হোম পদার্থ রসায়ন জীব ইসলামিক

আরবি রচনা : ইলম (বাংলা অর্থসহ)

ٱلْعِلْمُ / فَضِيلَةُ ٱلْعِلْمِ – فَوَائِدُ ٱلْعِلْمِ – طَلَبُ ٱلْعِلْمِ فَرِيضَةٌ – ٱلْعِلْمُ نُورٌ
ইলম বা জ্ঞান / ইলমের উপকারিতা/জ্ঞানই আলো

المُقَدَّمَةُ :

قَالَ اللَّهُ تَعَالَى فِي الْقُرْآنِ- (هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ) حَيْثُ قَسَّمَ النَّاسَ إِلَى قِسْمَيْنِ وَهُم أَصْحَابُ الْعِلْمِ وَأَصْحَابُ عَدَمِ الْعِلْمِ- الْعِلْمُ هُوَ قُوَّةٌ مُمَيِّزَةٌ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ وَالْخَيْرِ وَالشَّرِّ وَالْمَعْرُوفِ وَالْمُنْكَرِ.

مَعْنَى الْعِلْمِ:

الْعِلْمُ فِي اللُّغَةِ الْإِدْرَاكُ وَالْمَعْرِفَةُ- وَفِي الِاصْطِلَاحِ هُوَ مَلَكَةٌ تُعْرَفُ بِهَا حَقَائِقُ الْأَشْيَاءِ، وَقِيلَ هُوَ نُورٌ يَتَنَوَّرُ بِهِ صَاحِبُهُ كَمَا أَنَّ النُّورَ يُضِيءُ مَا حَوْلَهُ

আরও : আরবি রচনা : মাদ্রাসা (বাংলা অনুবাদ সহ)

أَنْوَاعُ الْعِلْمِ:

الْعِلْمُ نَوْعَانِ: ١- عِلْمُ الدِّينِ :٢ -عِلْمُ الدُّنْيَا- عِلْمُ الدِّينِ هُوَ الْعِلْمُ الَّذِي يَشْتَمِلُ عَلَى عُلُومِ الْقُرْآنِ وَالْحَدِيثِ وَالْفِقْهِ وَالْعَقَائِدِ وَالتَّوْحِيدِ وَغَيْرِ ذٰلِكَ- وَمَالَا بُدَّ مِنْهُ لِفَهْمِ الْقُرْآنِ وَالْأَحَادِيثِ كَالنَّحْوِ وَالصَّرْفِ وَغَيْرِها- أَمَّا عِلْمُ الدُّنْيَا هُوَ مَا يَتَعَلَّقُ بِحُصُولِ الدُّنْيَا كَعِلْمِ الطِّبِّ وَالْهَنْدَسَةِ وَالْجُغْرَافِيَّةِ وَالْحِسَابِ وَغَيْرِهَا.

أَهَمِّيَّةُ الْعِلْمِ

لِلْعِلْمِ أَهَمِّيَّةٌ بَالِغَةٌ لِأَحَدٍ لَهَا- يَسْتَحْصِيلُ الْعِلْمُ يَعْرِفُ الْإِنسَانُ سَبِيلَ الْهُدَايَةِ وَالرُّشْدِ، وَيَعْرِفُ اللَّهَ، وَيَعْرِفُ الرَّسُولَ، وَيَعْرِفُ الدِّينَ- إِذَا وُجِدَ الْعِلْمُ يَسْتَطِيعُ الْإِنْسَانُ أَنْ يَتَبَيَّنَ مِنْ مَكِيدَةِ الشَّيْطَانِ، وَهُوَ فِي نَظَرٍ الشَّرِيعَةِ بِنَظَرِ الْإِيمَانِ وَشَرْطٌ لَهُ- وَهُوَ سَبِيلٌ لِنَهْضَةِ الْأُمَّةِ وَوَسِيلَةُ التَّقَدُّمِ لِكُلِّ فَرْدٍ وَمُجْتَمَعٍ.

আরও : আরবি রচনা : কুরআনুল কারীম – অনুবাদ সহ

حُكْمُ طَلَبِ الْعِلْمِ

طَلَبُ الْعِلْمِ أَيْ عِلْمُ الدِّينِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ، قَالَ النَّبِيُّ ﷺ: طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ. وَطَلَبُ عِلْمِ الدُّنْيَا كَعِلْمِ الطِّبِّ وَالْهَنْدَسَةِ وَالْعُلُومُ إِذَا لَمْ يُخَالِفِ الْقُرْآنَ وَالسُّنَّةَ فَهُوَ مَفْرُوضٌ كِفَايَة

فَضَائِلُ الْعِلْمِ :

لِلْعِلْمِ فَضْلٌ كَثِيرٌ. مِنْ هَذِهِ الْفَضَائِلِ: إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يُحِبُّ صَاحِبَ الْعِلْمِ وَيَرْفَعُ دَرَجَتَهُ. قَالَ تَعَالَى: (يَرْفَعِ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ). وَأَنَّ اللَّهَ تَعَالَى سَهَّلَ اللَّهُ بِهِ طَرِيقَ الْجَنَّةِ لِطَالِبِ الْعِلْمِ حَيْثُ قَالَ عَلَيْهِ السَّلَامُ: “مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ”.

وَفِي فَضْلِ طَلَبِ الْعِلْمِ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ: “إِنَّ الْمَلَائِكَةَ لَتَضَعُ أَجْنِحَتَهَا لِطَالِبِ الْعِلْمِ رِضًى بِمَا صْنَعُ. وَإِنَّ الْعَالِمَ يَسْتَغْفِرُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ حَتَّى الْحِيتَانُ فِي جَوْفِ الْمَاءِ. وَفَضْلُ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ. وَإِنَّ الْعُلَمَاءَ وَرَثَةُ الْأَنْبِيَاءِ”. أَنَّ أَهْلَ الْعِلْمِ أَعْلَى دَرَجَةً فِي الْمُجْتَمَعِ.

الْخَاتِمَةُ:

إِنَّ الْعِلْمَ لَهُ فَضْلٌ كَبِيرٌ، وَهُوَ وَسِيلَةُ الْهُدَايَةِ وَالتَّقَدُّمِ فِي الْمُجْتَمَعِ. فَعَلَيْنَا أَنْ نَبْذُلَ الْجُهْدَ لِتَحْصِيلِهِ. وَنَدْعُو إِلَى الْبَارِي تَعَالَى: “رَبِّ زِدْنِي عِلْمًا”.

আরও : আরবি রচনা : পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য/ আনুগত্য /সদ্ব্যবহার

ভূমিকা :

আল্লাহ তা’আলা কুরআনে কারীমে বলেন- “যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান হতে পারে।” এভাবে তিনি মানুষকে দু’ভাগে ভাগ করেছেন, জ্ঞানী আর মূর্খ। বিদ্যা এমন এক শক্তি যার মাধ্যমে হক ও বাতিল, ভাল-মন্দ এবং সৎকাজ ও অসৎকাজের মধ্যে পার্থক্য করা যায়।

ইলমের অর্থ :

আভিধানিক অর্থে ইলম অর্থ হলো বুঝা, অনুধাবন করা এবং জানা । আর পরিভাষায়, উহা আল্লাহ প্রদত্ত এমন এক শক্তি যার মাধ্যমে কোন জিনিষের প্রকৃতি সম্পর্কে জানা যায় ।

কেউ কেউ বলেন, উহা এমন আলো যার মাধ্যমে ব্যক্তি আলোকিত হয় যেমনিভাবে আলো তার চারদিককে আলোকিত করে।

ইলমের প্রকারভেদ :

ইলম দু’ প্রকার। যথা- (১) দ্বীনী ইলম বা জ্ঞান (২) পার্থিব ইলম বা জ্ঞান । দ্বীনী জ্ঞান বলতে এমন জ্ঞানকে বুঝায় যা কুরআন, হাদীস, ফিক্হ, আকাইদ ও তাওহীদ সহ কুরআন এবং হাদীস বুঝতে সহায়ক বিষয় যেমন নাহু, ছরফ ইত্যাদি জ্ঞানকে বুঝায় ।

আর পার্থিব জ্ঞান বলতে এমন বিষয়ের জ্ঞানকে বুঝায় যার মাধ্যমে পার্থিব বস্তু অর্জন করা যায়। যেমন- ডাক্তারী, ইঞ্জিনিয়ারিং, ভূগোল, বিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান ইত্যাদি ।

ইলমের গুরুত্ব :

ইলমের গুরুত্ব অপরিসীম। জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে মানুষ হিদায়াতের পথ চিনতে সক্ষম হয়। আল্লাহকে জানতে পারে, রাসূলকে জানতে পারে, দ্বীনকে জানতে পারে। জ্ঞান থাকলে মানুষ শয়তানের প্ররোচনা থেকে সতর্ক থাকতে পারে। ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে জ্ঞান হচ্ছে ঈমানের বীজ ও শর্ত, ব্যক্তি ও সমাজের অগ্রগতির মাধ্যম হচ্ছে জ্ঞান ।

ইলম অর্জনের হুকুম :

ইলম দ্বীন অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরয। তাইতো রাসূল (স) বলেছেন- “প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর বিদ্যা অন্বেষণ করা ফরয।” আর ডাক্তারী, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞান ইত্যাদির মত। যে সকল পার্থিব জ্ঞান কুরআন ও সুন্নাহর বিরোধী না হলে তা অর্জন করা ফরজে কিফায়াহ ।

ইলমের মর্যাদা :

ইলমের মর্যাদা অনেক। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলা জ্ঞানীকে ভালবাসেন এবং তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন । আল্লাহ তা’আলা এ সম্পর্কে ইরশাদ করেন- “আল্লাহ তা’আলা তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদের এবং যাদের জ্ঞানদান করা হয়েছে তাদের মর্যাদা সুউচ্চ করেন।”আর আল্লাহ তা’আলা জ্ঞান অন্বেষণকারীর জান্নাতে যাবার পথকে সুগম করে দেন। এ প্রসঙ্গে রাসূল (স) বলেছেন- “ইলম অর্জনের জন্য যে ব্যক্তি পথ চলল আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ ও সুগম করে দেন।

রাসূল (স) ইলেম অন্বেষণের মর্যাদা বর্ণনা করতে গিয়ে আরো বলেন- “ছাত্রদের কাজে সন্তুষ্ট হয়ে ফিরিশ্তাগণ তাদের ডানা তাদের জন্য বিছিয়ে দেয়, আর আলিম বা জ্ঞানী ব্যক্তিদের জন্য আকাশ মণ্ডল এবং ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে এমনকি পানির মাছ পর্যন্ত দোয়া করে । আর সাধারণ ‘ইবাদাতকারীর চেয়ে আলিমের মর্যাদা তদ্রূপ যেমনটি সকল নক্ষত্রের উপর চাঁদের মর্যাদা । আলিমগণ হচ্ছে নবীদের উত্তরাধিকারী।” সমাজে জ্ঞানীদের জন্য সর্বোচ্চ মর্যাদা ।

শেষকথা :

ইলেমের বিরাট মর্যাদা রয়েছে। উহা হিদায়াত লাভ ও সমাজ অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম । সুতরাং উহা অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের সকল চেষ্টা ব্যায় করা উচিৎ। আর আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিৎ এই বলে- “হে আল্লাহ তুমি আমার জ্ঞান বৃদ্ধি কর।”

Leave a Comment