স্পাইরোগাইরা (Spirogyra) গাঢ় সবুজ বর্ণের অশাখা সূত্রাকার শৈবাল । এদের ক্লোরোপ্লাস্ট ফিতার মত লম্বা এবং কোষের ভেতরে Spiral অবস্থায় বিরাজ করে বলে এদের নাম হয়েছে Spirogyra.
স্পাইরোগাইরা (Spirogyra) কি?
স্পাইরোগাইরা হলো থ্যালোফাইটার অন্তর্গত সবুজ বর্ণের সূতার মতো এক ধরনের বহুকোষী এবং শাখাহীন শৈবাল ।
স্পাইরোগাইরা এর অবস্থান :
স্পাইরোগাইরাকে সাধারণত সূর্যালোকযুক্ত ডোবা, নালা, পুকুর দীঘি ইত্যাদি মিঠা পানিতে মুক্তভাবে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।
স্পাইরোগাইরা কোষের গঠন (Stucture) :
স্পাইরোগাইরা কোষ প্রধানত নিম্নবর্ণিত অংশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত । যেমন-
- কোষপ্রাচীর,
- সাইটোপ্লাজম,
- নিউক্লিয়াস,
- ক্লোরোপ্লাস্ট এবং
- পাইরিনয়েড।
আগ্রহের আরও: শৈবাল ও ছত্রাক: সংজ্ঞা,বৈশিষ্ট্য,পার্থক্য,উপকারিতা ও অপকারিতা
নিম্নে স্পাইরোগাইরা কোষের বিভিন্ন অংশগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১। কোষপ্রাচীর : স্পাইরোগাইরা দেহের প্রতিটি কোষের কোষপ্রাচীর তিনটি স্তর বিশিষ্ট হয়। তন্মধ্যে ভিতরের দুটি স্তর সেলুলোজ এবং বাইরের স্তরটি পেকটোজ দ্বারা গঠিত ।
২। সাইটোপ্লাজম : স্পাইরোগাইরার প্রত্যেকটি কোষের অভ্যন্তরে একটি রসপূর্ণ বড় ভ্যাকুওল থাকে। রসপূর্ণ এই গহ্বর সংলগ্ন চারিদিকে কোষপ্রাচীর সাইটোপ্লাজমের স্তর বর্তমান থাকে। একে প্রিমরডিয়াল ইউট্রিকল’ বলে ।
৩। নিউক্লিয়াস : স্পাইরোগাইরা কোষের ভ্যাকুওলের মধ্যস্থলে একটি নিউক্লিয়াস থাকে। এ নিউক্লিয়াসটি বহুসংখ্যক সাইটোপ্লাজমের সূত্র দ্বারা সংযুক্ত থাকে। নিউক্লিয়াসাটি সুগঠিত এবং একটি নিউক্লিওলাস সম্বলিত ।
৪। ক্লোরোপ্লাস্ট : এক বা একাধিক সবুজ ফিতার মত ক্লোরোপ্লাস্ট প্রত্যেকটি কোষে সর্পিলাকার সাজানো থাকে।
৫। পাইরিনয়েড : স্পাইরোগাইরার ক্লোরোপ্লাস্টে অনেকগুলো ঘন, উজ্জ্বল, দানাদার পাইরিনয়েড বিদ্যমান থাকে। প্রতিটি পাইরিনয়েড প্রোটিন জাতীয় পদার্থ ।
উল্লেখিত অংশ ছাড়াও স্পাইরোগাইরার কোষে অনেকগুলো গলজিবস্তু, মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক জালিকা ইত্যাদি থাকে।
স্পাইরোগাইরা (Spirogyra)-এর গুরুত্ব :
নিম্নে Spirogyra-র তিনটি গুরুত্ব উল্লেখ করা হলো-
১। Spirogyra মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
২। একে বিশেষভাবে প্রক্রিয়াজাত করে মানুষের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায় ।
৩। প্রকৃতির খাদ্যচক্রে Spirogyra-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ।
স্পাইরোগাইরা (Spirogyra)এর বৈশিষ্ট্য :
১। স্পাইরোগাইরা শৈবাল বহুকোষী; একটির পর একটি বেলনাকার ও লম্বা কোষ সজ্জিত হয়ে সূত্রক গঠন করে।
২। কোষে এক বা একাধিক লম্বা ক্লোরোপ্লাস্ট সর্পিলাকারে অবস্থান করে।
৩। স্পাইরোগাইরা প্রতিটি কোষে একটি বড় গহ্বরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নিউক্লিয়াস সাইটোপ্লাজমিক সূত্র দ্বারা সংবদ্ধ থাকে।
৪। যৌন জনন বৈশিষ্ট্যসূচক সোপানাকার বা পার্শ্বীয় সংশ্লেষ দ্বারা ঘটে থাকে।
৫। স্পাইরোগাইরার জাইগোস্পোর ডিম্বাকৃতির ও মসৃণ প্রাচীরযুক্ত।
আপনার আগ্রহের আরো পোস্ট
এগারিকাস কি? এর বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব, উপকারিতা ও অপকারিতা