় মূল্যবান। বিদায়ের দিনে আজ শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের কথাই সবচেয়ে বেশি করে মনে হচ্ছে। আমাদের জীবনে তাঁদের অমূল্য স্নেহ ও প্রীতি যে কত গভীরভাবে নির্ঝরিত হয়েছে বারবার তা অনুভব করেছি। আজ পুনর্বার তা উপলব্ধি করে ধন্য হলাম। আমাদের মধ্যে যে শিক্ষা ও স্বপ্নকে তাঁরা রোপণ করে দিয়েছেন আমরা যেন তাকে মহীরুহে পরিণত করতে পারি। সেই আশীর্বাদ আজ আমাদের কাম্য । আমাদের অনুজ ছাত্র-ছাত্রীবন্ধুদের অকৃত্রিম ভালোবাসার কথাও আমাদের আজ আবেগরুদ্ধ করে তুলেছে।
(ads2)
আরো জানুন : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষণ/বক্তৃতা- ২০২৫
আমরা সবেমাত্র বৃহত্তর জীবনে প্রবেশের তোরণ পার করতে যাচ্ছি। পুরনো বন্ধনকে বিচ্ছিন্ন করেই তাকে চলে যেতে হয়। সব বিচ্ছেদই বেদনার। বিদায়ের এ বেদনাময় মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আজ কবির সেই পরিচিতি ‘ছাত্রধারা' কবিতাটির কথা মনে পড়ছে। কিন্তু সে চিরন্তন ধারার মধ্যে অগ্রবর্তীদের কিছু অধিকতর দায়িত্ব থেকে যায়। আমাদের জীবনকে বিকশিত করে আমরা যেন মাদরাসার গৌরবকে বাড়িয়ে তুলতে পারি, অনুজ ছাত্রবন্ধুদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারি।
স্মৃতি আজ বেদনার মতো বাজছে। কৃত বিচ্ছিন্ন হাস্যোজ্জ্বল মুহূর্তের কথা মনের ভেতর বিদ্যুৎ চমকের মতো উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে। এ মাদরাসা সতীর্থদের প্রীতির নিবিড় বন্ধনে, তারুণ্যের উচ্ছ্বসিত কলহাস্যে, শিক্ষকদের সস্নেহ শাসনে এবং পঠন-পাঠনের অনুধ্যানে আমাদের জীবন পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। এ মাদরাসার মধুর স্মৃতির আস্বাদন আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে সুখকর করে তুলবে, এ বিশ্বাস নিয়েই আজ আমরা বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেয ।