চাকরির আবেদন পত্র : এ ধরনের পত্রে চাকরির প্রার্থনা করে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। চাকরির আবেদনপত্রে বিজ্ঞাপনের প্রসঙ্গ উল্লেখ থাকে বলে বিজ্ঞাপন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে হয়। বাহুল্য অবশ্যই বর্জনীয়। এতেও কোনো প্রকার আবেগ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা যাবে না। আবেদনপত্র লেখার সময় নিম্নলিখিত দিকগুলোর প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হতে হবে।
সংজ্ঞা : যে আবেদনপত্র কোনো ব্যবসায়িক বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কোনো পদে নিয়োগ প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে লেখা হয় তাকে চাকরির আবেদনপত্র বলা হয় ।
চাকরির আবেদন পত্র লেখার নিয়ম
১। তারিখ : আবেদনপত্র বা দরখাস্তের প্রথমে বামদিকে তারিখ উল্লেখ করতে হয় ।
২। প্রারম্ভিক শব্দ : তারিখ লিখার পর বরাবর, মাননীয় বা সম্মানিত শব্দটি লিখতে হবে.
৩। প্রাপকের নাম-ঠিকানা : প্রাপকের অংশে নিয়োগকর্তার নাম, পদ বা নিয়োগকারী সংস্থার নামের বানান সঠিক এবং ঠিকানা নির্ভুল হতে হবে। অনেক সময় ঝামেলা এড়াতে বা গোপনীয়তা রক্ষা করতে পোস্টবক্স কিংবা কোনো পত্রিকার মাধ্যমে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। যেমন : বিজ্ঞাপন দাতা, পোস্ট বক্স নং ০৭৫ প্রযত্নে দৈনিক প্রথম আলো, ঢাকা।
৪। বিষয় : এ অংশে কাঙ্ক্ষিত বিষয় বা পদের কথা স্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে। আবেদনের মূল বিষয়টি যেন কর্তৃপক্ষ সহজে অনুধাবন করতে পারে সে জন্য সরল ভাষায় তার উল্লেখ প্রয়োজন ।
৫। সম্বোধন : আনুষ্ঠানিক সম্বোধন হবে জনাব, মহোদয়, মহাত্মন ইত্যাদি।
আরও জানুন : আবেদন পত্র সংজ্ঞা,আবেদন পত্র বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম ও নমুনা
৬। আবেদনের সূত্র : সাধারণত পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চাকরির নিয়োগের কথা জানা যায়। তাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখসহ সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সূত্র উল্লেখ করে অথবা বিশ্বস্ত সূত্রের কথা জানিয়ে আবেদনপত্রের বক্তব্য শুরু করতে হয়।
৭। আবশ্যিক তথ্য : নাম, পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা, বৈবাহিক অবস্থা, ধর্ম, জাতীয়তা, জন্ম তারিখ, যোগাযোগের উপায়, কোনো উচ্চতর ডিগ্রি, প্রশিক্ষণ কোর্স বা সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তাও আবেদনপত্রে উল্লেখ করা প্রয়োজন।
৮। সংযুক্তি : দরখাস্তের শেষে আবেদনে বর্ণিত তথ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে যা কিছু সংযুক্ত করা হয়, যেমন : বিভিন্ন পরীক্ষা পাসের সনদ, প্রাপ্ত নম্বরপত্র, প্রশংসাপত্র, নাগরিকত্বের সনদ, অভিজ্ঞতার সনদ, সত্যায়িত করা ছবি ইত্যাদি। কী কী প্রামাণ্য কাগজ দেওয়া হলো, তা ক্রমানুসারে উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয়।
৯। মার্জিন : আবেদনপত্রে প্রয়োজনীয় মার্জিন থাকতে হয়। পৃষ্ঠার উপরে এবং বামে প্রয়োজনীয় মার্জিন রেখে দরখাস্ত লিখতে হয়।
চাকরির আবেদন পত্র নমুনা
তারিখ : ০৫/০১/২০২…ইং
বরাবর
ব্যবস্থাপনা পরিচালক
জনতা ব্যাংক
কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দিলকুশা, ঢাকা ।
বিষয় : কম্পিউটার প্রোগ্রামার পদে নিয়োগের জন্য আবেদন ।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, গত …… তারিখের দৈনিক নয়াদিগন্ত’ পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারলাম আপনার অধীনে ‘কম্পিউটার প্রোগ্রামার’ পদে কিছুসংখ্যক লোক নিয়োগ করা হবে। উক্ত পদের জন্য একজন প্রার্থী হিসেবে নিচে আমার পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সংবলিত তথ্যাদি আপনার সদয় অবগতির জন্য উপস্থাপন করলাম :
১. নাম | : মোঃ শাহ জালাল |
২. মাতার নাম | : ইসমত আরা বেগম |
৩. পিতার নাম | : মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম |
৪. বর্তমান ঠিকানা | : ৪১/৩ র্যাঙ্কিন স্ট্রিট, ওয়ারি, ঢাকা। |
৫. স্থায়ী ঠিকানা | : গ্রাম : দেওনা, ডাকঘর : উত্তর খামের, উপজেলা : কাপাসিয়া । |
৬. জেলা | : গাজীপুর |
৭. জন্ম তারিখ | : ৩ মার্চ, ১৯৮৪ |
৮. বর্তমান বয়স | : ২৯ বছর (প্রায়) |
৯. ধর্ম | : ইসলাম |
১০. বৈবাহিক অবস্থা | : বিবাহিত |
১১. শিক্ষাগত যোগ্যতা | : |
পরীক্ষার নাম | শাখা | পাসের বছর | প্রাপ্ত গ্রেড/শ্রেণি | বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয় |
---|---|---|---|---|
এসএসসি | বিজ্ঞান | ২০০২ | ‘এ’ গ্রেড | ঢাকা |
এইচএসসি | বিজ্ঞান | ২০০৪ | ‘এ’ গ্রেড | ঢাকা |
বি এস-সি (অনার্স) | বিজ্ঞান | ২০০৮ | প্রথম | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
এম এস-সি (কম্পিউটার বিজ্ঞান) | বিজ্ঞান | ২০০৯ | প্রথম | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
১২. অভিজ্ঞতা | : একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় তিন বছর কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে কর্মরত ছিলাম । |
অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন, আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার বিষয় বিবেচনা করে উক্ত পদে নিয়োগ দিয়ে আমার আন্তরিকতা ও দক্ষতা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নতি বৃদ্ধিতে সচেষ্ট থাকব।
বিনীত নিবেদক
মোঃ শাহ জালাল
সংযুক্তি :
১. সকল পরীক্ষার সত্যায়িত সনদপত্রের অনুলিপি ।
২. প্রথম শ্রেণির গেজেটেড অফিসার প্রদত্ত চারিত্রিক সনদপত্র ।
৩. অভিজ্ঞতার সনদপত্র ।
৪. সদ্য তোলা ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।