সমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে ।
সমাপিকা ক্রিয়ার উদাহরণ :
শিশুটি খেলা করে। তারা প্রতিদিন মাদরাসায় যায় । আমি কাল এসেছি। এখানে করে’, ‘যায়, ‘এসেছি’ সমাপিকা ক্রিয়া।
সমাপিকা ক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য :
- যে ক্রিয়া পদ দ্বারা বাক্যে সমাপ্তি ঘটে তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে । যেমন- আমরা খেয়েছি । এখানে ‘খেয়েছি’ সমাপিকা ক্রিয়া ।
- সমাপিকা ক্রিয়া দ্বারা একটি বাক্যের সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ পায় ।
- সমাপিকা ক্রিয়া স্বাধীন। অসমাপিকা ক্রিয়ার ওপর এর কোনো প্রকার নর্ভরশীলতা নেই ।
- সার্থক বাক্য গঠনে সমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার করতে হবে।
- সমাপিকা ক্রিয়া সাধারণত বাক্যের শেষে বসে।
- সমাপিকা ক্রিয়া ব্যবহার করে মনের বিভিন্ন ভাব প্রকাশ করার জন্যে বাক্যের সংখ্যা বাড়াতে হয়। এতে বাক্য তার শ্রুতিমাধুর্য হারায় এবং অযথা দীর্ঘ হয় ।
অসমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় না, আরো কিছু বলার বা শোনার আগ্রহ থাকে, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
অসমাপিকা ক্রিয়ার উদাহরণ :
জাকেরা স্কুলে গিয়ে —- । গালিব ভাত খেয়ে—- ইত্যাদি।
উপরের বাক্য দুটিকে ‘স্কুলে গিয়ে’ বা ‘ভাত খেয়ে’ বললে বাক্য দুটির অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় না। তারপরে আরও কিছু বলবার থাকে। এজন্য এ ধরনের ক্রিয়াকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে ।
আরও শিখুন : ক্রিয়া পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি- উদাহরণ সহ বিস্তারিত
অসমাপিকা ক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য :
- যে ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের সমাপ্তি ঘটে না; বরং আরো কিছু বাকি থেকে যায়, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন- আমরা ভাত খেয়ে…। এখানে ‘খেয়ে’ অসমাপিকা ক্রিয়া ।
- অসমাপিকা ক্রিয়া দ্বারা একটি বাক্যের সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ পায় না ।
- অসমাপিকা ক্রিয়া নির্ভরশীল অর্থাৎ কোন পূর্ণাঙ্গ বাক্য গঠনের সময় অসমাপিকা ক্রিয়ার সঙ্গে সমাপিকা ক্রিয়া ব্যবহারের প্রয়োজন হয় ।
- সার্থক বাক্য গঠনে অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার না হলেও কোন ক্ষতি নেই ।
- অসমাপিকা ক্রিয়া সর্বদা সমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে বসে ।
সমাপিকা ক্রিয়া ও অসমাপিকা ক্রিয়ার পার্থক্য
সমাপিকা ক্রিয়া | অসমাপিকা ক্রিয়া |
---|---|
১। যে ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের পরিসমাপ্তি ঘটে তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। | ১। যে ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের পরিসমাপ্তি ঘটে না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে । |
২। সমাপিকা ক্রিয়া বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করে। | ২। অসমাপিকা ক্রিয়া বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারে না । |
৩। সমাপিকা ক্রিয়া অন্য ক্রিয়ার সাহায্য ছাড়াই বাক্য পূর্ণ করে । | ৩। অসমাপিকা ক্রিয়া অন্যকোন ক্রিয়ার সাহায্য ছাড়া বাক্য পূর্ণ করতে পারে না । |
৪। পুরুষভেদে সমাপিকা ক্রিয়ার রূপভেদ হয় । | ৪। অসমাপিকা ক্রিয়ার কোন রূপভেদ হয় না । |
৫। সমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহারে মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাক্যের সংখ্যা বাড়াতে হয় এবং পুনঃপুনঃ অব্যয়ের ব্যবহার করতে হয় । | ৫। অসমাপিকা ক্রিয়া ব্যবহারের ফলে বাক্য যেমন সংক্ষিপ্ত হয়, তেমনি শ্রুতিমধুরতার গুণে গুণান্বিত হয়ে উঠে । |
৬। সাধারণত অ, ছে, এছ, ল, এছিল, ব ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়ে সমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয় । | ৬। ধাতুর পরে এ, তে, লে ইত্যাদি প্রত্যয় যুক্ত হয়ে অসমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয়। |
৭। সমাপিকা ক্রিয়া বাক্যের শেষে বসে। | ৭। অসমাপিকা ক্রিয়া সমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে বসে। |
উদাহরণ : ক. রুমা বই পড়ে। খ. সে প্রতিদিন স্কুলে যায়। |
উদাহরণ : ক. তুমি আসলে … খ. তোমাকে না দেখলে… |