হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

উভচর-সরীসৃপ-স্তন্যপায়ী-পাখি: সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ

যে সব বিষয় গুলো শিখতে পারবে এখান থেকে, উভচর (Amphibia), সরীসৃপ (Reptilia), স্তন্যপায়ী(Mammalia) ও পাখির (Aves) সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য এবং উদাহরণ। নিম্নে বিস্তারিত আলোকপাত করা হলো –

উভচর প্রাণী কাকে বলে ?

আমাদের পরিবেশে কিছু কিছু মেরুদণ্ডী প্রাণী আছে যারা স্থলে ও পানিতে বাস করতে পারে তাদেরকে উভচর প্রাণী বলে।

যেমন- ব্যাঙ। এই উভচর প্রাণী জীবনের প্রথম দিকে ব্যাঙাচি অবস্থায় কিছুকাল পানিতে কাটায় এবং মাছের মতো ফুলকার সাহায্যে শ্বাসকার্য চালায়। পরিণত বয়সে কোনো প্রজাতি স্থলে ও কোনো প্রজাতি পানিতে বাস করে।

উভচর প্রাণীর বৈশিষ্ট্য :

  • এ শ্রেণীভুক্ত প্রাণীরা জীবনের প্রথম অবস্থায় জলে এবং পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় স্থলে বাস করে।
  • এদের ত্বক সাধারণত সিক্ত হয়।
  • লার্ভা অবস্থায় এরা ফুলকার সাহায্যে এবং পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় ফুসফুসের সাহায্যে শ্বাসক্রিয়া চালায় ।
  • এদের রক্তের ডিম্বাকৃতি, লোহিত রক্ত কণিকায় নিউক্লিয়াস থাকে।
  • এদের হৃৎপিণ্ডে তিনটি প্রকোষ্ঠ, দুটি অলিন্দ এবং একটি নিলয় থাকে।
  • এদের করোটি স্নায়ুর সংখ্যা দশ জোড়া ।
  • দেহের পশ্চাৎভাগে অবসারণী ছিদ্র থাকে ।
  • এদের অগ্রপদ অপেক্ষা পশ্চাৎ পদ লম্বা এবং পেশীবহুল হওয়ায় অগ্রপদে চারটি করে এবং পশ্চাৎপদে পাঁচটি করে মোট ১৮টি নখর বিহীন অঙুলি থাকে ।

আরও জানুন : দ্বিপদ নামকরণ: সংজ্ঞা,পদ্ধতি,নিয়ম,উদাহরণ ও প্রবর্তক

উভচর প্রাণীর উদাহরণ :

কুনোব্যাঙ, সোনা ব্যাঙ, ইকথিওফিস, স্যালমান্ডার, নেকটুরাস প্রভৃতি।

সরীসৃপ প্রাণী কাকে বলে ?

যে সকল মেরুদন্ডী প্রাণী বুকে ভর দিয়ে চলে অথবা পা দিয়ে হাটে তাদেরকে সরীসৃপ প্রাণী বলা হয়।

সরীসৃপ প্রাণীর বৈশিষ্ট্য :

  • এ শ্রেণীভুক্ত প্রাণীদের দেহ আঁইশ যুক্ত শুষ্ক চর্ম দ্বারা আবৃত ।
  • এদের সাধারণত দুই জোড়া পা থাকে, তবে সাপের কোন পা থাকে না ।
  • এদের অগ্রপদ এবং পশ্চাৎপদের অঙ্গুলিগুলো নখর যুক্ত।
  • এদের হৃৎপিণ্ড অসম্পূর্ণ চারটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত। তবে কুমিরের হৃৎপিণ্ডটি চারটি প্রকোষ্ঠযুক্ত।
  • এদের বার জোড়া করোটি স্নায়ু থাকে।
  • এদের শ্বাস অঙ্গ ফুসফুস ।
  • রেপটিলিয়ার ডিমের মধ্যে ভ্রূণের পরিস্ফুটন ঘটে।

সরীসৃপ প্রাণীর উদাহরণ :

গিরগিটি, টিকটিকি, বহুরূপী, কুমির, কচ্ছপ স্ফেনেডিন, কেউটে সাপ, গোসাপ ইত্যাদি ।

আরও জানুন : প্রাণী বৈচিত্র্য কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি-উদাহরণ সহ

স্তন্যপায়ী প্রাণী কাকে বলে ?

যেসব মেরুদন্ডী প্রাণীর দেহ লোমে আবৃত, দৌড়ানোর কাজে পা ব্যবহার করে ,বাচ্চা প্রসব করে এবং বাচ্চা মায়ের দুধ পান করে তাদেরকে স্তন্যপায়ী প্রাণী বলা হয়।

স্তন্যপায়ী প্রাণীর বৈশিষ্ট্য :

  • এ শ্রেণীভুক্ত প্রাণীদের দেহ লোম আবৃত ও ত্বকে ঘর্মগ্রন্থি, সিবেসিয়াস গ্রন্থি ইত্যাদি উপস্থিত।
  • এদের বক্ষে দুগ্ধগ্রন্থি থাকে। সন্তান মাতৃদুগ্ধ পান করে পুষ্ট হয় ।
  • এদের চোয়ালে থেকোডন্ট এবং হের্টেরোডন্ট দণ্ডবিন্যাস পরিলক্ষিত হয়।
  • এদের বহিঃকর্ণে পিনা, মধ্যকর্ণে ম্যলিয়াস, ইনকাস ও স্টোপিস এবং অন্তঃকর্ণে ককলিয়া উপস্থিত ।
  • এদের হৃৎপিণ্ড চার প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট হয়। হৃৎপিণ্ড হতে কেবলমাত্র বাম অ্যাওটিক আর্চ এর সৃষ্টি করে ।
  • এদের পরিণত লোহিত রক্ত কণিকায় নিউক্লিয়াস থাকে না।
  • স্ত্রী দেহের জরায়ুর মধ্যে ভ্রূণের পরিস্ফুটন ঘটে ।
  • এদের মস্তিষ্ক উন্নত ধরনের, করোটিক স্নায়ু ১২ জোড়া কর্পাস ক্যালোসাম থাকে।

স্তন্যপায়ী প্রাণীর উদাহরণ :

মানুষ, কুকুর, বিড়াল, প্লাটিপাস, বাদুড়, ক্যাঙ্গারু, বাঘ, তিমি, ঘোড়া, হরিণ, গিনিপিগ, ডলফিন প্রভৃতি ।

পাখি কাকে বলে ?

যে সকল প্রাণী ডানা মেলে উড়তে পারে, দেহে পালকে ঢাকা থাকে এবং ডিম পাড়ে তাদেরকে পাখি বলা হয়।

পাখি বা Aves শ্রেণীর প্রধান বৈশিষ্ট্য :

  • এ শ্রেণীভুক্ত প্রাণীদের দেহ মাকু আকৃতি পালক দ্বারা আবৃত থাকে ।
  • এদের অগ্রপদ ডানায় রূপান্তরিত হয়।
  • পক্ষীদের মস্তকের অগ্রভাগে চক্ষু থাকে ।
  • এ শ্রেণীভুক্ত প্রাণীদের চোয়াল দণ্ডবিহীন হয় ।
  • এদের চারটি প্রকোষ্ঠ অর্থাৎ দুটি অলিন্দ এবং দুটি নিলয়যুক্ত হৃৎপিণ্ড থাকে ।
  • এদের হৃৎপিণ্ড হতে কেবলমাত্র দক্ষিণ অ্যাওটিক আর্চ এর সৃষ্টি হয়।
  • এরা উষ্ণ রক্ত বিশিষ্ট প্রাণী ।
  • এদের ফুসফুসের সঙ্গে বায়ুথলি যুক্ত থাকে ।
  • এদের মুত্রথলি থাকে না ।
  • এদের ডিমের মধ্যে ভ্রুণের পরিস্ফুটন ঘটে।

পক্ষী শ্রেণী দুটি বিভাগে বিভক্ত । যথা

দৌড় পাখি : উট পাখি, কিউই, এমু, রিয়া, পেঙ্গুইন প্রভৃতি ।

উড়ো পাখি : পায়রা, বাজ, পেঁচা প্রভৃতি ।

শিক্ষাগার

প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে

মাহমুদুল হাসান

শিক্ষাগত যোগ্যতা
গণিতে অনার্স ও মাস্টার্স

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ফাজিল সম্পন্ন

গোপালপুর দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা

বিশেষ দক্ষতা

বাংলা সাহিত্য • গণিত • ইসলামিক শিক্ষা

অভিজ্ঞতা

শিক্ষকতা ও ৫+ বছর কন্টেন্ট রাইটিং

আমাদের লক্ষ্য

শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা। ২০২৩ সাল থেকে লাখো শিক্ষার্থী শিক্ষাগার থেকে উপকৃত হচ্ছে।

Leave a Comment