হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

শব্দ দূষণ ও তার প্রতিকার – বাংলা রচনা

শব্দ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা – ১

সূচনা: 

মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশ খুব জরুরি। কিন্তু আমরা প্রতিদিন বিভিন্নভাবে পরিবেশকে দূষিত করে চলেছি। পরিবেশ দূষণের নানা দিকের মধ্যে শব্দ দূষণ অন্যতম ।

শব্দদূষণ কী: 

শব্দদূষণ বলতে মানুষের বা কোনো প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোনো শব্দ সৃষ্টির কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বোঝায়। শব্দদূষণ একটি মারাত্মক সমস্যা। এ সমস্যা মানুষেরই সৃষ্ট।

শব্দদূষণের কারণ: 

বিভিন্ন কারণে শব্দদূষণ ঘটে থাকে। গাড়ির হর্ন, কলকারখানার শব্দ, জোরে মাইক বাজানো, উচ্চস্বরে গান শোনা ইত্যাদি কারণে শব্দদূষণ হয় ।

আরও পড়ুন :- রচনা : এই দেশ এই মানুষ / প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ

শব্দদূষণের অপকারিতা: 

শব্দদূষণ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মাত্রাতিরিক্ত শব্দ আমাদের মস্তিষ্ক, শ্রবণযন্ত্র ও হৃদযন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে। এতে দিন দিন আমাদের কানে শোনার ক্ষমতা কমে যেতে থাকে । উচ্চমাত্রার শব্দ থেকে উদ্বেগ, মানসিক অবসাদ, উচ্চ রক্তচাপ, ঘুমের ব্যাঘাত, স্নায়বিক চাপ ও হৃদরোগের মতো সমস্যাও সৃষ্টি হতে পারে।

প্রতিকার: 

শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনা করে আমাদের উচিত এর প্রতিকার করা। এ জন্য মাত্রাতিরিক্ত শব্দ সৃষ্টি করে এমন বস্তু ও কাজ এড়িয়ে চলা উচিত। অযথা গাড়ির হর্ন বাজানো বা জোরে মাইক বাজানো থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে স্কুল ও হাসপাতালের সামনে হর্ন বাজানো উচিত নয়। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমবে।

উপসংহার:

শব্দদূষণ আমাদের শরীরের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনেক প্রভাব ফেলে । জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা তথা অর্থনীতির ওপর এটি চাপ সৃষ্টি করে। তাই আমাদের সবার উচিত শব্দদূষণ ঘটে এমন কাজ পরিহার করা।

আরও পড়ুন :- রচনা : নিরাপদে চলাচল 

শব্দ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা – ২

ভূমিকা :

মানব সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পরিবেশ। পরিবেশই প্রাণের ধারক, জীবনীশক্তির যোগানদার। পরিবেশের বিরুদ্ধতা বেঁচে থাকার পথকে অবলীলাক্রমে রুদ্ধ করে। যান্ত্রিক সভ্যতার এ যুগে পরিবেশ বিভিন্নভাবে দূষিত হচ্ছে। শব্দদূষণ এর মধ্যে অন্যতম।

শব্দদূষণ কী :

শব্দদূষণের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ‘Sound pollution’। যন্ত্রণাদায়ক ও ক্ষতিকর বিভিন্ন জিনিস থেকে উৎপন্ন বিকট শব্দ পরিবেশের যেভাবে ক্ষতি করে তা-ই শব্দদূষণ। মানবজীবনে শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারি ও ব্যাপক ।

শব্দদূষণের কারণ :

যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে বিশ্বে পরিবেশের দ্রুত অবনতি হচ্ছে। ১৯৯৫ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন পাস হয়। কিন্তু তার বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। শব্দদূষণের ফলে গ্রামের তুলনায় শহরের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। শহর এলাকায় শব্দদূষণের মূল উৎসগুলো হচ্ছে-

১. বিভিন্ন যানবাহনের হর্ন।

২. কলকারখানার শব্দ । 

৩. বাজি ও পটকার আওয়াজ। 

৪. রেডিও ও টেলিভিশনের শব্দ। 

৫. মাইকের আওয়াজ ইত্যাদি।

আরও পড়ুন :- গাছ আমাদের বন্ধু – বাংলা রচনা

শব্দদূষণের প্রতিক্রিয়া :

শব্দদূষণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে অতিষ্ঠ করে তুলে। কাজের প্রতি আগ্রহ ও মনোযোগ হারিয়ে ফেলে এবং অস্থিরতা দেখা দেয়। এক সময় মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর ফলে মানব জীবনে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। প্রতিক্রিয়াগুলো হলো-

১. শ্রবণেন্দ্রিয় অকেজো হয়ে পড়ে ৷

২. হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।

৩. স্নায়ুতন্ত্রের ওপর চাপ পড়ে। ৪. মাথা ব্যাথা শুরু হয় ।

৫. অনিদ্রা সৃষ্টি হয় ইত্যাদি ।

শব্দদূষণের প্রতিরোধের উপায় :

শব্দদূষণ রোধ করতে হলে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। ট্রাফিক আইন অনুযায়ী যানবাহনে উচ্চ শব্দে হর্ণ বাজানো রোধ করতে হবে। অযথা হর্ণ বাজানো থেকে বিরত থাকতে হবে। সহনশীল আওয়াজে রেডিও ও টেলিভিশনের গান শুনতে হবে। কলকারখানায় সহনশীল আওয়াজের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে। বিয়ে-শাদি ও অন্যান্য অনুষ্ঠানাদিতে মাইকের ব্যবহার সীমিত রাখতে হবে। 

উপসংহার :

আমাদের সকলকে শব্দদূষণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কারণ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরি করা আমাদের একান্ত কর্তব্য। পৃথিবীর সকল মানুষ যখন সমবেতভাবে এ পরিবেশ দূষণ মুক্ত রাখতে এগিয়ে আসবে, তখনই আমরা সুখী জীবন-যাপনে সক্ষম হব।

Leave a Comment

error: Content is protected !!