ফেলে সহীহ (فِعْلٌ صَحِيحٌ)
আভিধানিক অর্থ : صَحِيحٌ (সহীহ) এর আভিধানিক অর্থ হলো – বিশুদ্ধ, ক্রটিমুক্ত ইত্যাদি।
পারিভাষিক সংজ্ঞা : সরফ শাস্ত্রবিদদের পরিভাষায়, যার মূল অক্ষরে হরফে ইল্লাত (حَرْفُ عِلَّةٍ) ও একইজাতীয় দুটি অক্ষর পাওয়া যায়না, তাকে ফেলে সহীহ বলে।
হরফে ইল্লাত তিনটি। যথা-أَلِفٌ , وَاوٌ ও يَاءٌ । যেমন – جَلَسَ- كَتَبَ – نَصَرَ ইত্যাদি।
ফেলে সহীহ এর প্রকারভেদ :
ফেলে সহীহ প্রধানত ২প্রকার। যথা-
১। سَالِمٌ
২। مُضَعَّفٌ
১। سَالِمٌ : যে সকল ফেল এর মূল অক্ষর গুলো হামযা, দ্বিত্ব হওয়া ও হরফে ইল্লাত থেকে মুক্ত তাকে سَالِمٌ বলে। যেমন – جَلَسَ- حَضَر- ضَرَبَ ইত্যাদি।
আরো জানো : ফেল(فِعْلٌ) এর সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, আলামত ও নামকরণ
২। مُضَعَّفٌ : যে সকল ফেল এর মূল অক্ষর সহীহ হবে তবে তন্মধ্যে দুটি অক্ষর সমজাতীয় হবে তাকে مُضَعَّفٌ বলে।
مُضَعَّفٌ আবার ২প্রকার। যথা –
ক. مُضَعَّفٌ ثُلَاثِيٌّ : যার عَيْنٌ ও لَامٌ কালেমা সমজাতীয় হয়ে দ্বিত্ব হবে তাকে مُضَعَّفٌ ثُلَاثِيٌّ বলে। যেমন – عَدّ- مَدَّ- بَدَّ ইত্যাদি।
খ. مُضَعَّفٌ رُبَاعِيٌّ : যার প্রথম ও তৃতীয় অক্ষর এবং দ্বিতীয় ও চতুর্থ অক্ষর এক জাতীয় হবে তাকে مُضَعَّفٌ رُبَاعِيٌّ বলে। যেমন – وَسْوَسَ- زَلْزَلَ ইত্যাদি।
مَهْمُوزٌ (মাহমুজ)
সংজ্ঞা : مَهْمُوزٌ শব্দের শাব্দিক অর্থ- হামযা বিশিষ্ট। পরিভাষায় যার মূল অক্ষরের কোনো একটি অক্ষরে হামযা হয় তাকে مَهْمُوزٌ বলে। যেমন – سَأَلَ، قَرَأَ، أَمَرَ ইত্যাদি।
مَهْمُوزٌ (মাহমুজ) এর প্রকারভেদ :
مَهْمُوزٌ ৩ প্রকার। যথা –
১। مَهْمُوزٌ فَاء
২। مَهْمُوزٌعَيْن
৩। مَهْمُوزٌ لَام
১। مَهْمُوزٌ فَاء: যে শব্দের মূল অক্ষরের প্রথম অক্ষরটি হামযা হয়, তাকে مَهْمُوزٌ فَاء বলে। যেমন – أَمَرَ( সে আদেশ দিল), أَكَلَ (খাওয়া) ইত্যাদি।
আরো জানো : ইলমে সরফ: অর্থ, সংজ্ঞা, আলোচ্য বিষয়, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
২। مَهْمُوزٌعَيْن : যে শব্দের মূল অক্ষরের দ্বিতীয় অক্ষরটি হামযা হয়, তাকে مَهْمُوزٌعَيْن বলা হয়। যেমন – سَأَلَ (সে প্রশ্ন করল), رَأَسَ (মাথা) ইত্যাদি।
৩। مَهْمُوزٌ لَام : যে শব্দের মূল অক্ষরের শেষ অক্ষরে হামযা হয়, তাকে مَهْمُوزٌ لَام বলা হয়। যেমন – قَرَأَ (সে পড়ল), سُوءٌ (খারাপ ) ইত্যাদি।
মু'তাল (مُعْتَل)
مُعْتَل এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে , হরফে ইল্লাত (حَرْفُ عِلَّة) বিশিষ্ট। পরিভাষায় যে শব্দের মূল অক্ষরে হরফে ইল্লাত এর وَاو ও يَاء থেকে একটি বা দুটি অক্ষর হয়, তাকে মু’তাল বলে। যেমন – وَعَدَ (সে অঙ্গীকার করল), وَحْيٌ প্রত্যাদেশ।
মু’তাল এর প্রকারভেদ :
মু’তাল ৪ প্রকার। যথা –
১। مِثَالٌ : যার فَاءٌ كَلِمَةٌ টি অর্থাৎ প্রথম অক্ষরটি হরফে ইল্লাত হবে। যেমন – وَلَدَ، وَجَدَ، يَئِسَ، يَتِيمٌ، وَسِعَ، يَنَعَ ইত্যাদি।
২। أَجُوفٌ : যার عَيْنُ كَلِمَةٍ টি অর্থাৎ দ্বিতীয় অক্ষরটি হরফে ইল্লাত হবে। যেমন – قَالَ، صَامَ، بَاعَ ইত্যাদি।
৩। نَاقِصٌ : যার لَامُ كَلِمَةٍ অর্থাৎ শেষ অক্ষরটি হরফে ইল্লাত হবে। যেমন – سَمَا، رَمَا، سَعَى ইত্যাদি।
৪। لَفِيفٌ : যার মধ্যে দুটি হরফে ইল্লাত হবে। এটি ২ভাগে বিভক্ত :
ক। لَفِيفٌ مُفْرُوقٌ : যে সকল শব্দের মূল অক্ষর সমূহের فَاءٌ কালেমা এবং لَامُ কালেমা হরফে ইল্লাত হবে তাকে لَفِيفٌ مَقْرُونٌ বলে। যেমন -وَحْيٌ، شَيْءٌ ইত্যাদি।
খ। لَفِيفٌ مَقْرُونٌ : যে সকল শব্দের মূল অক্ষর সমূহের فَاءٌ কালেমা ও عَيْنُ কালেমা কিংবা عَيْنُ কালেমা ও لَامُ কালেমায় হরফে ইল্লাত হয় তবে তাকে لَفِيفٌ مَقْرُونٌ বলে। যেমন – وَيْلٌ، قَوِيٌ، طَيٌّ ইত্যাদি।
আরো জানো : ফেলে লাজিম ও ফেলে মুতাআদ্দি কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি