বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা : ৫০০ শব্দ – PDF

উপস্থাপনা : 

১৯৭১ সালে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের এ স্বাধীনতার রয়েছে সুদীর্ঘ রক্তঝরা ইতিহাস। এ স্বাধীনতা কুড়িয়ে পাওয়া একমুঠো মুক্তো বা বদান্যতার উপহার নয়। এক সাগর রক্ত ও লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ স্বাধীনতা। মুক্তিসেনার রক্তে রঞ্জিত এক সুদীর্ঘ সংগ্রামের ফসল আমাদের স্বাধীনতা ৷

মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট : 

১৯৪৭ সালের ভারত বিভক্তির পর পাকিস্তানের একটি অংশ হিসেবে বাঙালিরা পূর্ব পাকিস্তান লাভ করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানিরা তাদের দুঃশাসন, শোষণ ও বঞ্চনার মাধ্যমে এদেশকে পাকিস্তানের একটি উপনিবেশে পরিণত করে। কিন্তু বাঙালিরা তা মেনে নেয় নি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ও ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে তারা তাদের জাতীয়তাবাদের প্রথম বিজয় সূচনা করে । 

তারপর অনুষ্ঠিত হয় ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয়দফা আন্দোলন। ১৯৭০ সালের নির্বাচন ৬ দফা স্বাধিকার দাবির ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। বাংলার মানুষের এই বিজয়কে কেন্দ্রীয় সরকার নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় । বাঙালি জাতীয়তাবাদকে চিরতরে ধ্বংস করবার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দীর্ঘদিন শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আপস আলোচনার নামে প্রহসন চালায়। বাঙালি জাতিকে চিরতরে ধ্বংস করবার জন্য সেনাবাহিনী লেলিয়ে দেয়।

আরও পড়ুন :- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – প্রবন্ধ রচনা ২০ পয়েন্ট

পাকবাহিনীর আক্রমণ : 

বাংলাদেশের মানুষের দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার স্বপ্নকে নস্যাৎ করার জন্য পাক হানাদার বাহিনী মারণাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় ঢাকার বুকের ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা নির্মম হত্যাকান্ড। শেখ মুজিবুর রহমানকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয় করাচীতে 

স্বাধীনতা ঘোষণা :

পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণা দেশবাসীকে জানানোর জন্য চট্টগ্রামের কালুর ঘাটে চালুকৃত স্বাধীন বাংলা অস্থায়ী বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন।

মুক্তিবাহিনী গঠন ও যুদ্ধের প্রস্তুতি : 

পাক হানাদার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জীবন বাঁচাতে লক্ষ লক্ষ নারী-পুরুষ প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্য থেকে জেনারেল ওসমানী একটি বিরাট গেরিলা বাহিনী ও নৌ-কমান্ডো বাহিনী গঠন করেন। এর সাথে তিনি বিমান বাহিনীও গঠন করেন। বিমান বাহিনী তাদের নিজস্ব বিমান নিয়েই ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ও ঢাকায় প্রথম বিমান হামলা চালায় ।

আরও পড়ুন :- বিজয় দিবস – রচনা [ class 6, 7, 8, 9 ] এবং HSC

মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ : 

১৯৭১ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে মুক্তিযুদ্ধ তীব্রতর হয়ে ওঠে। ৩ ডিসেম্বর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ৪ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী যৌথভাবে হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়তে শুরু কর । ৬ ডিসেম্বর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দান করে। ৪ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলায় পাকবাহিনী সবগুলো বিমান হারায়। মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর যৌথ আক্রমণে ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন এলাকা শত্রুমুক্ত হয় ।

পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও চূড়ান্ত বিজয় : 

১৪ ডিসেম্বর যৌথবাহিনী ঢাকার মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে। ১৬ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনীর অধিনায়ক লেঃ জেনারেল নিয়াজী তাঁর ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে অস্ত্রশস্ত্রসহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যৌথ কমাণ্ডের নিকট আত্মসমর্পণ করে। ফলে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয় সূচিত হয় ।

উপসংহার :

বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোনো খণ্ডিত বিচ্ছিন্ন স্বপ্ন বা কল্পনার বাস্তবরূপ নয় । ঐক্যবদ্ধ জীবন প্রচেষ্টা, মিলন-বিরহ, আশা-নিরাশায় বাস্তব অনুভূতি সম্বলিত এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী অপরাজেয় চেতনা; যার ফলশ্রুতিতে বিশ্বের মানচিত্রে সংযোজিত হয়েছে বাংলাদেশ নামের একটি নতুন ও স্বাধীন ভূখণ্ডের ।

Thanks!
Your download will start in few seconds…
If not then,

Click Here

আমার মূল লক্ষ্য একটাই (Sikkhagar-শিক্ষাগার) ওয়েবসাইটের হাত ধরে “শিক্ষা হবে উন্মুক্ত ও বাণিজ্যমুক্ত”। এই প্লাটফর্মে থাকবে একাডেমিক প্রস্তুতি, ভর্তি প্রস্তুতি, চাকরি প্রস্তুতি, স্পেশাল স্কিল এবং ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!