উপস্থাপনা
মানুষের কাজকর্মে, চাল-চলনে, আচার-ব্যবহারে, কথাবার্তায় যখন একটি বিশেষ ভূমিকা পরিলক্ষিত হয় তখন তাকে চরিত্র বলে। চরিত্র মানুষকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য দান করে। চরিত্র মানুষকে বিশিষ্ট করে তোলে।
চরিত্রের মাধ্যমে মানুষ লোকসমাজে নিজের পরিচয় তুলে ধরে। এ কারণে চরিত্র মানুষের জীবনের প্রধান এবং শ্রেষ্ঠ সম্পদ। এটি মানবজীবনের মুকুটস্বরূপ। কতকগুলো মহৎ গুণের সমন্বিত সমাহারই চরিত্র।
চরিত্রের সংজ্ঞা
চরিত্র বলতে যে ধারণা বোঝায় তার মধ্যে আছে কতকগুলো গুণের সমাবেশ। যে সত্য ও ন্যায়ের পথে বিচরণ করে, কাজেকর্মে আন্তরিকতা দেখায়, সকল মানুষের জন্য যার সহানুভূতি সঞ্চিত থাকে, যে পরের কল্যাণ করতে আগ্রহী এমন লোককে চরিত্রবান বলে মনে করা হয়। মানবজীবনের সব গুণের সমন্বয়ে চরিত্র গড়ে ওঠে বলে চরিত্রবান মানুষ সকলের কাছে শ্রেষ্ঠ।
আরও পড়ুন : সত্যবাদিতা রচনা – ( ২০ পয়েন্ট )
তাই প্রত্যেক মানুষের লক্ষ্য জীবনের সকল আচার-আচরণের মাধ্যমে এমন বৈশিষ্ট্যের পরিচয় দেয়া যাতে সুন্দর চরিত্র গড়ে উঠতে পারে। পরিণামে সে শ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে মর্যাদা পেতে পারে। ফুলের সৌরভ যেমন চারদিকে ছড়িয়ে মানব হৃদয়কে মোহিত করে, তেমনি মহৎ চরিত্রের সৌন্দর্য সকলের মনকে আকৃষ্ট করে। সত্যনিষ্ঠা, অন্যায়ের প্রতি অনীহা, প্রলোভনকে জয় করা, নৈরাজ্যকে উপেক্ষা করা- এ সবই উত্তম চরিত্রের বৈশিষ্ট্য বলে বিবেচিত।
চরিত্রের প্রকারভেদ
চরিত্র দুই প্রকার। যথা,
১. আখলাকে হামিদা বা প্রশংসনীয় চরিত্র। ২. আখলাকে যামিমা বা মন্দ চরিত্র।
চরিত্রবানের লক্ষণ
সমস্ত ঈর্ষা-বিদ্বেষ, অন্যায়, অহমিকাবোধ ও দাম্ভিকতা থেকে মুক্ত ব্যক্তিই সমাজে চরিত্রবান বলে বিবেচিত হয়। চরিত্রবান ব্যক্তি কখনো সত্য পথ থেকে স্থলিত হন না, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না, ক্রোধে আত্মহারা হন না, কারও সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করেন না । তিনি সত্যবাদী, জিতেন্দ্রিয় ও ভক্তিপরায়ণ হয়ে থাকেন ।
চরিত্র গঠনের উপায়
পরিবার চরিত্র গঠনের প্রধান এবং প্রথম ধাপ। সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের স্তর অনুযায়ী শিশুর চরিত্র গঠিত হয়। চরিত্র গঠনের জন্যে পরিবেশ বহুলাংশে দায়ী। কথায় বলে— “সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।’ আবার ‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে ।’ তাই শিশু যেন কুসঙ্গে মিশতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চরিত্র সাধনার ধন। বহুদিনের সাধনার দ্বারা তা অর্জন করতে হয়।
আরও পড়ুন : সময়ানুবর্তিতা / সময়ের মূল্য – রচনা (২০ পয়েন্ট )। PDF
পরিবারের বাইরে প্রতিবেশী ও সহচর শিশুদের চরিত্র গঠনে সহায়তা করে। বিদ্যালয়ে পাঠাভ্যাসকালে বা সমবয়স্কদের সঙ্গে খেলাধুলার সময় সঙ্গ প্রভাবে চরিত্র নানারূপ লাভ করে। সেজন্যে অভিভাবক বা শিক্ষকবৃন্দের লক্ষ রাখা উচিত— লেখাপড়ার ভেতর দিয়ে শিশুদের চরিত্র কীভাবে গড়ে উঠছে । চরিত্র গঠনে ধর্মের প্রভাব অসত্য ও অন্যায় থেকে বিরত থাকতে প্রেরণা জোগায় ।
মহামানবদের আদর্শ
পৃথিবীতে যে সমস্ত মহামানব প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে আছেন, তাঁরা সকলেই ছিলেন চরিত্রবান। মহাপুরুষগণ আপন চরিত্র বলে জগতে অসাধ্য সাধন করে গেছেন; অসম্ভবকে করেছেন সম্ভব। মহামানব হযরত মুহম্মদ (স.)-এর আদর্শ বিশ্ববাসীর জন্যে অনুকরণীয়। এ ছাড়া ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, হাজী মুহম্মদ মহসীন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক প্রমুখ মহাপুরুষ চরিত্রের গুণে বিশ্ব ইতিহাসে মহান ব্যক্তিত্ব হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছেন ।
চরিত্রের মূল্য
বিশ্বের স্মরণীয় মহাপুরুষগণ চরিত্রকে মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে অভিহিত করেছেন। চরিত্র সকল সম্পদের ঊর্ধ্বে। চরিত্রবান মানুষ সর্বজাতির নমস্য। চরিত্রবান মানুষের অদম্য কর্মশক্তিতে মানবজাতির মহাকল্যাণ সাধিত হয়ে থাকে। কথায় আছে- ধনীর জোর ধনের, আর চরিত্রবানের জোর হৃদয়ের। যিনি চরিত্রবান, তিনি মানবশ্রেষ্ঠ।
হাদিসে বর্ণিত আছে— ‘ঈমানদার সেই ব্যক্তি, যে ব্যক্তি অসাধারণ চরিত্রের অধিকারী।’ চরিত্রই মানুষকে মানুষের মাঝে শ্রেষ্ঠ করে তোলে। চরিত্র মানবজীবনের অমূল্য সম্পদ। শুধু চরিত্রবান লোকই পৃথিবীতে মহৎ কাজ করতে পারেন । তাঁদের কর্মসাধনায় পৃথিবী আজ এমন সুন্দর হয়ে গড়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন : অধ্যবসায় – রচনা : ২০ পয়েন্ট | সাথে pdf
চরিত্র গঠনে ছাত্রজীবনের গুরুত্ব
ছাত্রজীবন মানবজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় জীবনকে পরিপূর্ণরূপে তৈরি করে নেওয়া হয়। ছাত্রজীবনেই পরবর্তী জীবনের ভিত্তি নির্মিত হয়। যারা এ সময় কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে অধ্যয়ন করে তারা জীবনে সফলতা লাভ করে। তারা পরবর্তী জীবনে সকল ক্ষেত্রেই সফলতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়। তারাই রাষ্ট্রযন্ত্রের কর্ণধার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে। কিন্তু ছাত্রজীবনে যারা হেলাফেলা করে কাটায় তাদের জীবনে আসে ব্যর্থতা। দীর্ঘশ্বাস ও হাহাকার নিয়ে তাদের জীবন অতিবাহিত হয় ।
চরিত্র গঠনের প্রতিবন্ধকতা
অসৎ সঙ্গের প্রভাব চরিত্র গঠনের প্রধান প্রতিবন্ধক। অসৎ সঙ্গে পড়ে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়। ফলে জীবনের সার্থক ও সুন্দর বিকাশ আশা করা যায় না। সৎ সঙ্গের প্রভাবে জীবন সার্থক ও সুন্দর হয়। তাই সর্বদা অসৎ সঙ্গ থেকে দূরে থাকতে হবে।
আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় ও শিক্ষাক্ষেত্রে যে অবস্থা বিরাজ করছে তা চরিত্র গঠনের প্রতিবন্ধক। চরিত্র গঠনের জন্য আরও প্রয়োজন সুন্দর অনুসরণযোগ্য আদর্শ। এখন আর সে ধরনের আদর্শ আমরা সমাজে দেখতে পাই না।
চরিত্র গঠনের গুরুত্ব
চরিত্র মানবজীবনের মুকুটস্বরূপ। তা অর্জন অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। উত্তম চরিত্র গঠন করা গেলে জীবন সার্থক। ছাত্রজীবনেই উত্তম চরিত্র গঠনের শিক্ষা অর্জন সম্ভব। তাই উন্নত চরিত্র গঠনের জন্য ছাত্রজীবনকেই বেছে নিতে হবে। কঠোর সাধনার দ্বারা উন্নত চরিত্র অর্জন করতে পারলেই ছাত্রজীবন সফল। চরিত্রবান ব্যক্তিকে সকলে শ্রদ্ধা ও সম্মান করে। সবাই তাকে বিশ্বাস করে । তিনি স্থান, কাল ও পাত্রভেদে সকলের কাছেই সমানভাবে সমাদৃত হন ।
চরিত্রের বৈশিষ্ট্য
চরিত্র বলতে যে ধারণা বোঝায় তাতে আছে কতকগুলো গুণের সমাবেশ। সত্য ও ন্যায়ের পথে যে বিচরণ করে, কাজেকর্মে যে আন্তরিকতা দেখায়, সকল মানুষের জন্য যার মনে সহানুভূতি সঞ্চিত থাকে, পরের কল্যাণের জন্য যার আগ্রহের অন্ত নেই, এমন লোকের মধ্যে চরিত্র আছে বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন মহানবী সাঃ এর জীবনী- রচনা: ৫০০, ৭০০ ও ১০০০ শব্দ- PDF (৩টি)
মানবজীবনে সবগুলো গুণের সমাবেশে চরিত্র গড়ে ওঠে বলে চরিত্রবান মানুষই সকলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং বিশ্বের মানবজীবনকে আনন্দময় করার জন্য তাদের অবদান অনস্বীকার্য। তাই মানুষের লক্ষ্য জীবনের সকল আচার আচরণের মাধ্যমে এমন চমৎকার বৈশিষ্ট্যের পরিচয় দেওয়া যাতে সুন্দর চরিত্র গড়ে উঠতে পারে এবং পরিণামে শ্রেষ্ঠ মানব হয়।
ফুলের সৌরভ যেমন চারদিকে ছড়িয়ে মানব-হৃদয়কে মোহিত করে, তেমনি মহৎ চরিত্রের সৌন্দর্য সকলের মন আকৃষ্ট করে এবং সবার হৃদয়ে একটা শ্রদ্ধা ও মর্যাদার আসন লাভ করতে সমর্থ হয়। সত্যের প্রতি নিষ্ঠা, অন্যায়ের প্রতি অনীহা, প্রলোভনকে জয় করা, নৈরাজ্যকে উপেক্ষা করা; এসবই চরিত্রের বৈশিষ্ট্য বলে বিবেচনার যোগ্য।
চরিত্র গঠনে ব্যক্তি ও পরিবেশের প্রভাব ঃ
চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে পরবর্তী ভূমিকা হচ্ছে পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও সঙ্গদোষ । কারণ কথায় বলে-
“সৎসঙ্গে স্বর্গবাস,
অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।”
শিশুর শিক্ষা জীবনে তার সহপাঠী ও শিক্ষকদের আচার-আচরণ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা তার চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সচ্চরিত্রের সুফল
চরিত্রবান ব্যক্তি সমাজের আদর্শ। সচ্চরিত্র সুখ- শান্তির মূল উৎস। একজন ধনহীন মানুষ কেবল চরিত্রের গুণে পায় শ্রদ্ধা এবং জীবনযাপনে সুখ-শান্তি। চরিত্রবান ব্যক্তির ওপর দেশ ও জাতির উন্নতি নির্ভর করে। সকল কালে ও সকল স্থানে চরিত্রবান ব্যক্তিকে সবাই ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে।
আরও পড়ুন : রচনা : শিষ্টাচার ( ২০ পয়েন্ট )। SSC, HSC
চরিত্রহীনতার কুফল
চরিত্র মানবের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ। যার চরিত্র নেই,তার কিছুই নেই। চরিত্রহীন মানুষ পশুর চেয়েও অধম। সে সকলের ঘৃণার পাত্র। সে মানুষ নামের কলঙ্ক। মানুষের জীবনে সব পাওয়া সম্ভব, যদি সে চেষ্টা করে। কিন্তু চরিত্র হারালে সবকিছু হারাতে হয়। চরিত্রহীন ব্যক্তির বিদ্যাবুদ্ধি ধন প্রভৃতি যতই থাকুক না কেন, কিছুতেই সে মানুষের মন জয় করতে পারবে না । চরিত্রহীনকে সকলেই ভয় করে, ঘৃণা করে। তারা শুধু মানুষের অভিশাপ ও অপবাদের পাত্র হয়ে থাকে সমাজের অযোগ্য ব্যক্তি হিসেবেও চিহ্নিত হয় ।
চরিত্র গঠনে পরিবেশের ভূমিকা
চরিত্র গঠনে পরিবেশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপর নির্ভর করে চরিত্র গঠিত হয়। পরিবারের বাইরে প্রতিবেশীগণ ও সহচরগণ শিশুদের চরিত্র গঠনে সহায়তা করে। পরিবেশ যদি অনুকূল হয়, সুন্দর হয়, তবে জীবনের বিকাশ সুষ্ঠু হবে। পরিবেশ প্রতিকূল হলে মানুষের চরিত্র বিনষ্ট হয়। মন্দ পরিবেশ থেকে ভালো চরিত্রের মানুষ আশা করা যায় না।
তাই পরিবেশ যাতে কলুষিত না হয় সেদিকে সকলের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে। কুসংসর্গের প্রভাব চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। অসৎসঙ্গে পড়ে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়। ফলে চরিত্রের সার্থক ও সুন্দর বিকাশ আশা করা যায় না। সৎ সঙ্গের প্রভাবে জীবন সুন্দর ও মধুময় হয়, উত্তম চরিত্র গঠিত হয়। তাই অসৎ সঙ্গের দ্বারা সৃষ্ট পরিবেশ থেকে সব সময় দূরে থাকতে হবে ।
চরিত্র গঠন
চরিত্র গঠনের জন্য মানুষকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হয়। মানবশিশুর জন্মের পর থেকে শৈশব ও কৈশোর অতিক্রমের সময় পর্যন্ত চরিত্র গঠনের কাল। জীবনের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমান্বয়ে এমন একটি পর্যায় আসে যখন জীবনের বৈশিষ্ট্যের দাঁড়িয়ে যায়। পরবর্তী জীবনে হয়তো আর তেমন পরিবর্তন আসে না।
তাই চরিত্র গঠনের জন্য জন্মের পর থেকে কাজ শুরু হয় । মাতাপিতার হাতে চরিত্রের প্রথম রূপায়ণ এবং শিক্ষক ও অন্যান্য অভিভাবক আর পরিবেশের প্রভাব পড়ে আস্তে আস্তে একটি স্বতন্ত্র ও বিশিষ্ট কাঠামো দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন : শ্রমের মর্যাদা রচনা ২০ পয়েন্ট [ SSC এবং HSC ] – PDF
যতদিন পর্যন্ত শিশুর নিজস্ব বুদ্ধিবৃত্তির পরিপূর্ণ বিকাশ না ঘটে ততদিন পর্যন্ত চরিত্র গঠনের জন্য অভিভাবকের সযত্ন প্রয়াস চালাতে হয়। কীভাবে শিশুর মধ্যে মহৎ গুণাবলির বিকাশ ঘটবে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। সমুদয় শিক্ষাব্যবস্থার উদ্দেশ্য যাতে জীবনে সফলভাবে প্রতিফলিত হতে পারে সে বিষয়েও লক্ষ রাখতে হবে। সুশিক্ষা লাভ হলে চরিত্র গঠন সহজ হয়।
চরিত্র সম্পর্কে মূল্যায়ন
মানবজীবনে চরিত্রের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়। হযরত মুহম্মদ (স) তাঁর ব্যক্তিগত চরিত্রগৌরব, সত্যপ্রিয়তা ও বিশ্বস্ততার জন্য আল-আমিন উপাধি লাভ করেছিলেন বিভিন্ন দেশের সমাজসংস্কারক, নেতৃবৃন্দসহ চরিত্রবান মানুষেরা এখনও নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল মহিমায় মানুষের মনে মনে যুগে যুগে বেঁচে আছেন।
আগামীতেও বেঁচে থাকবেন। কারণ, সংস্কৃতে একটি শ্লোক আছে- ‘শরীরংক্ষণ বিধ্বংসী কল্পন্ত স্থায়িনোগুণাঃ”, অর্থাৎ শরীর অল্প সময়ের জন্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, আর চরিত্র চিরস্থায়ী। তাই চরিত্রবান ব্যক্তিরা মানবইতিহাসের পাতায় অক্ষয় হয়ে থাকেন।
দৃষ্টান্ত
পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক চরিত্রবান ব্যক্তির নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। যাদের অবদান যুগ-যুগান্তর মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। আমাদের শেষ নবি হযরত মুহাম্মদ (স)-কে এ দৃষ্টান্তের প্রথমেই স্মরণ করতে হয়। কারণ সচ্চরিত্রের যতগুলো গুণ, তার সবই এ মহামানবের চরিত্রে বিদ্যমান ছিল। হযরত বায়েজীদ বোস্তামী, আবদুল কাদের জিলানী, হাসান বসরী, রাবেয়া বসরী (র), দার্শনিক সক্রেটিস, উপমহাদেশের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সবাই চরিত্রগুণে শ্রেষ্ঠ ছিলেন।
চরিত্র গঠনের প্রয়োজনীয়তা
চরিত্রবান ব্যক্তিকে সবাই ভালোবাসে। সে সমাজে সম্মান ও ভক্তির পাত্র। চরিত্রবান ব্যক্তিকে মানুষ আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে। সচ্চরিত্রবান ব্যক্তি দ্বারা সমাজ, রাষ্ট্র ও ধর্মের বিকাশ এবং উন্নতি ঘটে। সচ্চরিত্র সুখ ও শান্তির মূল। পৃথিবীর সব মহামানবই চরিত্রগুণে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছেন। চরিত্রমাধুর্যই মানুষকে অমর করে রাখে ।
উপসংহার
চরিত্র মানব জীবনের অমূল্য সম্পদ। তা মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের পর্যায়ে উন্নীত করে। চরিত্র মানুষকে যথার্থ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। চরিত্র বলে বলীয়ান হলে সকল কাজে সাফল্য আসে। জীবনে সার্থক হওয়ার
জন্য চরিত্র গঠনে মনোযোগী হওয়া দরকার। বিশ্বের ইতিহাসে যাঁরা শ্রেষ্ঠতম ও পূজনীয় ব্যক্তিত্ব তারা যথার্থ চরিত্রবান লোক। তাই মহৎ চরিত্রের আদর্শকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে হবে।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও
স্বদেশ প্রেম – রচনা : [ ২০ পয়েন্ট ]