ভাবসম্প্রসারণ: সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা(২টি)

সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব : এই পৃথিবীতে সৎ-অসৎ, ভাল-মন্দ, সত্য-মিথ্যা পাশাপাশি বিরাজমান। এখানে সৎ এবং সত্য পথের যাত্রী যেমন রয়েছে, তেমনি অসৎ এবং মিথ্যা পথের যাত্রীও। কিন্তু এ কথা সর্বজনস্বীকৃত যে, সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা ।

সম্প্রসারিত ভাব : জীবনে সাফল্য অর্জন করতে হলে সৎ পথে চলাই উত্তম কাজ। কেননা সততার কোন বিকল্প নেই। জীবনের যে কোন ক্ষেত্রে সততার মূল্য অন্য সব কিছুর ঊর্ধ্বে । একজন সৎ লোক সবার কাছে বিশ্বস্ত হতে পারে। সব ধরনের কাজে কর্মে তার উপর সকলের আস্থা থাকে। যে জাতির মধ্যে সৎ পথাবলম্বী লোকের সংখ্যা বেশি সেই জাতি তত উন্নত। অবশ্য অনেক সময় এর ব্যতিক্রম ঘটে । অসৎ ও মিথ্যার পথ ধরেও অনেক আর্থিক উন্নতি সাধনে সক্ষম হয়। কিন্তু এ ধরনের উন্নতির স্থায়িত্ব খুবই কম । অসৎ পথে অর্জিত সাফল্য একদিন না একদিন বিনষ্ট হবেই কেননা যার মূলে রয়েছে অসততা, তা কোন দিনই স্থায়িত্ব পেতে পারে না । তাছাড়া অসৎ পথের যাত্রী যত সাফল্যই অর্জন করুক, কেউ তাকে শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখে না। অন্যদিকে সৎ পথ অবলম্বনকারী যদি দুঃখ এবং দীনতার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করে, তবুও সে সকলের কাছে সম্মান পায় সবাই তাকে শ্রদ্ধা করে ।

মন্তব্য : সৎ পথে চলে যদি দুঃখও আসে তবুও এই পথ পরিত্যাগ করা উচিত নয়। স্মরণ রাখতে হবে সততার জয় এবং মিথ্যার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী।

আরও পড়ুন :  স্পষ্টভাষী শত্রু নির্বাক মিত্র অপেক্ষা শ্রেয় : ভাবসম্প্রসারণ

একই ভাবসম্প্রসারণের ভিন্ন প্রতিলিপন

মূলভাব : সততা একটি পরম গুণ। এ গুণের কদর সর্বত্র। সততার কারণে যথার্থ সফলতা লাভ করা যায়।

সম্প্রসারিত ভাব : মানবজীবন নশ্বর। জন্মের নির্দিষ্ট সময়ের পর মানুষ ইহলোক ত্যাগ করে। সে যদি সৎ, নিষ্ঠাবান ও আদর্শবান হয় তা হলে মরেও সে পৃথিবীতে অমর হয়ে থাকে। সততা ও ন্যায়নিষ্ঠতার যোগফলই হচ্ছে সাধুতা। একমাত্র সাধুতার দ্বারাই মানুষের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা অর্জন করা যায়। সাধু ব্যক্তি নিঃস্বার্থ বলে তাদের শত্রু থাকে না। যে জাতি যত বেশি সৎপথে চালিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। অপরদিকে যে জাতি যত বেশি সৎপথ হতে বিচ্যুত সে জাতি তত বেশি অনুন্নত। সৎ ব্যক্তি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করতে পারে। একনিষ্ঠ কর্তব্য ও সততার কারণে তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তথা চাকরি, ব্যবসায়-বাণিজ্য, রাজনীতি, দেশ ও জাতি গঠনে সফলতার মুখ দেখতে পারেন। মহামানবদের দৃষ্টান্ত পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তাদের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পেছনে রয়েছে একনিষ্ঠতা এবং সততা। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) সততা গুণের দ্বারা আরববাসীদের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাই তাঁকে সকলে 'আল-আমিন' বলে ডাকত, যার অর্থ বিশ্বাসী। যাদের মাঝে সততার লেশমাত্র নেই তাদের কেউ শ্রদ্ধা করে না। সকলে তাদের এড়িয়ে চলতে চায়। মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তাদের অস্তিত্বও পৃথিবী থেকে চিরতরে হারিয়ে যায়।

মন্তব্য : মানবজীবনে সাধুতাই সফলতার চাবিকাঠি। জীবনের সর্বক্ষেত্রে এ নীতি অনুসরণ করা উচিত।

Post a Comment

0 Comments