সম্মানিত সভাপতি, মাননীয় প্রধান অতিথি, জাতির বিবেক সাংবাদিক ভাইয়েরা ও আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে জানাই আন্তরিক সালাম ও সংগ্রামী অভিনন্দন।
দিন বদলের পালায় বছর ঘুরে এবারও স্বাধীনতা দিবস আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছে। দিন আসে দিন যায়, মাস আসে মাস যায়, বছর আসে সেও চলে যায় অনন্ত সময়ের মধ্যে। কিন্তু জাতির জীবনে একটি দিন অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। তা হলো— বাংলার মানুষের নয় মাসের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও লাখো শহীদের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা। আজ সেই তাৎপর্যময় দিবস, যা কখনো ভুলবার নয়। আজ স্বল্প পরিসরে স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে কিছু কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
প্রিয় ভাইয়েরা, আজ ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। প্রত্যেক জাতির জীবনে বিশেষ কতকগুলো দিন থাকে, যার মর্যাদা ও গুরুত্ব অত্যধিক। জাতির অগ্রগতি ও চেতনার পেছনে যেসব উপাদান কাজ করে, স্বাধীনতা দিবস তেমনি একটি মোক্ষম দিন।
আরো দেখুন : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষণ/বক্তৃতা- ২০২৫
স্বাধীনতা দেশের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। যে জাতি পরাধীন সে জাতির কোনো গৌরব নেই। স্বাধীনতা জাতিকে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন করে তোলে। তাই জাতির জীবনে স্বাধীনতার সীমাহীন গুরুত্ব রয়েছে। যে দিবসটিতে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল সে দিবসকেই স্মরণ করে জাতীয় জীবনে তার প্রেরণা অনুভব করা হয়ে থাকে। আমাদের জাতীয় জীবনেও স্বাধীনতা দিবসের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এর জন্য বহু ত্যাগ আমাদের স্বীকার করতে হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল বলে এই দিনই আমাদের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সে মহান দিনের কথা স্মরণ করেই প্রতিবছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়।
উপস্থিত সুধীমণ্ডলী, আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের সীমাহীন তাৎপর্য অনুসরণ করে থাকি। পরাধীনতা আর শোষণের যাতনা থেকে আমরা এই দিনে মুক্তি পেয়েছিলাম। স্বাধীনতা দিবসে তাই আমাদের মর্যাদা নতুন করে উপলব্ধি করার সময়। নিজেদের স্বাধিকার চেতনার সুযোগ নিয়ে আসে এই তাৎপর্যপূর্ণ দিনটি।
আরো দেখুন : বিদায়ী ছাত্রদের পক্ষ থেকে বিদায়ী ভাষণ বাংলা(মাদ্রাসা/স্কুল)
তাই জাতীয় জীবনের কর্তব্য সম্পর্কেও এই দিনে সচেতন হওয়া যায়। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদা রক্ষা করতে হলে এর জন্য উপযুক্তভাবে আমাদের তৈরি হতে হবে। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করা অত্যন্ত কঠিন। তাই নিজেদের সুশৃঙ্খল জাতি হিসেবে গড়ে ওঠার মাধ্যমে সংগ্রামের সাফল্য নির্ভর করে। সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য স্বাধীনতা দিবস আমাদের কর্তব্য সচেতন করে, স্বাধীনতা দিবস আমাদের গৌরবের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। নতুন করে শপথ নেয়ার সুযোগ আনে এ স্বাধীনতা দিবস।
পরিশেষে অতি দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে, আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও সে স্বাধীনতার মর্ম বুঝতে পারছি না। স্বদেশী সংস্কৃতি বাদ দিয়ে আজ আমরা বিদেশি সংস্কৃতির অনুসারী হয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া স্বাধীনভাবে আমরা কিছুই করতে পারছি না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় যে, প্রশাসনিকভাবে স্বাধীনতা অর্জন করলেও ভূখণ্ড ও বাস্তবতার প্রেক্ষিতে যেন আমরা পরাধীন। আজ ঐতিহাসিক স্বাধীনতা দিবসে আমাদের সে কথা স্মরণ করা দরকার। স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল পাকিস্তানের শোষণ-নিপীড়ন থেকে বাঁচার জন্য। বর্তমানে কি সে শোষণ-নিপীড়ন থেকে আমরা মুক্ত হয়েছি?
স্বাধীনতার মর্মার্থ আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেদিকে খেয়াল রেখে আজকের দিনে আমাদের সচেতন হয়ে স্বাধীনতার তাৎপর্য যাতে জীবন চলার পথে রূপায়ণ করতে পারি সে অনুরোধ করেই আমার বক্তব্য শেষ করছি। ধন্যবাদ।