হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

ভাবসম্প্রসারণ : চন্দ্ৰ কহে বিশ্বে আলো দিয়েছি ছড়ায়ে

চন্দ্ৰ কহে বিশ্বে আলো দিয়েছি ছড়ায়ে, কলঙ্ক যা আছে, তাহা আছে মোর গায়ে ভাবসম্প্রসারণ 

মূলভাব : চাঁদ তার নিজের কলঙ্কের কথা মনে রাখে না। পৃথিবীকে আলোকিত করে।’ এটা তার মহত্ত্বের পরিচয়।

সম্প্রসারিত ভাব : চাঁদ তার অমল শুভ্র আলোক বন্যায় পৃথিবীকে আলোকিত করে। চাঁদের এই আলোতে পৃথিবীর মানুষ এবং অন্যান্য জীবজন্তু উপকৃত হয়। কিন্তু তার বুকে যে কালো কালো দাগ আছে সেগুলোকে পৃথিবীর মানুষ বলে তার কলঙ্ক। অথচ তার এই কলঙ্ক সে কখনো পৃথিবীতে পাঠায় না বা পৃথিবীর কেউ তার কলঙ্ক দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। বাস্তবিকপক্ষে, পৃথিবীর কেউ তার কলঙ্কের কোনো স্পর্শ পায় না। সে শুধু পৃথিবীর কল্যাণই করে থাকে। চাঁদের এই বৈশিষ্ট্যের সাথে পৃথিবীর মহৎ ব্যক্তিদের সাদৃশ্য আছে ৷

চাঁদের মতো মহৎ ব্যক্তিরাও মানুষের নানা উপকার করে থাকে। তাই বলে তাঁদের জীবন একেবারে নিষ্কলুষ নয়। ভালো-মন্দ এবং দোষ- গুণের সংমিশ্রণেই মানবজীবন গঠিত। কাজেই মহাপুরুষদের কার্যাবলি অসাধারণ গুণাবলিতে পরিপূর্ণ থাকলেও তারা যে একেবারে নির্দোষ বা ত্রুটিহীন এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। কিন্তু তাঁদের অতুলনীয় গুণাবলির অন্তরালে তাঁদের দোষ ত্রুটিগুলো ঢাকা পড়ে যায়। তাছাড়া তাঁরা কখনো তাঁদের জীবনের কলুষতার স্পর্শ কাউকে পেতে দেয় না ।

কিছু কিছু দুষ্টলোক আছে যারা মহৎ ব্যক্তিদের গুণের কথা ঢেকে রেখে দোষের কথা প্রচার করে বেড়ায়। তবু মহৎ ব্যক্তিরা সব দুঃখ-কষ্ট, আঘাত-অপমান সহ্য করেও মানুষের কল্যাণ করে থাকে। চাঁদের আলো যেমন ধনী-দরিদ্র, পাপী-তাপী সবার দ্বারেই সমানভাবে প্রবেশ করে, তেমনি মহাপুরুষরাও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমানভাবে ‘কল্যাণের চেষ্টা করে। তারা কাউকে পার্থক্য করে না । জীবনের সবটুকু ভালোবাসা স্নেহ-মমতা সবকিছু বিলিয়ে দেয় অপরের জন্য, কখনো নিজের কথা ভাবে না। এটাই তার জীবনের পরম সার্থকতা। 

মন্তব্য : চাঁদ যেমন তার আলো দিয়ে পৃথিবীকে আলোকিত করে, তেমনি মহৎ ব্যক্তিগণ মানবসেবায় নিজেদের উৎসর্গ করেন। সুতরাং মহৎ ব্যক্তিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সকলেরই নিঃস্বার্থভাবে মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করা উচিত।

Leave a Comment

error: Content is protected !!