আভিধানিক অর্থ :
ইরাব (إِعْرَابٌ) শব্দটি ভাবে أَفْعَالٌ এর মাসদার। মদ্দাহ ع – ر – ب জিনসে صَحِيحٌ আভিধানিক অর্থ-
- প্রকাশ করা।
- বর্ণনা করা।
- বিশুদ্ধতার সাথে কথাবার্তা বলা।
- চিহ্ন সংযোগ করা।
- উচ্চারণ করা ইত্যাদি।
পারিভাষিক সংজ্ঞা :
যে সকল চিহ্ন দ্বারা ইসমে মুরাব এর শেষ হরফ এর পরিবর্তন সূচিত হয় তাকে ইরাব (إِعْرَابٌ) বলে।
ইরাব (إِعْرَابٌ) এর প্রকারভেদ
ইরাব প্রধানত দুই প্রকার। যথা –
১। الإِعْرَابُ بِالحَرَكَةِ স্বর চিহ্ন বিশিষ্ট ইরাব। ইহা ৩টি যথা- ১. ضَمَّة – পেশ। ২. فَتْحَة – যবর। ৩. كَسْرَة – যের।
২। الإِعْرَابُ بِالحُرُوفِ বর্ণ বিশিষ্ট ইরাব। ইহাও ৩টি যথা –
- وَاو
- أَلِف
- يَاء
আরও পড়ুন : ইসমে মুরাব(اِسْمُ ٱلْمُعْرَب)কাকে বলে? কত প্রকার ও হকুম
ইসমের ইরাব এর প্রকারভেদ :
ইসমের ইরাব বা পদচিহ্ন নয় প্রকার। নিম্নে নয় প্রকার ই’রাবের বর্ণনা বিবরণসহ আলোচনা করা হল :
প্রথম প্রকার ই’রাব : রফা অবস্থায় পেশ দ্বারা, নসব অবস্থায় যবর দ্বারা এবং জর অবস্থায় যের দ্বারা । এ প্রকার ই’রাব তিন প্রকার ইসমের জন্য নির্দিষ্ট।
১। المفردُ المنصَرِفُ الصَّحِيحُ : যে ইসম একবচন, মুনসারিফ ও শেষাক্ষরে হরফে ইল্লাত বিশিষ্ট হয় না। যথা- زَيْدٌ
২। المفردُ المنصَرِفُ الجَارِي الصَّحِيحُ : যে ইসম একবচন, মুনসারিফ ও শেষাক্ষর এমন হরফে ইল্লাত বিশিষ্ট, যার পূর্ব অক্ষর সাকিন। যথা- دَلْوٌ (বালতি), طِبٌّ(হরিণ)।
৩। الجَمْعُ المُكَّسَّرُ المُنْصَرِفُ : যে ইসম একবচনের রূপ ভেঙ্গে গঠিত বহুবচন ও মুনসারিফ। যথা- رِجَالٌ (পুরুষগন)।
দ্বিতীয় প্রকার ই’রাব : রফা অবস্থায় পেশ দ্বারা, নসব ও জর উভয় অবস্থায় যের দ্বারা। এ প্রকার ই’রাব শুধুমাত্র الجَمْعُ المُؤَنَّثُ السَّالِمُ এর জন্য নির্দিষ্ট । উহা হচ্ছে একবচনের রূপ অক্ষত রেখে গঠিত স্ত্রীলিঙ্গের বহুবচন, যার শেষে أ ت যুক্ত হয়েছে। যথা- مُسْلِمَاتٌ যার একবচন হচ্ছে مُسْلِمَةٌ .
তৃতীয় প্রকার ই’রাব : রফা অবস্থায় পেশ দ্বারা, নসব ও জর উভয় অবস্থায় যবর দ্বারা। এ প্রকার ইরাব গায়রে মুনছরফ বা এমন এক ইসমের জন্য নির্দিষ্ট, যার মধ্যে أَسْبَابُ مَنْعِ الصَّرْفِ হতে দু’ সাবাব বা দু’সাবাবের সমমানের একটি সাবাব বিদ্যমান থাকে । যথা- عُمَرُ- فَاطِمَةُ
আরও পড়ুন : ইসম (اِسْمٌ) অর্থ, সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, আলামত ও উদাহরণ সমূহ
চতুর্থ প্রকার ইরাব : রফা অবস্থায় (و) দ্বারা, নসব অবস্থায় (أ) দ্বারা এবং জর অবস্থায় (ي)দ্বারা। এ প্রকার ইরাব الأَسْمَاءُ السِّتَّةُ المُكَبَّرَةُ অর্থাৎ اب (পিত) اخ(ভাই) حم (দেবর) هن(লজ্জাস্থান) فم(মুখ) ذو (অধিকারী) এর জন্য নিদিষ্ট।
পঞ্চম প্রকার ইরাব : রফা অবস্থায় أَلِف (বর্ণ) দ্বারা এবং নসব ও জর অবস্থায় এমন একটি يَاء (বর্ণ) দ্বারা, যার পূর্ব অক্ষর যবর বিশিষ্ট। এই ইরাব তিন প্রকার ইসমের জন্য নিদিষ্ট।
১. দ্বিবচনের জন্য। যথা – رَجُلَانِ
২. كِلَا ও كِلْتَا যখন জমীরের প্রতি ইজাফত হয়। যথা – كِلَاهُمَا -كِلْتَاهُمَا
৩. اِثْنَانِ ও اِثْنَتَانِ উল্লেখ যে, كِلَا ও اِثْنَانِ পুংলিঙ্গে দ্বিবচন এবং كِلْتَا ও اِثْنَتَانِ স্ত্রীলিঙ্গে দ্বিবচনদের জন্য ব্যবহৃত হয়।
ষষ্ঠ প্রকার ইরাব : রফা অবস্থায় (و) সাকিন দ্বারা, যার পূর্ব অক্ষর পেশ বিশিষ্ট এবং নসব ও জ্বর অবস্থায় (ي) সাকিম দ্বারা, যার পূর্ব অক্ষর যের বিশিষ্ট। যথা-مُسْلِمُونَ – أُولُو – عِشْرُونَ ইত্যাদি।
সপ্তম প্রকার ইরাবা : রফা অবস্থায় উহ্য পেশ দ্বারা, নসব অবস্থায় উহ্য যবর দ্বারা এবং জর অবস্থায় উহ্য যের দ্বারা। এ প্রকার ইরাব নিম্নোক্ত দুই প্রকার ইসমের জন্য নির্দিষ্ট। যথা –
ক. الاسْمُ المُقْصُورُ বা ঐ এসএমএর জন্য নির্দিষ্ট যার শেষে হ্রস্ব আলিফ থাকে। যথা – عِيسَى – مُوسَى
খ. الجَمْعُ المُذَكَّرُ السَّالِمُ ব্যতীত অন্য ইসম যখন يَاءُ المُتَكَلِّمِ এর দিকে ইযাফতযুক্ত হয়। যথা – قَلَمِي – كِتَابِي – غُلاَمِي ইত্যাদি।
অষ্টম প্রকার ইরাব : রফা অবস্থায় উহ্য পেশ দ্বারা, নসব অবস্থায় প্রকাশ্য যবর দ্বারা এবং জের অবস্থায় উহ্য যের দ্বারা। এ প্রকার ইরাব الِاسْمُ المَنْقُوصُ তথা ঐ ইসমের জন্য নির্দিষ্ট, যার শেষ অক্ষরে ইয়া সাকিন এবং পূর্ব অক্ষর যের বিশিষ্ট হয়। যথা – سَاقِي – قَاضِي
নবম প্রকার ইরাব : রফা অবস্থায় উহ্য (و) এবং নসব ও জর অবস্থায় প্রকাশ্য (ي) দ্বারা। এ প্রকার ইরাব جَمْعُ المُذَكَّرِ السَّالِمُ এর জন্য নির্দিষ্ট, যখন উহা يَاءُ المُتَكَلِّمِ এর দিকে ইযাফত হবে। যথা – مُسْلِمِيَّ – مُطِيعِيَّ