হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

একবীজপত্রী ও দ্বিবীজপত্রী:সংজ্ঞা, উদাহরণ, বৈশিষ্ট্য,পার্থক্য

সংজ্ঞা : যেসব আবৃতবীজী উদ্ভিদের বীজে একটিমাত্র বীজপত্র বিদ্যমান থাকে তাকে একবীজপত্রী উদ্ভিদ বলে। যেমন- ধান, গম, ইত্যাদি। এদের পাতার শিরাবিন্যাস সমান্তরাল এবং মূলগুলো গুচ্ছ মূলতন্ত্র গঠন করে।

একবীজপত্রী উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য :

  • অধিকাংশ বীরুৎ ও কিছুসংখ্যক বৃক্ষজাতীয়।
  • কাণ্ড সাধারণত অশাখ।
  • পাতা প্রধানত সরল এবং শিরাবিন্যাস সমান্তরাল (ব্যতিক্রম- সুলতান চাঁপা)।
  • পাতার উভয় পৃষ্ঠে স্টোমাটা বর্তমান অর্থাৎ সমপৃষ্ঠ।
  • কাণ্ডে অন্তঃত্বক ও পরিচক্র অনুপস্থিত।
  • কাণ্ডের পরিবহন কলা গুচ্ছ ক্যাম্বিয়ামবিহীন, বদ্ধ এবং বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো।
  • মূলে জাইলেম ও ফ্লোয়েম এর সংখ্যা সাধারণত ৬ এর অধিক।
  • পুষ্প সাধারণত ট্রাইমেরাস বা এর গুণিতক।
  • বীজে একটি বীজপত্র থাকে (ব্যতিক্রম- Commelinaceae)।

আরও : একবীজপত্রী-দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের মূল ও কান্ড পার্থক্য, বৈশিষ্ট্য

সংজ্ঞা : যেসব আবৃতবীজী উদ্ভিদের বীজে দুটি বীজপত্র বিদ্যমান থাকে এবং পাতা জালিকা শিরাবিন্যাসযুক্ত প্রধান মূল রয়েছে তাদেরকে দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ বলে । যেমন – আম, জ্যাম, কাঁঠাল ইত্যাদি।

দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য :

  • বীরুৎ গুল্ম বা বৃক্ষজাতীয়।
  • কাণ্ড সাধারণত শাখান্বিত।
  • পাতা সরল বা যৌগিক। শিরাবিন্যাস জালিকাকার (ব্যতিক্রম- কচু, কুমারিকা)।
  • পাতার কেবল নিচের পৃষ্ঠে স্টোমাটা বর্তমান অর্থাৎ বিষমপৃষ্ঠ।
  • কাণ্ডে সাধারণত অন্তঃত্বক ও পরিচক্র উপস্থিত।
  • কাণ্ডের পরিবহন কলা গুচ্ছ ক্যাম্বিয়ামযুক্ত, মুক্ত এবং চক্রাকারে অবস্থিত ।
  • মূলে জাইলেম ও ফ্লোয়েমের সংখ্যা সাধারণত ৬ এর কম।
  • পুষ্প সাধারণত টেট্রা বা পেন্টামেরাস বা এর গুণিতক।
  • বীজে দুটি বীজপত্র থাকে (ব্যতিক্রম Verbenaceae)।

আরও : পুষ্প সংকেত কি? জবা ফুলের ও ধানের পুষ্প সংকেত। লেখার নিয়ম

একবীজপত্রী ও দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের উদাহরণ :

উদ্ভিদের নাম উদাহরণ
একবীজপত্রী উদ্ভিদ ধান, গম, ইক্ষু, কলা, কচু, নারকেল, বাঁশ, ঘৃতকুমারী, শতমূলী, ভুট্টা, কচুরীপানা, পেঁয়াজ, রসুন, উলট চন্ডাল, কুমারিকা, অর্কিড, খেজুর, যব, ঘাস ।
দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ আম, জাম, লিচু, কাঠাল, চা, ছোলা, রেড়ি, তামাক ধুতুরা, জবা, তেতুল, লাউ, কুমড়া, শিম, মটর

একবীজপত্রী ও দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের পার্থক্য :

একবীজপত্রী উদ্ভিদ  দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ
১. প্রধানত হাব শ্রেণির । ১. প্রধানত বৃক্ষজাতীয়; তবে শ্রাব ও হার্ব শ্রেণির হতেও পারে ।
২. প্রধাণত অস্থানিক গুচ্ছমূল গঠন করে । ২. প্রধান মূলতন্ত্র গঠিত হয় ।
৩. বৃক্ষজাতীয় হলে কান্ড সাধারণত শাখা-প্রশাখা ধারণ করে না। ৩. বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদের কাণ্ড শাখা- প্রশাখা যুক্ত ।
৪. পত্রমূল প্রশস্ত ও কাণ্ডবেষ্টক । ৪. পত্রমূল প্রশস্ত ও কাণ্ডবেষ্টক হয় না ৷
৫. পাতা সাধারণত ভূ-পৃষ্ঠের সাথে তির্যকাপন্ন থাকে এবং সমাঙ্কপৃষ্ঠ হয় । ৫. পাতা ভূ-পৃষ্ঠের সমান্তরাল থাকে ও বিষমপৃষ্ঠ হয় ।
৬. শিরবিন্যাস সমান্তরাল । (ব্যতিক্রম: কচু, খামালু, কুমারিকা প্রভৃতি একবীজপত্রী উদ্ভিদে জালিকাকার) ৬. শিরবিন্যাস জালিকাকার (ব্যতিক্রম:সুলতান চাঁপা নামক দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদে সমান্তরাল)
৭. পুষ্পস্তবক গুলো তিন বা তিনের গুণিতক হয় । ৭. পুষ্পস্তবকগুলো সাধারণত পাঁচ বা চার কিংবা এদের গুণিতক হয় ।
৮. বীজ শস্যল, বীজপত্র একটি । ৮. বীজ অশস্যল, বীজপত্র দুটি ।
৯. কান্ডে ভাস্কুলার বান্ডল বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়ানো থাকে । জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর মাঝখানে ক্যাম্বিয়াম নেই, তাই সেকেন্ডারি বৃদ্ধি হয় না । ৯. কান্ডে ভাস্কুলার বান্ডল বান্ডল বৃত্তাকারে সাজানো থাকে । জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর মাঝখানে ক্যাম্বিয়াম থাকে, তাই সেকেন্ডারি বৃদ্ধি হয় ।

Leave a Comment