জাতীয় ফুল শাপলা রচনা - ১
সূচনা :
বাংলাদেশ শুধু ধানের দেশ আর গানের দেশ নয়; ফুলের দেশও। ঋতুতে ঋতুতে এদেশের বাগানে, ঝোপে- ঝাড়ে আর মাঠে-ঘাটে ফোটে হাজারো রকমের ফুল।
জাতীয় ফুল :
এ হাজারো ফুলের মধ্যেই একটি হলো শাপলা ফুল। বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা লাভের পর এ শাপলা ফুলকে জাতীয় ফুলের মর্যাদা দান করেছে।
জন্মস্থান :
শাপলা একপ্রকার জলজ ফুল। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে বাংলাদেশের জলাভূমি, বিল, হাওড়, পুকুর প্রভৃতি স্থানে প্রচুর শাপলা ফোটে। তবে মাঠের আমন ধানের ক্ষেতে শাপলা ফুল ভালো জন্মে।
প্রকারভেদ :
শাপলা ফুল তিন প্রকার। যথা : (১) তারকা শাপলা, (২) রাতাইল শাপলা ও (৩) হুন্দী শাপলা। তারকা শাপলার রং হয় নীল এবং পাপড়িগুলো তারকার মতোই। রাতাইল শাপলা টুকটুকে লাল এবং হুন্দী শাপলা হয় ধবধবে সাদা। শাপলা ফুলের পাঁচটি অংশ। যথা : পাপড়ি, কেশর, পরাগ, মূল অংশ ও বোঁটা ৷
আরও পড়ুন :- রচনা : জাতীয় পাখি দোয়েল (ক্লাস ৩, ৪, ৫)
ব্যবহার :
শাপলার পাতাগুলো বেশ বড় এবং একদিক খসখসে আর একদিক মসৃণ। পাতাগুলো ফুলকে ঘিরে বিছানো অবস্থায় পানির ওপর ভাসতে থাকে । শাপলা ফুল ঝরে যাবার পর ফুলের ডিম্বকোষ অংশের মধ্যে বীজগুলো পেকে যায়। এ বীজ থেকে খৈ তৈরি করা যায়। এগুলোই হলো মজার খাবার ‘ঢেপের খৈ' নামে পরিচিত ৷
এ ডিম্বকোষ ফেটে গিয়ে বীজগুলো পানির ওপরে ছড়িয়ে পড়ে। পানি শুকিয়ে গেলে মাটির সাথে মিশে যায়। তারপর আবার সেখান থেকে গজায় নতুন পাতা। শালুকও পল্লি গ্রামের গরিব লোকেরা সংগ্রহ করে খাদ্য হিসেবে। এ শালুক থেকেও নতুন বছরে আবার শাপলা জন্মায় ।
উপসংহার :
জাতীয় জীবন গৌরবের আসনে প্রতিষ্ঠিত হবার পর আজ শাপলা সারা দেশে সমাদৃত। তাই তো বাংলাদেশের মুদ্রার ওপর শাপলার ছবি। শাপলা বাঙালির জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতীক । তাই সমস্ত বাঙালির জীবন শাপলা ফুলের মতো পবিত্র হয়ে উঠুক এ কামনা করি ।
জাতীয় ফুল শাপলা রচনা - ২
সূচনা :
প্রাপ্তিস্থান ও সময় :
আরও পড়ুন :- জাতীয় পতাকা - রচনা [ class 1, 2, 3, 4, 5 ]
বর্ণনা :
উপকারিতা ও ব্যবহার :
উপসংহার :
জাতীয় ফুল শাপলা রচনা - ৩
ভূমিকা :
ফুল বিধাতার সেরা দান। সবাই ফুল ভালোবাসে। পৃথিবীতে নানা জাতের ও নানা রঙের ফুল আছে। শাপলা ফুল তার মধ্যে একটি। শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল।
প্রাপ্তিস্থান :
বাংলাদেশের সব জায়গায় শাপলা ফুল পাওয়া যায়। বাংলাদেশের খাল, বিল, হাওড়, বাওড়, পুকুর, ডোবা প্রভৃতি স্থানে হাজার হাজার শাপলা ফুল ফোটে। জলাভূমিতে শাপলার জন্ম। এজন্য শাপলাকে জলজ উদ্ভিদ বলা হয়।
প্রকারভেদ :
বাংলাদেশে প্রধানত দুই রঙের শাপলা ফুল দেখতে পাওয়া যায়। রঙ দুটি হলো সাদা ও লাল। এ ছাড়া নীল ও বেগুণী শাপলাও চোখে পড়ে। সাদা শাপলার জন্মস্থান বাংলাদেশ। আর লাল শাপলার আদি নিবাস ক্রান্তীয় আফ্রিকা। বর্ষাকালে এই রঙ বেরঙের শাপলা ফুলের অপরূপ শোভা, সৌন্দর্য পিয়াসী মানুষকে বিমোহিত করে। এর অপরূপ শোভা ও সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয় মানুষ ।
ব্যবহার :
শুধু সৌন্দর্যই নয়, সুস্বাদু খাবার হিসেবেও শাপলা ফুলের কদর রয়েছে। শাপলা ফুলের বীজ গ্রামবাংলার ছেলেমেয়েরা সুস্বাদু খাবার হিসেবে খেয়ে থাকে। এছাড়া গ্রামবাংলায় জিনিসপত্রের মোড়ক হিসেবে এর পাতা ব্যবহৃত হয়। আর শাপলার দণ্ড দিয়ে সুস্বাদু তরকারি রান্না করা হয়।
আরও পড়ুন :- বাংলাদেশের জাতীয় মাছ - ইলিশ রচনা : Class 3, 4, 5
জাতীয় মর্যাদায় শাপলা :
প্রকৃতির সাবলীল দান হিসেবে শাপলা অনন্য-সাধারণ। হাজারো ফুলের ভিরে শাপলা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। শাপলার মতো সরল অথচ নয়নাভিরাম সৌন্দর্যমণ্ডিত বৈশিষ্ট্য অন্য কোনো ফুলে নেই। শাপলার স্নিগ্ধ নরম সুরভী অতি বিস্ময়কর। বাংলাদেশের সকল জায়গায় শাপলা পাওয়া যায়।
তাই শাপলাকে জাতীয় ফুলের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। আমাদের জাতীয় প্রতীক হলো উভয় পাশে ধান শীষ বেষ্টিত পানিতে ভাসমান শাপলা। আমাদের মুদ্রায়ও শাপলার প্রতিচ্ছবি রয়েছে। ডাক টিকিট ও মুদ্রায় ব্যবহৃত হয় শাপলা ফুলের ছবি। শাপলা তাই আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক।
শাপলার সৌন্দর্য :
শাপলা জলজ ফুল। খাল, বিল, ঝিল, দীঘি, লেক, সরোবর, ডোবা ইত্যাদিতে অগণিত শাপলা জন্মলাভ করে। ফুটন্ত শাপলার নয়নাভিরাম দৃশ্য আমাদের মোহিত করে।
উপসংহার :
শাপলার শোভা ও সৌন্দর্য অপরূপ। ব্যবহারিক জীবনেও এর প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শাপলা গ্রাম বাংলার জলাভূমির রানীর মর্যাদায় অভিহিত। দীঘি-নালা, খাল-বিলে পরিপূর্ণ বাংলাদেশের শাপলা ফুলের সৌন্দর্যে মুখরিত করেছে বলে শাপলাকে জাতীয় ফুল আখ্যা দেয়া হয়েছে।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা