আভিধানিক অর্থ : فِعْلٌ (ফেল ) শব্দটি একবচন, বহুবচনে أَفْعَالٌ বাবে فَتَحَ মাদ্দাহ ل – ع – ف জিনসে সহীহ। শাব্দিক অর্থ হলো, সংঘটিত হওয়া, কাজ, কর্ম ইত্যাদি।
পারিভাষিক সংজ্ঞা : যে কালিমা নিজেই নিজের অর্থ প্রকাশে স্বয়ংসম্পূর্ন এবং তিনটি কাল তথা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত যে কোনো একটি কালও তাতে পাওয়া যায় তাকে ফেল বা ক্রিয়া বলে।
যেমন – نَصَرَ (সে সাহায্য করছে), يَأْكُلُ ( সে খাচ্ছে বা খাবে) ইত্যাদি।
ফেল ( فِعْلٌ ) এর প্রকারভেদ :
ফেল প্রধানত ৩ প্রকার। যথা –
১। فِعْل مَاضِي তথা অতীতকালীন ক্রিয়া।
২। فِعْل مُضَارِعٌ বর্তমান ও ভবিষ্যতকালীন ক্রিয়া।
৩। فِعْل أَمْرٍ তথা আদেশ সূচক ক্রিয়া।
আরও জানুন : ইসম : অর্থ, সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, আলামত ও উদাহরণ সমূহ
১। فِعْل مَاضِي : যে ক্রিয়াপদ দ্বারা অতীতকালের কোনো কাজ করা বা হওয়া বোঝায়, তাকে فِعْل مَاضِي বলে। যেমন – ذَهَبَ ( সে গেল), نَصَرَ ( সে সাহায্য করল), شَرِبَ ( সে পান করল) ।
২। فِعْل مُضَارِعٌ : যে ক্রিয়াপদ দ্বারা বর্তমান ও ভবিষ্যতকালে কোনো কাজ করা হচ্ছে বা হবে বোঝায়, তাকে فِعْل مُضَارِعٌ বলে। যেমন – يَذْهَبُ ( সে যাচ্ছে বা যাবে), يَنْصُرُ (সে সাহায্য করছে বা করবে), يَشْرَبُ ( সে পান করছে বা করবে) ।
৩। فِعْل أَمْرٍ : যে ক্রিয়াপদ দ্বারা সম্বোধিত ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো কিছু চাওয়া হয়, তাকে فِعْل أَمْرٍ বলে। সাধারণত এ ধরনের ক্রিয়া দ্বারা আদেশ, অনুরোধ, অনুজ্ঞা ইত্যাদি বোঝানো হয়। যেমন – أِذْهَبْ ( তুমি যাও ), اُنْصُرْ ( তুমি সাহায্য কর)।
ফেল (فِعْلٌ)-এর নামকরণ :
فِعْل শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো- কাজ । বাংলা ব্যাকরণের পরিভাষায়- فِعْل-কে কাজ বা ক্রিয়া বলা হয় । যেহেতু প্রত্যেকটি فِعْلٌ দ্বারা এক একটি কাজ করা হয়, তাই فِعْل-কে فِعْل বলা হয় ।
অন্য কথায় এভাবে বলা যায়, যে পদকে فِعْل রূপে চিহ্নিত করা হয়, তা মূলত মাসদার বা ক্রিয়ামূল হতে নির্গত হয়েছে। আর প্রকৃতপক্ষে মাসদার হলো ফায়েল এর ফেল। তাই মূলের নামানুসারেই فِعْل কে فِعْل নামকরণ করা হয়েছে ।
আরও জানুন : হরফ (حَرْف) এর : সংজ্ঞা, আলামত, উপকারিতা ও নামকরণ
ফেল (فِعْل)-এর আলামত বা চিহ্ন :
কোনো কালিমা বা শব্দের মধ্যে যদি নিম্নোক্ত নিদর্শনাবলির কোনো একটি পাওয়া যায়, তবে তা ফেল বা ক্রিয়া পদ হিসেবে পরিগণিত হবে । যথা—
১। শব্দটি إِخْبَارٌ بِهِ হওয়া। অর্থাৎ, শব্দটি মুসনাদ হবে; মুসনাদ ইলাইহি নয় । যেমন-فَتَحَ زَيْدٌ ( যায়েদ খুলল )। এখানে فَتَحَ শব্দটি দ্বারা زَيْدٌ সম্পর্কে সংবাদ দেয়া হয়েছে ।
২। শব্দের শুরুতে قَدْ সংযুক্ত হওয়া। যেমন- আল্লাহর বাণী-وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ এখানে كَرَّمْنَا শব্দের পূর্বে قَدْ সংযুক্ত হয়েছে ।
৩। শব্দের শুরুতে س সংযুক্ত হওয়া । যেমন- আল্লাহর বাণী-سَيَقُولُ ٱلسُّفَهَاءُ مِنَ ٱلنَّاسِ এখানে يَقُولُ শব্দের শুরুতে س সংযুক্ত হয়েছে ।
৪। শব্দের শুরুতে এ সংযুক্ত হওয়া। যেমন- যেমন- আল্লাহর বাণী-سَوْفَ تَعْلَمُونَ এখানে تَعْلَمُونَ শব্দের শুরুতে سَوْفَ সংযুক্ত হয়েছে ।
৫। শব্দটি জযমযুক্ত হওয়া । শব্দের শুরুতে جَزْمٌ প্রদানকারী عَامِلٌআসলে উক্ত ক্রিয়াপদটি জযমযুক্ত হয়ে থাকে । যেমন-لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
৬। শব্দটি مَاضِي ও مُضَارِعٌ এর বিভিন্ন ছীগাতে তে রূপান্তরের যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়া । যেমন- اِسْتَنْصر (সে সাহায্য চাইলো) ।
৭। শব্দের শেষে تَاءُ التَّأْنِيثِ السَّاكِنَةِ যুক্ত হওয়া । যেমন- أَقْبَلَتْ نَبِيلَةُ (নাবিলা আগমন করল) ।
৮। শব্দের শেষে ضَمِيرٌ مَرْفُوعٌ بَارِزٌ সংযুক্ত হওয়া । যেমন- عَمِلَتْ (আমি জানলাম) ।
৯। শব্দটিأَمْرٌ হওয়া । যেমন- اُنْصُرْ (তুমি সাহায্য কর)।
১০। শব্দটি نَهْيٌ হওয়া । যেমন- لا تَكْتُبْ (তুমি লিখ না) ।
১১। শব্দের শেষে এবার نُونُ التَّأْكِيدِ যুক্ত হওয়া । যেমন- আল্লাহর বাণী- وَلَأُدْخِلَنَّهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَارُ
১২। শব্দটির শেষে تاء المخاطبه যুক্ত হওয়া। যেমন- نَصَرْتَ (তুমি সাহায্য করেছ) ।
উল্লেখিত চিহ্নসমূহের এক বা একাধিক চিহ্ন কোনো শব্দের সাথে সংযুক্ত হলে আরবী ভাষায় তাকে ফেল (فِعْل) বা ক্রিয়াপদ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে ।
আরও জানো : ফায়েল (فَاعِلٌ ): অর্থ, সংজ্ঞা, প্রকারভেদ ও হুকুম