যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ - ১
মূলভাব : বিপদসংকুল এ পৃথিবীতে মানুষকে সর্বদা সংগ্রাম করেই টিকে থাকতে হয়। এ সংগ্রাম করার শক্তি, সামর্থ্য ও ধৈর্য যার আছে তারই বেঁচে থাকার অধিকার আছে।
সম্প্রসারিত ভাব : স্নেহ, দয়া, ক্ষমা, ধৈর্য, সহনশীলতা প্রভৃতি মহৎগুণের বিকাশ ঘটিয়ে মানুষের ব্যক্তি জীবন ও সমষ্টি জীবন ধন্য করা সম্ভব। সহনশীলতা মানুষের একটা প্রধান গুণ । অন্যান্য বহু গুণ থাকলেও কোনো মানুষের যদি ধৈর্য ও সহনশীলতার গুণ না থাকে, তাহলে সে জীবনে কোনো উন্নতি লাভ করতে পারে না।সচরাচর দেখতে পাওয়া যায়, এ পৃথিবীতে যারা সহিষ্ণু ও ধীর, তারাই জীবনকে সফল করে অক্ষয় গৌরবের অধিকারী হয়েছেন।
এ পৃথিবীতে সব মানুষেরই কোনো না কোনো কাজ করতে হয়, কিন্তু সাফল্যের গৌরব সবাই লাভ করতে পারে না। যখন কোনো লোক কোনো কাজ শুরু করে, তখনই তাকে নানা বাধাবিঘ্নের মুখোমুখি হতে হয়। এভাবেই তার জীবনে সংগ্রাম শুরু হয়। সে যদি ধীর ও সহিষ্ণু না হয়ে বাধাবিঘ্নের কাছে নতি স্বীকার করে এবং এ কাজ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, তাহলে তার সফল হওয়ার কোনো আশা থাকে না।
প্রতি কাজেই যদি তার এ রকম অবস্থা হয়, তবে তার জীবন ব্যর্থ হয়ে যাবে এবং অভাব-অনটন ও দুঃখ-শোকের মাঝে তার জীবন কাটাতে হবে। পরিণামে সে জীবন সংগ্রামে পরাজিত হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরবে। জীবন সংগ্রামে জয়ী হয়ে কৃতিত্বের সাথে বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই সহিষ্ণু ও ধৈর্যশীল হতে হয়। এ বিশ্ব সংসারে যারা সহিষ্ণু ও ধৈর্যশীল তারাই কেবল টিকে থাকে । এটি মানুষের অন্তরের বল ও পবিত্রতা বপন করে। তাই জীবনে সফলতা পেতে হলে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার কোনো বিকল্প নেই ।
মন্তব্য : সহিষ্ণুতা মানবজীবনে সত্যিই আশীর্বাদস্বরূপ। সহিষ্ণুতার বলেই মানুষ কঠিন বাস্তবতার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাফল্যের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন :- জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো ভাবসম্প্রসারণ - ২টি
যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ - ২
মূলভাব : ধৈর্যই সাফল্যের চাবিকাঠি
সম্প্রসারিত ভাব : এ পৃথিবীতে যে ব্যক্তির সহ্য করার শক্তি আছে তাঁরই বেঁচে থাকার অধিকার আছে। সহ্য করা বা ধৈর্য ধারণ করা সব গুণের চেয়ে বড় গুণ এবং এ গুণের জন্যে মানুষ সব রকম বাধা জয় করে জীবনে কৃতকার্য হতে পারে। জীবনে বহু বাধা আসে, আসে বিপদ। এই প্রতিকূল পরিবেশে নিজেকে রক্ষা করার জন্যে সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
খুব ধৈর্য ধারণ করলে কোনো শত্রু ক্ষতি করতে পারে না। ধৈর্যশীল লোক স্থিরভাবে জটিল সমস্যাও চিন্তা করে সমাধান বের করতে পারে। অন্যদিকে সদ্যগুণ না থাকলে মনের চঞ্চলতায় সহজ কাজ ও ভালোভাবে করতে পারে না। তাই এই প্রতিযোগিতার বিশ্বে নিজেকে রক্ষা করার জন্যে সহাগুণের পরিচয় দিতে হয় । জীবনের সাফল্যের জন্যে এই গুণের চর্চার বিশেষ প্রয়োজন ।
সহিষ্ণুতা মানুষের জীবনে আশীর্বাদস্বরূপ । মহামানবরা চিরকাল অশেষ নির্যাতন সহ্য করেছেন কিন্তু তাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। তাই তাদের সফলতা এসেছে। আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহম্মদ (স) ইসলাম প্রচার করতে যেয়ে কত অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। এসব অত্যাচার নির্যাতনে ধৈর্যহারা হলে সফলকাম হতে পারতেন না ।
মন্তব্য : জীবনে সফলতা পেতে চাইলে সহনশীল হতে হবে। সহিষ্ণুতাই মানুষকে বিজয়ের পথে পরিচালিত করে ।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা