মূলভাব : সামাজিক পদমর্যাদা ও আভিজাত্যের ওপর ভিত্তি করে অহঙ্কারী মানুষ মানুষকে অবমূল্যায়ন করে। অহঙ্কারী মানুষের এ প্রবৃত্তি অশোভনীয় ।
সম্প্রসারিত ভাব : যারা অনেক প্রতাপশালী ও অধিক সম্মানী তাদের প্রতি সবারই একটি মোহ আছে। আত্মীয় যদি দরিদ্র হয় তাহলে এক শ্রেণির অহঙ্কারী মানুষ দ্ররিদ্র শ্রেণির মানুষকে পরিচয় দিতে কুণ্ঠাবোধ করে। দরিদ্র আত্মীয়কে পরিচয় দিতে তারা লজ্জাজনক ও পদমর্যাদার হানি মনে করে। দরিদ্র আত্মীয়কে যথাসম্ভব পরিচয় না দেওয়ার প্রয়াস পায়। কবি কোরোসিন শিখাকে এখানে রূপকছলে উল্লেখ করেছেন। কেরোসিন শিখা ও মাটির প্রদীপ উভয়ে আলো দান করে। সুতরাং এরা সমগোত্রীয়। কিন্তু কোরোসিন শিখার আলো উজ্জ্বল, আর মাটির প্রদীপের আলো স্নিগ্ধ ও স্তিমিত। এজন্য কেরোসিন শিখা নিজের উজ্জ্বল আলোতে গর্বিত হয়ে মাটির প্রদীপকে সমগোত্রীয় বলে পরিচয় দিতে অপমানবোধ করে। পক্ষান্তরে চাঁদ যখন তার শুভ্র-স্নিগ্ধ আলো নিয়ে আকাশে ওঠে তখন কেরোসিন শিখা তার সাথে আত্মীয়তা করতে দ্বিধা না করে বরং আগ্রহী হয়ে ওঠে।
এরূপ আচরণ কেরোসিন শিখার হীনমন্যতার পরিচয় দেয়। আকাশে গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্রমালা ও জ্যোতিষ্কমণ্ডলী সকলেই উচ্চ শ্রেণিভুক্ত। তারা তাদের মধ্যে কোনো প্রভেদের সৃষ্টি করে না। তেমনি মানবসমাজেও যারা উদার, মার্জিত ও প্রকৃত গুণসম্পন্ন তাঁরা কোনো শ্রেণিভেদ করেন না। তাঁরা সকলকে আপনজন বলে মনে করেন।
মন্তব্য : সকলেরই উচিত ধন, মান ও দৌলতের গর্বে স্ফীত না হয়ে অসহায় গরিব আত্মীয়স্বজনকে সমগোত্রীয় মনে করা। মানুষে মানুষে প্রভেদের মনোবৃত্তি ত্যাগ করা।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা