মস ও ফার্ন : মস ব্রায়োফাইটার অন্তর্গত এক প্রকার অপুষ্পক উদ্ভিদ । এরা থ্যালোফাইটা দলের উদ্ভিদের চেয়ে কিছুটা উন্নত। মস সাধারণত ছায়াযুক্ত স্যাঁতস্যাঁতে মাটি, পুরনো দেয়াল, ইট, পাথর ও পার্বত্য অঞ্চলের নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে জন্মায়।
আর ফার্ন হলো টেরিডোফাইটা বা অপুষ্পক উদ্ভিদ প্রকৃতির। ফার্ণ সাধারণত ছায়াযুক্ত স্থানে, ভিজা মাটিতে, পুরনো দেয়ালে ও বড় বড় গাছের কাণ্ডে জন্মায়।
আরও শিখুন : মসবর্গীয় ও ফার্নবর্গীয় উদ্ভিদ কাকে বলে?বৈশিষ্ট্য, উদাহরণ
মস ও ফার্ন কাকে বলে ?
মস : ব্রায়োফাইটার Musci শ্রেণীর উদ্ভিদকে মস বলে।
ফার্ন : টেরিডোফাইটার Filicineae শ্রেণীর উদ্ভিদ সমূহকে সাধারণভাবে ফার্ন বলে।
মস ও ফার্ন এর বৈশিষ্ট্য :
মস এর বৈশিষ্ট্য
- এরা গ্যামিটোফাইটিক ।
- দেহ রাইজয়েড, কাণ্ড ও পাতার মত অংশে বিভক্ত ।
- এদের মূল নেই, মূলের পরিবর্তে রাইজয়েড আছে।
- জননাঙ্গ সর্বদাই বহুকোষী এবং বন্ধ্যাকোষ স্তর দ্বারা আবৃত থাকে ।
- এদের কোন পরিবহনতন্ত্র নেই ।
- স্পোরোফাইট ফুট (পদ), সিটা এবং ক্যাপসিউলে বিভক্ত ।
- স্পোরোফাইট গ্যামিটোফাইটের উপর নির্ভরশীল ।
- স্পোর বা রেণু অঙ্কুরিত হয়ে সূত্রবৎ প্রোটোনেমা উৎপন্ন করে ।
- মসের জীবনে সুস্পষ্ট জনুক্রম আছে ।
ফার্ন এর বৈশিষ্ট্য
- এদের পরিবহনতন্ত্র আছে।
- কান্ড রাইজোম জাতীয় এবং বহুবর্ষজীবী।
- স্পোরোফাইটিক উদ্ভিদ।
- এরা মূল, কান্ড ও পাতায় বিভক্ত।
- যৌনাঙ্গ বহুকোষী এবং বন্ধ্যাকোষের আবরণ দিয়ে ঘেরা।
- এদের ফুল, ফল ও বীজ হয় না।
- এদের জীবনচক্রে সুস্পষ্ট জনুক্রম আছে।
আরও শিখুন : সানফার্ন কি?এর বৈশিষ্ট। Pteris কে সানফার্ন বলা হয় কেন?
মস ও ফার্ন এর পার্থক্য :
মস | ফার্ণ |
---|---|
১ । এরা ছোট উদ্ভিদ, অর্ধ ইঞ্চি হতে এক ইঞ্চি উঁচু হয় । | ১। ফার্ণ এক ফুট বা আরও উঁচু হয় । |
২ । মস উদ্ভিদ গ্যামেটোফাইট হ্যাপ্লয়েড )। | ২। ফার্ন উদ্ভিদ স্পোরোফাইট ডিপ্লয়েড )। |
৩ । মস উদ্ভিদ রাইজয়েড, কাণ্ড ও ক্ষুদ্র পাতায় বিভক্ত । | ৩ । ফার্ণ উদ্ভিদ মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত । |
৪ । পাতা সরল । | ৪ । পাতা যৌগিক । |
৫ । কাণ্ড ভাস্কুলারবান্ডল বিহীন। | ৫ । কাণ্ড ও র্যাকিস ভাস্কুলারবান্ডলযুক্ত । |
৬। কাণ্ড নরম, সরু ও বায়বীয় । | ৬ । কাণ্ড শক্ত ও রাইজোম জাতীয় । |
৭ । কাণ্ড কোন বিশেষ পাতা দ্বারা আবৃত থাকে না । | ৭ । কাণ্ড র্যামেন্টা নামক বিশেষ পাতা দ্বারা আবৃত থাকে । |
৮ । মুকুল পত্রবিন্যাস অকুন্ডলিত । | ৮ । মুকুল পত্রবিন্যাস কুন্ডলিত (সারসিনেট) |
৯ । পাতা কখনও সোরাস বহন করে না । | ৯ । পাতায় সোরাস জন্মে। |
১০। স্পোর অঙ্কুরিত হয়ে প্রোটোনেমা সৃষ্টি করে । | ১০। স্পোর অঙ্কুরিত হয়ে প্রোথ্যালাস তৈরি করে । |
১১ । জননাঙ্গ প্রধান উদ্ভিদে জন্মে । | ১১। জননাঙ্গ হৃদপিন্ডাকার প্রোথ্যালাসে জন্মে । |
১২। গ্যামিটোফাইট স্বতন্ত্র পর্যায়, স্পোরোফাইট গ্যামিটোফাইটের উপর নির্ভরশীল । | ১২।স্পোরোফাইট ও গ্যামিটোফাইট উভয়ই স্বতন্ত্র পর্যায়, একে অপরের উপর নির্ভরশীল নয় । |
১৩। স্পোরোফাইট পদ, সিটা ও ক্যাপসুলে বিভক্ত । | ১৩। স্পোরোফাইট মূল কান্ড ও পাতায় বিভক্ত । |
১৪ । জীবনচক্রে গ্যামেটোফাইট প্রধান পর্যায় ও স্পোরোফাইট গৌণ পর্যায় । | ১৪ । জীবনচক্রে স্পোরোফাইট মুখ্য পর্যায় এবং গ্যামিটোফাইট গৌণ পর্যায় । |
আরও শিখুন : ব্রায়োফাইটা ও টেরিডোফাইটা- সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, পার্থক্য